|
|
|
|
গোপন চুক্তি চলবে না, নেতাদের বার্তা মানসের
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পুরসভা নির্বাচনে শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের সবক’টিতেই কংগ্রেসের প্রার্থী থাকবে। কোনও গোপন চুক্তি চলবে না। বুধবার মেদিনীপুরে এসে ঠিক এই ভাবেই দলীয় নেতৃত্বকে সতর্ক করলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা তথা বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তাঁর কথায়, “অনেক চক্রান্ত হয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। কংগ্রেসকে কখনও ধ্বংস করা যায়নি না। যাবে না। কংগ্রেসের অতীত আছে। বর্তমান আছে। ভবিষ্যৎ আছে। শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের সবক’টিতেই কংগ্রেসের প্রার্থী থাকবে। কোনও গোপন চুক্তি চলবে না। আগামী দিনের লড়াইয়ের জন্য দলের কর্মীরা তৈরি হন।” তিনি বলেন, “আমি অনেক ভাইবোনদের দেখি, তাঁরা কেমন জড়োসড়ো ভাবে থাকেন। কুন্ঠার আবরণ থেকে বেরিয়ে আসুন। জড়োসড়ো ভাব ঝেড়ে ফেলুন।” পুরসভা নির্বাচনে কয়েকটি ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল দলের অন্দরেই। কয়েকটি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করা নিয়েই প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়। পরিস্থিতি দেখেই মানসবাবুর এই মন্তব্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বুধবার মেদিনীপুর শহর কংগ্রেসের সম্মেলন হয় বিদ্যাসাগর হলে। পুরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই এই সম্মেলন। মানসবাবুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেত্রী কৃষ্ণা দেবনাথ, জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবে প্রমুখ। ছিলেন দলের ৪ জন বিদায়ী কাউন্সিলরও। |
|
দলীয় কর্মিসভায় বক্তব্য রাখছেন মানস ভুঁইয়া। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে পুরসভার ক্ষমতা দখল করে কংগ্রেস- তৃণমূল। দু’দলের জোট হয়। পুরপ্রধান হন তৃণমূলের প্রণব বসু। উপপুরপ্রধান হন কংগ্রেসের এরশাদ আলি। নির্বাচনের আগে অবশ্য দু’দলের জোট ছিল না। এ বারও জোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এমনকী, নির্বাচনের পর জোটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন দু’দলের শহর নেতৃত্ব। এদিন শহরের দুই তৃণমূল নেতা দলবদল করে কংগ্রেসে যোগ দেন। একজন হিমাংশু মাইতি। অন্যজন প্রশান্ত নন্দী। এই দুই নেতার দাবি, তৃণমূলে তাঁরা সন্মান পাচ্ছেন না। তাই দলবদল করলেন। শহর কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খাঁন বলেন, “দুই তৃণমূল নেতা তাঁদের অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ওঁরা দলে ফিরে আসায় আমরা খুশি।” বুধবারই কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তা হয়নি। দলীয় সূত্রে খবর, আরও কয়েকজন তৃণমূল নেতা দলবদল করে কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। তাই এদিন প্রার্থী তালিকা ঘোষনা করা হয়নি। আগামী দিনেও কী এই দলবদলের প্রক্রিয়া চলবে? সৌমেনবাবুর মন্তব্য, “দেখা যাক না কী হয়।” দুই নেতার দলবদলকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। দলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যা বলেন, “গত বিধানসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর পুর-এলাকায় আমরা ৩৩ হাজার ভোটে এগিয়েছিলাম। যে দু’জন দলবদল করেছেন, তাঁরা কোনও পদে ছিলেন বলে জানা নেই। এখন কেউ যদি প্রার্থী হবেন বলে কংগ্রেসে চলে যান, সেখানে আমরা আর কী করব!”
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানসবাবু বলেন, “কংগ্রেসের হাত ধরেই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমরা যদি সিপিএমের বি-টিম হই, তাহলে ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জোট করলেন কেন?” তাঁর কথায়, “গ্রাম-শহরের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচুর কর্মসূচি রয়েছে। সেই সব কর্মসূচিগুলো চলছে। আর মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সব তিনি করছেন। ঝাড়গ্রাম এখন সন্ত্রাসে ঠকঠক করে কাঁপছে! যৌথ সন্ত্রাস চলছে। একদিকে পুলিশের সন্ত্রাস। অন্যদিকে, তৃণমূলের সন্ত্রাস।”
সম্মেলনে কর্মীদের আরও শৃঙ্খলাপরায়ণ হওয়ার নির্দেশ দেন মানসবাবু। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের পদ নিয়ে যাঁরা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কথা বলেন তাঁদের বলছি, দলের মধ্যে শৃঙ্খলা, আনুগত্যই বড় জিনিস। সকলকেই দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।” সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষ্ণা দেবনাথও বলেন, “কংগ্রেস কারও সঙ্গে জোট করবে না। পুরসভা নির্বাচনে ২৫টি ওয়ার্ডের সব ক’টিতেই কংগ্রেসের প্রার্থী থাকবে।” |
|
|
|
|
|