তিন শতক জমি-বিতর্কে দুই পাড়ার দূরত্ব ২৮ কিমি
তিন শতক জমি পার হতে ঘুরতে হয় ৪৮ কিলোমিটার।
ওই সামান্য জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদ গনাল আদালত পর্যন্ত। আর তার ফলেই থমকে গিয়েছে রাস্তা তৈরির কাজ। রাস্তার অভাবে বাঁশ বাগানের ভিতরে গোড়ালি সমান কাদা, বর্ষায় পিচ্ছিল পুকুর পাড় বা কারও বাড়ির উঠোন দিয়ে নিত্য দিন গ্রামবাসীদের যাতায়াত করতে হচ্ছে।
নাকাশিপাড়া ব্লকের অন্যতম বড় গ্রাম পাটপুকুর। বেথুয়াডহরি থেকে রাস্তাটি পাটপুকুরের ভিতর দিয়ে শুকসাগর ঘাট পর্যন্ত গিয়েছে। অনেক দিন আগেই রাস্তাটি তৈরি হওয়ার কথা ছিল। একশো দিনের কাজের অধীনে ওই রাস্তার সংস্কারও শুরু হয়েছিল ২০১০ সালে। বিপত্তি বাধে তখনই।
এভাবেই বাঁশবাগান, খানা-খন্দ পেরিয়ে চলে যাতায়াত। —নিজস্ব চিত্র।
এক কালের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের সুরাবদ্দিন শেখ এখন সিপিএমে। তিনি তাঁর বাড়ির সামনে রাস্তার বেশ কিছুটা অংশে বেড়া দিয়ে দিয়েছেন। ফলে রাস্তা তৈরি থমকে। তাঁর দাবি, “আমি আমার নিজের জমি বেড়া দিয়েছি। আমার জমি যাতে কেউ জোর করে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্যই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। এতে বলার কী আছে!” বলার এটাই এর ফলে ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ থমকে গিয়েছে।
তবে, সুরাবদ্দিনের অভিযোগ, “রাস্তা দখল করে বাড়িঘর করেছে তৃণমূল নেতা আব্দুল গনি মণ্ডল। এখন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমার জমিতে রাস্তা বানাতে চাইছে। কখনওই তা হতে দেব না।” আব্দুল গনি মণ্ডলের পাল্টা দাবি ‘‘আমরা আমাদের জমিতেই বসবাস করছি। রাস্তার কোনও জমি দখল করিনি। বরং রাস্তা দখল করে রেখেছে সুরাবদ্দিন শেখ।”
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, সংস্কারের আগে সুরাবদ্দিন ও আব্দুল গনি বাড়ির মাঝখান দিয়ে রাস্তাটি চলে গিয়েছিল। কিন্তু তখন কেউ ঝামেলা করেনি। এখন দু’দলের দুই নেতার দড়ি টানাটানিতে রাস্তা বন্ধ। প্রতি দিন চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গ্রামের লোকজনকে। বর্ষায় স্কুলে যেতে হিমশিম খেতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। ২০১০ সাল থেকে যখন জমি-বিতর্ক শুরু হয়, তৎকালীন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের মেহের আলি বৈদ্য বলেন, “সুরাবদ্দিন দাবি জমির নকশা অনুযায়ী রাস্তার তিন শতক জমি তার। আমরা বলেছিলাম গ্রামের মানুষের স্বার্থে সেই জমি কিনে নেব। কিন্তু তাতেও সে রাজি নয়।” রাজনীতির কূটকচালি বন্ধ করে গ্রামবাসীরা কিন্তু চান বিতর্কের অবসান হোক।
পাটপুকুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুমিত্র অধিকারী বলেন, “আমরা চাই অন্তত ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে চলাচলের যোগ্য রাস্তা তৈরি করুক প্রশাসন। রাস্তা না থাকায় বর্ষাকালে জল কাদা মাড়িয়ে স্কুলে আসতে সমস্যা হয় কয়েকশো ছাত্রছাত্রীর।” শুধু তাই নয়, রাস্তা না থাকায় গ্রামের ভিতরে কোনও গাড়ি ঢুকতে পারে না। ফলে পশ্চিমপাড়া থেকে পূর্ব পাড়া বা অন্য কোনও স্থানে মালপত্র আনতে হলে তিন শতক জমির পরিবর্তে ২৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। নাকাশিপাড়ার বিডিও হেমন্ত ঘোষ বলেন, “জমি নিয়ে বিতর্কের কারণে রাস্তাটি বন্ধ। বিষয়টি বিচারাধীনও। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান করা যাবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.