স্কুলজীবনে একশো মিটার দৌড়োতেন ১১.৪ সেকেন্ডে। পরবর্তী জীবনে তাঁর বিখ্যাত ‘ভোকাল টনিক’-এ গতি পেয়েছে নইমুদ্দিন থেকে সুভাষ ভৌমিক মায় ভাইচুং ভুটিয়ার ফুটবল কেরিয়ার। শুধু ফুটবল কেন? পদ্মশ্রী প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় যে সলতে পাকিয়ে দিয়েছিলেন সৌরভ-লিয়েন্ডারের সাফল্য শুরুর উড়ানেও।
এ বার শুধু ‘ভোকাল টনিক’ দিয়েই নয়। বাস থেকে টু-হুইলার--আম-আদমির যানবাহনও গতি পাবে ‘পিকেস চ্যাম্পিয়ন্স হাব’ থেকে। মঙ্গলবারই যার পথ চলা শুরু হল রাজারহাটে। যার সুবাদে এ বার জ্বালানি ব্যবসায়ী হিসাবে নতুন চ্যালেঞ্জ এই প্রাক্তন ফুটবল কোচের সামনে। ফলে সুনীল গাভাসকার, কপিল দেবদের সঙ্গে একই সারিতে ঢুকে পড়লেন প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দেশের ‘আইকন’ খেলোয়াড় হিসাবে যাদের হাতে পেট্রোল পাম্প চালনার ভার তুলে দিয়েছে পেট্রোপণ্য উৎপাদক সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল। রাজ্যে পিকেই প্রথম ক্রীড়াবিদ যাঁকে এই সম্মান দিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। |
তাঁর সাফল্যের মুকুটে নানা পালক। জাতির জনকের জন্মদিনে জ্বালানি ব্যবসায়ী হিসাবে নতুন ইনিংস শুরু করা প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর পাঁচ দশকের বন্ধু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মূল্যায়ন, “ও অদম্য। হারতে জানে না কোনও দিনই। ওর ভিতরের আগুনটাই জিতিয়ে দেয় সব জায়গায়।” যার সঙ্গে একমত পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীও। বলছেন, “উনি তো সকলের হতাশা থেকে বেরিয়ে আসার প্রদীপ।”
তবে ব্যবসায়ীর জোব্বা পরলেও ফুটবলকে কিন্তু দূরে সরিয়ে রাখছেন না পিকে। বলছেন, “ফুটবলের উৎকর্ষ বাড়াতে রাজারহাটে কোচিং ক্যাম্প শুরু করার ইচ্ছে রয়েছে। আগামী দিনের ফুটবলার তুলে আনতে হবে যে।”
এরই মাঝে খোঁজ রাখছেন ডিকা-সৌমিকদেরও। মানছেন, এএফসি কাপ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় পর্বে ঘরের মাঠে এগিয়ে ইস্টবেঙ্গলই। বললেন, “ওদের লড়াই মন ভরিয়ে দিয়েছে। কুয়েতের দলটা অপরাজেয় নয়। যুবভারতীতে চেষ্টা করলেই জিতে যাবে ইস্টবেঙ্গল।” পরমুহূর্তেই তাঁর হৃদয়ের ‘ফুয়েল ট্যাঙ্ক’ থেকে মেহতাবদের এএফসি লড়াইয়ের জন্য শুভেচ্ছার মোড়কে পিকের জ্বালানি, “গোটা দেশ তোমাদের দিকে তাকিয়ে। পারতেই হবে। পারবে। ২২ অক্টোবর যুবভারতীতে হারার আগে হেরে যেও না। বিপক্ষ যেন তোমাদের ‘মৃত জোশ’ দলে তবে জয় পায়।”
ফুটবলের জন্য পঁচাত্তরেও পিকের জ্বালানি যে নিঃশেষ হয় না!
|