রায়চৌধুরী পরিবারের দুর্গাপুজো
(হাওড়া, শিবপুর)
হাওড়ার শিবপুরের রায়চৌধুরী পরিবারের দুর্গাপুজো শুরু হয় ১৬৮৫ সালে। পুজো শুরু করেন রাজা রামব্রহ্ম রায়চৌধুরী। পরিবারের বিশ্বাস, স্বপ্নে মায়ের আদেশ পেয়ে রামব্রহ্ম বাড়িতে এই পুজো শুরু করেন। এ পুজো আসলে মা চণ্ডীর পুজো। বর্তমানে এলাকায় বারোয়ারি পুজোর রমরমা হলেও তিনশো বছর পেরিয়ে এসেও শিবপুরের রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো এখনও সমান জনপ্রিয়। পুজোয় আগের সেই রাজকীয় জৌলুস হয়তো আর নেই, তবে নিয়ম নিষ্ঠা এবং আড়ম্বর যথাসম্ভব বজায় রেখে চলেছেন ‘শ্রী শ্রী দূর্গা-কালীমাতা এস্টেট’-এর সম্পাদক শিবপুরের রায়চৌধুরী পরিবারের বিশ্বনাথ রায়চৌধুরী।

রায়চৌধুরী পরিবারের এই পুজো ‘সাঁঝের আটচালা’ নামেই এলাকায় পরিচিত।

• মূর্তির বৈশিষ্ট্য— মায়ের মূর্তি সাবেক একচালা ডাকের সাজের।

• পুজোর রীতি—
পুজোর বোধন হয় মহালয়ার আগের নবমী থেকে। পুজো হয় বৃহন্নন্দীকেশ্বর মতে। বেলুড় মঠে যে রীতিতে পুজো হয় এখানেও পুজোয় সেই রীতি অনুসৃত হয়। দো-মেটে প্রতিমা সম্পন্ন হওয়ার পরে অঞ্চলের বহু ব্রাহ্মণ আমন্ত্রিত হন এই বাড়িতে। মায়ের মূর্তি দর্শন করে তাতে কোনও ত্রুটি আছে কি না তা তাঁরা দেখেন। নিখুঁত মূর্তির ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই শুরু হয় চূড়ান্ত পর্বের মূর্তি গড়ার কাজ। এ বাড়িতে পুজোর জন্মলগ্ন থেকেই এ প্রথা চলে আসছে।

রায়চৌধুরী বাড়ির পুজোয় মায়ের মূর্তির সামনে কোনও ঘট বাঁধা হয় না। ঘট বাঁধা হয় আটচালা সংলগ্ন একটি বেলগাছে। এই বেলগাছের জন্য একটি আলাদা ঘরও রয়েছে। এই বেল-ঘরের ছাঁদ ফুড়ে গাছটি উঠে গিয়েছে। পরিবারের বিশ্বাস, এই বেলগাছ দিয়েই মা’র মর্তে আগমন হয়।

পুজোতে এখনও বলি প্রথা চালু আছে। সপ্তমীর দিন একটি এবং অষ্টমী ও নবমীর দিন দু’টি করে পাঁঠা বলি হয়। পুজোর সংকল্প করা হয় বাড়ির প্রবীণতম ব্যক্তির নামে। বর্তমানে তিনি হলেন ৯৭ বছর বয়সী বিমলচন্দ্র রায়চৌধুরী।
• ভোগের তালিকা— নবমীর দিন হোম সম্পন্ন হলে, হাঁড়িকাঠ উঠিয়ে বাড়িতে পংক্তিভোজনের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও নানা রকম মিষ্টান্ন, ঘরে তৈরি নারকেল নাড়ু, বিভিন্ন রকম ফল তো থাকেই। পুজোর দায়িত্বে থাকা অরুণ রায়চৌধুরী জানান, আগের মতো আড়ম্বর না থাকলেও এখনও যথেষ্ট নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতি বছর পুজো করে চলেছে রায়চৌধুরী পরিবার। শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয়, অঞ্চলের বহু মানুষ ভিড় জমান শতাব্দী প্রাচীন এই পুজো দেখতে। দশমীতে পুজোর শেষে পুজোর ঘট ও মায়ের মুকুটের বিসর্জন হয় না। ওই মুকুট ও জলভরা ঘট চলে যায় অনতিদূরের ব্যাতাই চণ্ডীর মন্দিরে। এই মন্দির রায়চৌধুরীদের পরিবারিক মন্দির।

• দিকনির্দেশ— শিবপুর বাজার থেকে মন্দিরতলার দিকে এগোলেই হিন্দু গার্লস স্কুল। সেখান থেকে ডান দিকের রাস্তা ধরে মিনিটখানেকের হাঁটা পথেই দেখা মিলবে সাঁঝের আটচালার।

প্রতিবেদন: সুদীপ দে
ছবি: ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.