কে সেরা, ওঁদের দু’জনকে নিয়ে এই বিতর্কটা অনন্ত। দুই বন্ধুর অবশ্য তাতে কিছু আসে-যায় না। এ দিনও চেন্নাই সুপার কিংসের খেলা শুরুর আগে ফিরোজ শাহ কোটলায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্স তারকা এবং ত্রিনিদাদ ও টোবাগো দলের মেন্টর যখন পাশাপাশি এসে দাঁড়ালেন টিভি ক্যামেরার সামনে, উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল গ্যালারি!
সচিন তেন্ডুলকর আর ব্রায়ান লারা নিজেদের মাঠের শত্রুতা আর মাঠের বাইরের বন্ধুত্ব নিয়ে কথা বললেন মিনিট কয়েক। তাতেই জমে গেল আড্ডা। সচিন বলছিলেন, “এক সঙ্গে খেলার দিনগুলোয় ক্রিকেটের বাইরেও নানা বিষয়ে আমাদের মধ্যে অনেক কথা হত। যে কারণে আজ আমরা দারুণ বন্ধু।” অন্য দিকে মাঠের শত্রুতা নিয়ে লারা বলে গেলেন, “ভারতের দ্রাবিড়, লক্ষ্মণের মতো মহান প্লেয়ার ছিল। কিন্তু সচিন বরাবর অন্যদের থেকে আলাদা। উপমহাদেশের বাকি ব্যাটসম্যানদের মতো বাউন্সারের সামনে ওকে কখনও গুটিয়ে যেতে দেখিনি।”
টেস্টে সচিন বনাম লারা লড়াই শুরু নব্বইয়ের দশকে। যা নিয়ে লারা বলেছেন, “উল্টো দিকে ও আছে, এই ভাবনাটাই আমাকে বাড়তি তাতিয়ে তুলত। আমার মনে হয়, সচিনের ক্ষেত্রেও সেটাই হত। মাঠে নেমে আমরা সব সময় একে অপরকে ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় থাকতাম। দু’জনের মধ্যে একটা নীরব প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলত যেটা আমরা দু’জনেই দারুণ উপভোগ করেছি।” |
সচিন জানিয়েছেন, লারা ঠিক কতটা ‘স্পেশ্যাল’ সেটা তিনি টের পান মালয়েশিয়ায় ডিএলএফ কাপের সময়। বলছিলেন, “স্পিনিং ট্র্যাকে সেরা ফর্মের হরভজনের বিরুদ্ধে বাকি সব ব্যাটসম্যান হিমশিম খাচ্ছিল। অথচ ব্রায়ান কোনও ঝুঁকিতে না গিয়ে ফিল্ডিংয়ের গ্যাপগুলো রেব করে নিয়ে কী সহজে স্ট্রোক খেলে গেল!” লারা আবার বলে দিলেন, তাঁর দেখা সচিনের সেরা ইনিংস সিডনির ২৪১। “মনে আছে সিরিজটায় সচিন রানের মধ্যে ছিল না। স্ট্রাগল করছিল। তাই সিডনিতে খুব সতর্ক ব্যাটিং করে। ওই ইনিংসটায় ও প্রথম কভার ড্রাইভ মেরেছিল ডাবল সেঞ্চুরিতে পৌঁছে। ওর ব্যাটিংয়ের ডিসিপ্লিন আর খারাপ সময় কাটিয়ে উঠে বড় কিছু করে দেখানোর তাগিদ আমাকে মুগ্ধ করেছিল।” লারার সাফ কথা, “নতুনদের বলব, সচিনকে দেখে শেখো। উঠতি ক্রিকেটারদের সামনে ওর থেকে আদর্শ রোল মডেল আর কেউ নেই।”
লারার ধারণা, টি-টোয়েন্টিতে তিনি কখনও সফল হতেন না। বলছিলেন, “আসলে আমার ক্রিজে নেমে সেট হওয়ার জন্য চিরকাল একটু সময় লাগত।”
যা শুনে পাশ থেকে মুচকি হাসি-সহ সচিনের টিপ্পনি, “সেট হতে সময় লাগত বলে ওর মনে হয়। আমাদের কিন্তু কখনও সেটা মনে হয়নি।” |