সাতসকালে এক প্রৌঢ়কে বাস থেকে নামিয়ে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। তার পরে দেহ ভ্যানে তুলে ফেলে দিল কিছুটা দূরের রেললাইনে। বুধবার কুলপির সিংহেরহাট বাস মোড়ের কাছে ওই ঘটনায় আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম কুতুব গাজি (৫০)। তিনি আদতে ঢোলাহাটের বেলুনি গ্রামের মানুষ হলেও উস্তির দেউলা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। ডায়মন্ড হারবার বাজারে ফল বিক্রি করতেন। মাঝেমধ্যে জমির দালালিও করতেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, ওই দালালি নিয়ে বিবাদের জেরে খুন করা হয় ওই প্রৌঢ়কে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আট জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে থানায়। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে। রেললাইন থেকে দেহটি তুলে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকালে ডায়মন্ড হারবার বাজের ফল বিক্রি করলেও এ দিন কুতুব গাজি সেখানে যাননি। সকাল সাতটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস ধরে কাকদ্বীপ যাচ্ছিলেন। বাসে তেমন ভিড় ছিল না। সাত-আট জন দুষ্কৃতী আগে থেকেই যাত্রী সেজে ওই বাসে ছিল। বাসটি ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের সিংহেরহাট মোড়ে পৌঁছলে দুষ্কৃতীরা কুতুব গাজিকে টেনে নামায়।
সেই সময়ে ওই মোড়ের কয়েকটি দোকানপাট সবে খুলছে। দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র বের করে সরাসরি কুতুবের বুকে দু’তিনটি গুলি চালায়। কুতুব সেখানেই লুটিয়ে পড়েন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে এর পরে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপায়। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ভয়ে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন।
যে দু’এক রাস্তায় ছিলেন, তাঁরাও ভয়ে সরে যান। এর পরে দুষ্কৃতীরা একটি ভ্যান জোগাড় করে দেহটি তাতে তুলে কিছুটা দূরে, কাকদ্বীপ-শিয়ালদহ শাখার কুলপি ও করঞ্জলি রেল স্টেশনের মাঝামাঝি জায়গায় রেললাইনের উপরে দেহটি ফেলে চম্পট দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, অভ্যাসমতো সকালে তিনি ওই মোড়ে হাঁটছিলেন। তার চোখের সামনে কয়েক মিনিটের মধ্যে দুষ্কৃতীরা ওই কাণ্ড ঘটায়। ভয়ে তিনি দূরে সরে যান। নিহতের ভাইপো মুন্নাত গাজি পরে থানায় এসে দেহ শনাক্ত করেন এবং আট জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। |