পুরভোট নিয়ে ব্যস্ততার জেরে পুজোর আয়োজন ঢের দেরিতে শুরু হয়েছে হলদিবাড়িতে। তাতে কী! কম সময়ের মধ্যেই সীমান্ত শহর হলদিবাড়ির পুজো কমিটিগুলো একে অন্যকে পাল্লা দিতে আসরে নেমে পড়েছে।
নানা কারণে বাজেট কাট ছাঁট হয়েছে অনেক পুজো কমিটির। তবুও দর্শনার্থীদের মন কাড়তে কেউ মন্ডপ, কেউ আলো, কেউ আবার সব কিছুতেই বাড়তি যত্ন নিচ্ছে।
হলদিবাড়ির উত্তরপাড়া সবর্র্জনীন দুর্গোৎসব কমিটি খড় দিয়ে মন্ডপ তৈরি করছে। ভোট পর্ব মেটার প্রাক্কালে পুজো বিষয় সভার কাজ শেষ করেছে ওই ক্লাবের কমিটি।
পুজো কমিটির সম্পাদক বাঁধন দাস বলেন, “হাতে সময় অল্প। তার মধ্যেই পাড়ার সকলে মিলে কাজ করছি। আশা করি অন্যান্যবারের মত একইরকম ভাবে পুজো হবে।” উত্তরপাড়ার বাসিন্দারা পুজোর চার দিন দিনের বেলায় বাড়িতে রান্না করেন না। পুজো কমিটি পুজোর চারদিন মন্ডপেই ভূরিভোজের ব্যবস্থা করেছে। সেখানেই চারদিন মধ্যাহ্ন ভোজন সারবেন। দশমীর দিন এরা রাবণ বধের আয়োজন করেছেন।
হলদিবাড়ির পূর্বপাড়া পু্জো কমিটির প্রতিমা হলদিবাড়ির পুজোর অন্যতম আকর্ষণ।
এই পুজো কমিটি বরাবর সাবেকি ঘরানার প্রতিমা করেন। এবারও তাই হচ্ছে মন্ডপটি একটি মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে। মন্ডপের ভেতরে পাটের সূতলির কাজ হবে। পুরসভার নির্বাচনের জন্যে পূর্বপাড়া পুজো কমিটি দুবার সভা ডেকেও পুজোর সভা করতে পারেননি। অল্প সময়ে পুজো করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন পুজো কমিটির সদস্যারা।
পুজো কমিটির সম্পাদক রঞ্জন দাস বলেন, “সময় কম বলে বাজেট কিছুটা কাটছাঁট করতে হয়েছে। বাইরের কাউকে না নিয়ে এবার আমাদের পুজো কমিটির একজন সভ্য পুজো মন্ডপটিকে। পাটের সুতলির কারুকাজে সাজাচ্ছেন তবে অন্য সব কিছুতে বাজেট যা ছিল, তাই-ই আছে। যেমন প্রতিমা প্রতিবার যেমন হয়, এবারেও তাই হবে।”
অষ্টমীর দিন বাড়ি বাড়ি প্রসাদ পাঠানো হবে। বস্ত্র বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে হলদিবাড়ি ক্ষুদিরাম পল্লি সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার একটি বৌদ্ধ মন্দিরের আদলে মন্ডপ তৈরি করছেন। এই পুজো কমিটির অন্যতম বৈশিষ্ট হচ্ছে পুজোর চার দিন এরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার নৃত্যশিল্পীদের নিয়ে নৃত্যানুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এবারেও তার ব্যাতিক্রম হচ্ছে না। ওই পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “এ বার আমরা পুজোর চারদিন পুরুলিয়ার ছৌ নাচের আয়োজন করেছি।”
জৌলুস কমেছে দেশবন্ধুপাড়া পুজো কমিটির। প্রতিমা জলপাইগুড়ি থেকে আনা হচ্ছে। মন্ডপটি একটি মন্দিরের আদলে হচ্ছে। পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা হলদিবাড়ির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুব্রত বসু বলেন, “এবার নির্বাচন করতে গিয়েই দম ফুরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তাই এবার পুজো সে ভাবে করা হচ্ছে না।” হলদিবাড়ির বাবুপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসবে এবারও এই পুজো কমিটি অষ্টমীর দিন কুমারী পুজোর আয়োজন করছে। হলদিবাড়ি শহরের পুরানো হাসপাতাল সংলগ্ন মাঠে ওই পুজো হয়। বাবুপাড়া পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা চন্দন রায় বলেন, “মাঠটাই আমাদের থিম। মাঠকে আমরা পার্কের মত করে ফেলছি। পার্কের মধ্যে পুজো হবে। সবাই পার্কে বসে সারাদিন গল্পগুজব করে সময় কাটাতে পারবেন।” পাশাপাশি, পুজো কমিটিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পুজো, পশ্চিমপাড়া সর্বজনীন দুর্গোসব, তালা কোম্পানি সর্বজনীন দুর্গোৎসব, মেলার মাঠ এবং পাবনা কলোনি সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির পুজো। |