অর্ডিন্যান্স নিয়ে রাহুলকে ব্লগে তির আডবাণীর
দাগি জনপ্রতিনিধিদের আসন বাঁচানোর অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহার নিয়ে ফের কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়াল বিজেপি। এ বারে আসরে নেমে দলের প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী শুধু যে ওই অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহারের ব্যাপারে রাহুল গাঁধীর কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টায় জল ঢেলে দিয়েছেন তা নয়, এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকার প্রশংসা করে কংগ্রেস তথা সরকারের বিড়ম্বনাও বাড়িয়েছেন।
আডবাণী আজ তাঁর নিজের ব্লগে অর্ডিন্যান্স-পর্বে প্রধানমন্ত্রীর হেনস্থার নেপথ্যে সনিয়া গাঁধীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতি প্রথমে ওই অর্ডিন্যান্সটিতে সই করতে রাজি হননি। সেই সময় সরকারের বিড়ম্বনা এড়াতে সনিয়াই সম্ভবত রাহুলকে ময়দানে নামান। তবে রাহুলকে কেউ পরামর্শ দেননি, কাজটি কী করে করতে হবে। ব্লগে আডবাণীর বক্তব্য, অর্ডিন্যান্স বিতর্কের সময় রাহুল যদি শুধু এটুকু বলতেন যে, অর্ডিন্যান্সটি পর্যালোচনা করা উচিত সরকারের, তাতেই কাজ মিটে যেত। কিন্তু তার বদলে রাহুল যে মন্তব্য করেছেন, তা প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের পক্ষে বিড়ম্বনার। এবং এ জন্য সনিয়া গাঁধী তাঁর দায় এড়াতে পারেন না বলেই মত বিজেপির এই প্রবীণ নেতার।
আডবাণী ব্লগে আরও জানিয়েছেন, অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহারের কৃতিত্ব রাহুল গাঁধীর নয়। এই কৃতিত্ব ‘প্রণবদা’র। তাঁর বক্তব্য, বিজেপি গোড়া থেকেই সরকারকে জানিয়েছে যে, এই অর্ডিন্যান্স শুধু অসাংবিধানিক নয়, অনৈতিকও বটে। রাষ্ট্রপতির কাছে যখন আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলিরা এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গিয়েছিলেন, তখনই তিনি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলেন যে তিনি এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন। আডবাণীর বক্তব্য, সেই দিনই কেন্দ্রের তিন মন্ত্রীকে ডেকে পাঠান রাষ্ট্রপতি। এবং তিনি যে তাতে স্বাক্ষর করবেন না, তা স্পষ্ট করে দেন। আডবাণীর বক্তব্য, খোদ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সনিয়া গাঁধীর উপস্থিতিতে এই অর্ডিন্যান্স আনার সিদ্ধান্ত হয়। অন্য রাষ্ট্রপতির মতো প্রণব মুখোপাধ্যায় যে ‘রাবার স্ট্যাম্প’ রাষ্ট্রপতি হবেন না, সেটি বোঝার পরেই নড়েচড়ে বসেন সরকারের মন্ত্রীরা। রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর না করে তা ফেরত পাঠালে সরকারের বিড়ম্বনা বাড়বে, এটা বুঝতে পেরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে সনিয়া আসরে নামিয়ে দেন রাহুলকে।
অর্ডিন্যান্স নিয়ে আডবাণী যে ভাবে সরকার তথা গাঁধী পরিবারের বিড়ম্বনা বাড়াতে সক্রিয় হয়েছেন, তাতে দারুণ খুশি বিজেপির শীর্ষ নেতারা। দলের একাংশের বক্তব্য, গোড়ায় নরেন্দ্র মোদীর বিরোধিতা করলেও এখন আডবাণী সরাসরি গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন এবং ধীরে ধীরে এখন দলের অবস্থানের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন। প্রবীণ নেতার এই ভূমিকায় সন্তুষ্ট নরেন্দ্র মোদী শিবিরও। মোদী ঘনিষ্ঠ নেতারা জানাচ্ছেন, নির্বাচনের আগে এই ঐক্যের ছবিটি তুলে ধরা খুব প্রয়োজন বিজেপির কাছে। গত কালও সুষমা স্বরাজ এবং অরুণ জেটলি একযোগে এই অর্ডিন্যান্স নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব দিতে আসরে নেমেছিলেন। তার পর আজ আডবাণী সুর মেলানোর দলের সুবিধা হচ্ছে বলেই মত শীর্ষ নেতৃত্বের। আর এটাকে হাতিয়ার করেই কংগ্রেসকে আরও বিপাকে ফেলতে তাঁরা যে সক্রিয় হবেন, তা-ও আজ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে দলের নেতাদের বক্তব্যে।
বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির কথায়, “অর্ডিন্যান্স-পর্ব যে দিকে মোড় নিয়েছে, তাতে দু’দিক থেকেই লোকসান হচ্ছে কংগ্রেসের। এক দিকে রাহুল গাঁধীর মন্তব্যের ফলে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের ক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। মনমোহন সিংহ যে এতে ক্ষুব্ধ তা-ও তিনি গোপন করেননি। উল্টে এই সিদ্ধান্ত যে খোদ সনিয়া গাঁধীর নির্দেশে হয়েছে, সে কথা সুকৌশলে জানিয়েও দিয়েছেন তিনি।” এই অবস্থায় বিজেপি কোনও ভাবেই বিষয়টিকে হাতছাড়া করতে নারাজ। মোদী নিজেও গত ক’দিন ধরে এই বিষয়টি নিয়ে সরব। তার উপর গত কাল রাহুল যে ভাবে ‘কড়া কথা’ বলার জন্য সুর নামিয়েছেন, তাতে হাতে নতুন অস্ত্র পেয়ে গিয়েছে বিজেপি।
গত কাল রাহুলের আরও একটি মন্তব্য নিয়ে এখন আসরে নেমেছে বিজেপি। রাহুল যে ভাবে তাঁর ‘বয়স কম’ কথাটি বলেছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকর এ দিন বলেন, “রাহুল যে অনভিজ্ঞ, সেটি তিনি নিজেই কবুল করলেন। অথচ গাঁধী পরিবারে জন্ম নেওয়ার সুবাদে তিনিই না কি কংগ্রেসের মুখ! এই অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি কী করে দেশের সর্বোচ্চ পদে বসার স্বপ্ন দেখেন? আমাদের প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণীও আজ রাহুলের এই অনভিজ্ঞতার বিষয়টি নিয়ে নিজের ব্লগে সরব হয়েছেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.