বাড়িতে কার্তিক ঠাকুর ফেলে যাওয়ার গল্প খুবই পরিচিত। কিন্তু একেবারে তাঁর ‘মা’-কে বসিয়ে দিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা কোনও ভাবেই তা নয়। এমনটাই হয়েছিল চেতলার গোবিন্দ আঢ্য রোডের মন্মথনাথ চক্রবর্তীর বাড়িতে। ঘটনাটা ১৯২৭ সালের। এর অনেক বছর আগে থেকেই এ বাড়িতে নিয়মিত জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছিল। সে বছরই কেউ এক জন ‘ভালবেসে’ তার বাড়ির দরজায় রেখে যায় দুর্গামূর্তি। পরে জানা যায় সে ব্যক্তিটি আর কেউ নয়, মন্মথর জ্ঞাতি-ভাই সুদর্শন চক্রবর্তী। তার কয়েক বছর পরই জন্ম হয় মন্মথনাথের কনিষ্ঠ কন্যা শোভারানির। তাঁর বয়স এখন ৮৫। বর্তমানে তিনিই এ পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্য।
মন্মথনাথের কোনও পুত্রসন্তান ছিল না। বর্তমানে তাই পুজোর দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন শোভারানিদেবীর পুত্র সুবিকাশ হালদার। তাঁর সঙ্গে সহযোগিতায় থাকেন তাঁর ভাই বিকাশ হালদার, পুত্র গৌতম হালদার ও ভাগ্নে চন্দ্রশেখর মজুমদার। পরিবারের মহিলারা ব্যস্ত থাকেন পুজোর কাজে।
এক সময় এ বাড়ির পুজোই ছিল গোবিন্দ আঢ্য রোডের একমাত্র পুজো। জাঁকজমক, লোকলস্কর, প্রতিবেশীদের আনাগোনায় কোথা দিয়ে কেটে যেত পুজোর দিনগুলি, বোঝাই যেত না, বললেন সুবিকাশবাবু। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে গেছে সব কিছুই। তিনি আরও বললেন, সুন্দরবন অঞ্চলে দাদামশাই মন্মথর অনেক জমি-জায়গা ছিল যেখান থেকে পুজোর আগে মোটা অঙ্কের টাকা আসত। যদিও পরে তা চক্রবর্তী পরিবারের হাতছাড়া হয়ে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই টান পড়ে পুজোর বাহুল্যে। তবে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি পুজোর নিয়মনীতি ও ভক্তিতে। |