|
|
|
|
বেহালায় ফের পাইলট-প্রশিক্ষণ
সুনন্দ ঘোষ • কলকাতা |
চার বছর পরে বেহালায় আবার চালু হল পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। দেশের বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন’ (ডিজিসিএ) সম্প্রতি ‘ট্রান্স-ভারত’ নামে একটি সংস্থাকে এই কেন্দ্র চালু করার অনুমতি দিয়েছে।
২০০৭ সালে এই বেহালায় এ রকমই একটি পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সূচনা করেছিল ‘ক্যামেলিয়া গ্রুপ’। কিন্তু, দু’বছর চলার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। মামলা শুরু হয় বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। ক্যামেলিয়া-র কর্তা নীলরতন দত্ত বলেন, “আমাদের সমস্ত পরিকাঠামো ও পাঁচটি বিমান রয়েছে। আমরা বিমানমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সবাইকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছি। বলেছি, আবার ওই কেন্দ্রটি চালু করতে চাই। কিন্তু, বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের জন্যই তা সম্ভব হচ্ছে না।”
নীলরতনবাবুর অভিযোগ, ওই কেন্দ্রটি চালানোর সময়ে বেহালায় বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের একটি হ্যাঙ্গার মাসিক ৫৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়েছিলেন তাঁরা। পরে সেই ভাড়া বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকার বেশি করা হয়। এ নিয়েই শুরু হয় মামলা। তা এখনও চলছে। পরে যদিও সেই ভাড়া কমিয়ে ১ লক্ষ ২৯ হাজার করা হয়।
এ দিন ওই মামলা সম্পর্কে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেদপ্রকাশ অগ্রবাল বলেন, “সারা দেশেই পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির ভাড়া নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আমরা এ নিয়ে একটি কমিটি তৈরি করেছি। সারা দেশের সমস্ত কেন্দ্রের জন্য একই হারে ভাড়া ঠিক করা হবে। সেটা এই মাসেই করা হবে।”
মনে করা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ সেই সিদ্ধান্ত নিলে সমস্যা মিটবে ক্যামেলিয়া-র। বেহালা থেকে দ্বিতীয় পাইলট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিও চালু হয়ে যাবে।
দেশ জুড়েই বাড়ছে উড়ান-পরিষেবা। বিভিন্ন উড়ান সংস্থা নিত্যনতুন বিমান কিনছে। ইন্ডিগো, জেট, এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট নিয়মিত ভাবে বাড়িয়ে চলেছে উড়ানের সংখ্যা। এই সব দেশি সংস্থার জন্য অনেক পাইলট প্রয়োজন। দক্ষতায় এগিয়ে থাকার জন্য বিদেশি উড়ান সংস্থাগুলিও ভারত থেকে পাইলট নিতে চায়। টাটা সংস্থার সঙ্গে এয়ার এশিয়া এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স দু’টি আলাদা দেশি উড়ান সংস্থা চালু করার পরে পাইলটদের চাহিদাও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
অথচ, বিমানের জ্বালানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশের বেশির ভাগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রই এখন বন্ধ। সব মিলিয়ে চলছে প্রায় ১২টি কেন্দ্র। ডিজিসিএ-র প্রধান অরুণ মিশ্র বলেন, “মাঝে কিংফিশার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪০০ জন অভিজ্ঞ পাইলট বসে গিয়েছিলেন। আপাতত চাকরির বাজারে তাঁদের কদরই সব চেয়ে বেশি। তা ছাড়াও পেশাদার লাইসেন্স নিয়ে বসে রয়েছেন আরও কিছু পাইলট।” তাই কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার এই প্রশিক্ষণের। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দু’তিন বছরের মধ্যেই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।
পূর্ব ভারতে পটনায় একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চলছে। ফলে, সে অর্থে পূর্ব ভারতে ‘ট্রান্স-ভারত’ দ্বিতীয় সংস্থা হিসেবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুরু করল। সংস্থার কর্তাদের দাবি, বেহালায় নতুন ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলায় পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ইচ্ছুক প্রার্থীদের সুবিধা হবে। সংস্থার কর্তা প্রদীপ বিশ্বাস জানান, তিনটি শেসনা (এক ইঞ্জিনের) ও একটি পাইপারসোনিকা (দুই ইঞ্জিনের) ছোট বিমান তাঁরা প্রশিক্ষণের জন্য রেখেছেন। ১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই ১৩ জন প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেছেন।
|
|
|
|
|
|