টানা বৃষ্টিতে থিম পুজোর আয়োজন নিয়ে আশঙ্কা
কোথাও বাংলার সাবেক রাসমঞ্চ, কোথাও আবার প্রাচীন বট -শাল -মহুল গাছে ঘেরা টিলা। এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে থাকা বিমান কিংবা শহরের বুকে আস্ত একখানা গ্রাম। শরতের অকাল বৃষ্টিতে সবই ভাসিয়ে দেওয়ার উপক্রম ! গত পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে জঙ্গলমহলের থিম পুজোর উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত। কখনও ঝিরঝিরে কখনও আবার নাগাড়ে বর্ষণ। শুক্রবার মহালয়া। হাতে সময় কম। কী ভাবে থিমের মণ্ডপের কাজ শেষ করবেন তা ভেবে কুল -কিনারা পাচ্ছেন না শিল্পীরা। স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় প্রতিমাও শুকোচ্ছে না, মৃৎশিল্পীরাও পড়েছেন বিপাকে। এই পরিস্থিতিতে সকলেই তাকিয়ে এখন আকাশের দিকে।
গত বছর অভিনব থিমের ভাবনায় নজর কেড়েছিল জামবনি ব্লকের গিধনির পূর্বাশা সর্বজনীন। উদ্যোক্তাদের দাবি, এবারও শিল্পী তপন মাহালি’র থিম ভাবনায় তাঁরা চমক দেবেন। কিন্তু বার নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে কাজকর্ম পণ্ড হওয়ার জোগাড় ! গিধনি পূর্বাশা সর্বজনীনের বার পুজোর থিম ‘জঙ্গলমহলের চিন্ময়ী’। প্রাচীন বট -শাল -মহুল গাছে ঘেরা টিলার আদলে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। থাকছে পাহাড়ি ঝর্না, উষ্ণ প্রস্রবণ বিপদসঙ্কুল নদীও। মণ্ডপের ভিতরে একখণ্ড পাথরের উপর খোদিত দুর্গা তাঁর সন্তানেরা। শিল্পী তপন মাহালি বলেন, “বৃষ্টির জন্য ভীষণই সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা ভেঙে পড়িনি। যথা সময়ে কাজ শেষ করার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। আশা করি মহালয়ার মধ্যে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
রোদ নেই। তাই ব্লু ল্যাম্পের আগুনের তাপে শুকানো হচ্ছে প্রতিমা। ছবি : দেবরাজ ঘোষ।
ঝাড়গ্রাম শহরের পুরনো ঝাড়গ্রাম শ্মশান কালী মন্দির মোড়ের অরণ্য সুন্দরী সর্বজনীন দুর্গাপুজোর বারের থিম ‘উন্নয়নের পথে জঙ্গলমহলের গ্রাম’। শহরের মাঝে আস্ত একখানি গ্রাম বানাচ্ছেন শিল্পী ছোটন মান্না। কিন্তু একটানা বৃষ্টিতে থিমের কাজ ধুয়ে যাচ্ছে। অরণ্য সুন্দরী’র উদ্যোক্তা স্বপন বিশুই বলেন, “কিচ্ছু ভাবতে পারছি না। বৃষ্টির ফলে বাজেট বেড়ে যাচ্ছে।” ছোটনের কথায়, “প্রকৃতির বিরুদ্ধে দিনরাত জেগে আমরাও থিমের কাজ শেষ করার জন্য লড়াইটা চালাচ্ছি। কিন্তু বৃষ্টি না থামলে শেষের কাজগুলো করা সম্ভব নয়।”
শহরের অফিসার্স ক্লাব মাঠে রঘুনাথপুর সর্বজনীন পুজোর থিম ‘সাবেকিয়ানায় বাংলার রাস উৎসব’। পাঁচ চূড়া বিশিষ্ট রাসমঞ্চের আদলে মণ্ডপের বাইরে শোভা পাবে রাধাকৃষ্ণ -সহ নানা দেবদেবীর মূর্তি। বৃষ্টির রোষে পড়ে বিপুল বাজেটের এই পুজোর উদ্যোক্তাদের মুখের হাসি মিলিয়ে গিয়েছে। গোটা মাঠ জুড়ে জল থই থই অবস্থা। বুধবার দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে মণ্ডপসজ্জার কাজ করছিলেন থিম শিল্পী অলোক মিশ্র তাঁর সহকারীরা। অলোকবাবু বলেন, “বৃষ্টির জন্য মণ্ডপের বাইরের আশি শতাংশ কাজ করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টি না থামলে কী ভাবে মণ্ডপের বর্হিসজ্জার কাজ করব জানি না।” পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চন্দন শতপথী তরুণ মাহাতোর বক্তব্য, “বৃষ্টি না থামলে মণ্ডপ প্রাঙ্গণের সৌন্দর্যায়নের কাজও করা যাচ্ছে না। বৃষ্টির জন্য চাঁদা সংগ্রহের কাজও ব্যহত হচ্ছে।”
শহরের পুরনো ঝাড়গ্রাম সর্বজনীনের মণ্ডপ হচ্ছে এরোপ্লেনের আদলে। লোহা অ্যালুমিনিয়ামের পাত দিয়ে তৈরি হচ্ছে ৮০ ফুট লম্বা এরোপ্লেনটি। পুজোর সংগঠক তাপস হাজরা বলেন, “বৃষ্টির জন্য এরোপ্লেনের আদলে তৈরি মণ্ডপের বাইরে রং করা যাচ্ছে না। হাতে সময়ও কম। আপাতত বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় বসে রয়েছি।”
বাস্তবিকই প্রকৃতির কাছে অসহায় উদ্যোক্তা শিল্পীরা এখন বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় রয়েছেন। দুর্গতিনাশিনিই তাঁদের ভরসা !


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.