মূর্তি গড়ছে পরিবার, বিক্রি নিয়ে উদ্বেগ
র বাকি সাতদিন। ব্যস্ততা তুঙ্গে শিলিগুড়ির কুমোরটুলিতে। মা আসছেন সপরিবারে, তাই তার আগমনে পুরো পরিবারই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রতিমা তৈরিতে। কুমোরটুলিতে গেলেই চোখে পড়বে বাবা, মা, ও ছেলে তিনজনই মনোযোগ সহকারে কাজ করে চলেছেন। মাটির প্রলেপ, রং এর ছোঁয়াতে প্রতিমাকে সাজিয়ে তুলতে ব্যস্ত গোটা পরিবার। পুজোর মরসুমে স্বামীকে সাহায্য করতেই হাত লাগাতে হয়েছে বলে জানালেন বিউটি পাল। বিবাহ সূত্রে শিলিগুড়িতে। বেশ কয়েক বছর থেকেই কাজ করে চলেছেন দু’জনে মিলে। এখন বড় ছেলেও কাজে হাত লাগিয়েছে। তবে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ততা থাকলেও তা বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। কারণ ছোট প্রতিমা তৈরি করছেন, পাহাড়ে বন্ধ অশান্তির জন্য এখনও পর্যন্ত বায়না হয়নি প্রতিমা।
দীর্ঘদিন থেকেই ছোট প্রতিমা তৈরি করছেন তাঁরা, মূলত পাহাড়েরই যায় সেগুলি। কিন্তু এক সপ্তাহ বাকি থাকলে এখনও কেউ আসেন নি প্রতিমা বায়না করতে। বায়না না হলেও নিজেদের মত করে খড়, বাঁশ, মাটি, রঙ নিয়ে ব্যস্ত তাঁরা তিনজনই। পুজোর মরসুমে আয় বাড়াতে তাই কাজ করে চলেছেন। এখন শহরে থিম পুজো বেশি হওয়ায় বড় প্রতিমা বানানোর সাহস হয় না বলে জানান বিউটি দেবী। তিনি বলেন, “পুজোর মরসুম তাই স্বামীর সঙ্গে কাজ করতে এসেছি। তবে এ বছর তেমন কোন অর্ডার আসেনি। একদিকে শহরে থিমপুজো, অন্যদিকে পাহাড়ে অশান্তি, সব মিলিয়ে আমাদের ব্যবসার অবস্থা ভাল নয়।” বিউটিদেবীর স্বামী খোকনবাবুও জানান এবারের ব্যবসা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসা করছি। তবে এখন পাহাড়ে অশান্তি থাকায় পুজো তেমন হচ্ছে না। এরকম চলতে থাকলে আমাদের সংসার চালান কষ্ট হয়ে যাবে।”
মূর্তি গড়তে ব্যস্ত পরিবারের সদস্যরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
ব্যবসার অবস্থা ভাল না হলেও কাজে কোনও খামতি নেই তাঁদের। কোনও কর্মী নেই তাঁদের সাহায্য করার জন্য। নিজেরাই কাজ করছেন তাঁরা। ছেলে বিশ্বজিৎ পাল প্রতিমায় মাটি দিচ্ছে। আর তা শুকিয়ে গেলে আরেকবার প্রলেপ দেওয়ার কাজ করছেন মা বিউটি দেবী। তা শুকিয়ে যাওয়ার পর রং এর কাজে বাবাকে সাহায্য করছে ছেলে। তবে প্রতিমায় চোখ দানের কাজটা নিজের দায়িত্বেই রেখেছেন খোকনবাবু। অনেক যত্ন নিয়ে আঁকছেন দেবীর চোখ। শুধু খোকনবাবুর পরিবার নয় শিলিগুড়ি কুমোরটুলিতে পুজোর মরসুমে স্বামীর সঙ্গে কাজে হাত লাগিয়েছেন অনেক মহিলাই। দিলীপ পালের সঙ্গে কাজ করছেন তাঁর স্ত্রী শোভা পাল। তিনি বলেন, “পুজোর সময় কাজের চাপ একটু বেশি, তাই হাতে হাতে কাজ করে দিচ্ছি। ঘরের কাজ সামলেই এখানে কাজ করছি, তবে বেশি কিছু করতে পারি না। শুধুমাত্র রঙের কাজ করি।”
স্বামীর সঙ্গে কাজ করছেন গৌরী দেবী। তিনি বলেন, “তাড়াহুড়োর সময়ে যতটুকু সাহায্য করতে পারি সেটাই আমাদের সংসারের লাভ। তাই প্রতিমা রঙ করার কাজটা আমিই করছি।” স্বামী সুকুমার পাল বলেন, “এই সময়ে কাজের চাপ একটু বেশি, তাই স্ত্রী কাজ করছে।” দেখা গেল তাঁর ছেলেকেও। মেশিন নিয়ে প্রতিমার গাঁয়ে নীল, গোলাপি রঙ করছে সে।
পুরুষদের পাশাপাশি প্রতিমা তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছেন কুমোরটুলির মহিলারাও। পুজোর সময়ে সংসারের আয় বাড়াতে তাঁরাও সামিল হয়েছেন স্বামীর সঙ্গে। তাঁদের কথায় “মা সকলকে নিয়ে আসছেন, তাই আমরাও সকলে মিলে নেমে পড়েছি কাজ করতে। একসঙ্গে কাজ করতে পেরে ভাল লাগছে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.