পুজোর পরেই পুনর্বাসন দাবি |
পুজো মিটলেই কুলটির সাঁকতোড়িয়ার ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের কাজ শুরুর দাবি জানালেন আসানসোলের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আসানসোলের মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানান সাংসদ। মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
রানিগঞ্জ-আসানসোল কয়লাখনি এলাকার ধসপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার দাবি জানিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রথম বার সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন আসানসোলের তৎকালীন সিপিএম সাংসদ হারাধন রায়। ২০০৩ সালে সেই মামলার রায় হারাধনবাবুর পক্ষে যায়।
কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক পুনর্বাসনের জন্য ২৬২৯ কোটি টাকা মঞ্জুর করে। কিন্তু বাস্তবে সেই কাজ বেশ ঢিমে তালে চলছে বলে অভিযোগ। ফলে, ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দারা এলাকা ছেড়ে যাচ্ছেন না। পরপর দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। দিন কয়েক আগে সাকঁতোড়িয়ায় আচমকা মাটি ফেটে ভূগর্ভে তলিয়ে যান হেনা পারভিন নামে বছর কুড়ির এক তরুণী।
চার দিন পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয় প্রায় তিরিশ ফুট গভীর থেকে। এর পরেই ধসপ্রবণ ওই এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের দাবিটি জোরাল হয়েছে।
গত সোমবারই এই দাবিতে আসানসোলে এডিডিএ-র কার্যালয়ে যুব কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখান এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তাঁদের সঙ্গে এডিডিএ-র বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সাঁকতোড়িয়া ধসপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দা তথা যুব নেতা অভিজিৎ আচার্য জানান, বৃহস্পতিবারের সেই বৈঠক হয়নি। আগামী সপ্তাহে তা হওয়ার কথা।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে নিয়ে আসানসোলের মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী। পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংসদ ও মহকুমাশাসকের প্রায় দু’ঘণ্টা আলোচনা হয়। সাংসদ বংশগোপালবাবুর দাবি, “আমরা ক্ষমতায় থাকার সময়ে কাজ কিছুটা এগিয়েছিল। তার পরে আর কিছুই হয়নি। মহকুমাশাসককে জানিয়েছি, পুজোর পরে যদি কাজে গতি না আসে তবে আমরা আবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হব।”
মহকুমাশাসক অমিতাভবাবু জানিয়েছেন, সাংসদের বক্তব্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে জেলাশাসক এবং এডিডিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। নিয়মমাফিক পর্যায়ক্রমে প্রশাসন কাজগুলি করবে।
ইসিএলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁকতোড়িয়ায় ১২ নম্বর কলোনি এলাকায় যেখানে মাটি ফেটে ভূগর্ভে ঢুকে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, সেটি আদতে ইসিএলের নিজস্ব জমি। এলাকার বাসিন্দারা বহু বছর ধরে দখল করে আছেন।
ইসিএল কর্তৃপক্ষ চাইছেন, এই অঞ্চলে ডোজার চালিয়ে ভূগর্ভের ফাঁপা অংশ ভরাট করে দিতে। তা না হলে ভবিষ্যতে ফের ওই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে না পারায় সেই কাজ করতে পারা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইসিএলের একটি সূত্র।
|