ডেঙ্গি-ভয় সত্ত্বেও বন্ধ সাফাই, জঞ্জালের স্তূপ জমছে শহরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বকেয়ার দাবিতে পুরসভার সাফাই বিভাগে যুক্ত বেসরকারি গাড়ির মালিকরা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় জঞ্জালের স্তূপে ঢেকে গিয়েছে শহর শিলিগুড়ি। পুজোর মুখে শহরের পথে চলা দায় হয়ে পড়েছে। এমনিতেই শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছে। উপরন্তু, শহরে দূষণ বাড়তে থাকায় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। বিশেষত, পুজোর প্রাক্কালে পরিষেবা বন্ধ করে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধছে শহরে। শুধু তাই নয়, বুধবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা ডাকলেও তা ভেস্তে গিয়েছে। পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক পুজোর মুখে পরিষেবা বন্ধ করায় প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন। তাতেই বৈঠক ভেস্তে যায়। মেয়র পারিষদ বলেন, “গাড়ির মালিকেরা আইন না মেনে নিয়েই টাকা চাইছিলেন, আমরা তা দিতে পারব না জানিয়েছি। পুরসভা তরফে শহর পরিষ্কার করা হবে।”
এই পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তৃণমূল। তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল বলেন, “কোনও পরিকল্পনা নেই মেয়রের। এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত ছিল তা নিয়ে কোন ভাবনা নেই মেয়রের। আমরা নিজেরাই শহরের মানুষকে সাহায্যের জন্য ব্যবস্থা নেব।” |
 |
জঞ্জালে ভরে রয়েছে শিলিগুড়ি শহরের চার্চরোড। |
তবে আন্দোলনকারী ট্রাক মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে যুগ্ম সম্পাদক গোবিন্দ সরকারের অভিযোগ, “আলোচনা চলার সময় পূর্তর্ বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক আমাদের নানা ভাবে হেনস্থা করেন, এমনকী, গাড়ি না চালালে আমাদের জেলে পোরার হুমকি দেন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে সভা ছেড়ে চলে আসি। আমাদের আন্দোলন চলবে। বকেয়া টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কোন ভাবেই আমরা কাজ করব না।” পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ অবশ্য দাবি করেন, “বেআইনি কাজকর্ম করলে পুরসভা আইনি ব্যবস্থা নেবে এ টুকু জানানো হয়েচে। কোনও হুমকি দেওয়ার প্রশ্ন নেই। গাড়ির মালিকরাও তো আমাদের শহরেই বাসিন্দা। তাঁদের পরিবারও এই শহরে থাকেন। সকলেই আমাদের পুরসভার নাগরিক। কাজেই তাঁদেরও দায়িত্ব রয়েছে।”
সমস্যার সমাধানসূত্র না মেলায় শহরের জঞ্জাল পরিস্থিতি যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেট এর প্রায় প্রতিটি রাস্তায় জমে রয়েছে জঞ্জাল। তাই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পুরসবার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “শহরে জঞ্জাল নিয়ে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছে। সাধারণ মানুষ এসে আমাদের কাছে কৈফিয়ত চাইছেন, অন্যদিকে ক্ষমতা নিয়ে ঘরে বসে রয়েছেন মেয়র। এই পরিস্থিতির জন্য কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূলও দায়ী। তাঁরাই নান্টু পালকে নিয়ে যে দল ভাঙানোর খেলা শুরু করেছিলেন তার জেরেই এই অচলাবস্থার তৈরি হয়েছে।” তবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আর্থিক কমিশনে বরাদ্দ টাকা থেকে এই কাজে অর্থ ব্যয় করতে পারে পুরসভা এমনটাই জানান তিনি। |
 |
বন্ধ পুরসভার জঞ্জল অপসারণের ট্রাক। |
শহরের এই বেহাল পরিস্থিতিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তাঘাট। মুখে রুমাল দিয়ে যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ। ছোট গলি থেকে মূল রাস্তা সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে ময়লা। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সলির শালিনী ডালমিয়া বলেন, “আমার ওয়ার্ড এর পুরোটাই ব্যবসায়িক এলাকা। মাছ বাজার থেকে সবজি বাজার সবই রয়েছে এখানে। সেখানে সব রাস্তায় এভাবে জঞ্জাল পড়ে থাকায় সকলের খুব অসুবিধে হচ্ছে।
অনেকবার বরোতে ফোন করেছি, কিন্তু কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেয় নি পুরসভা।” একই অভিযোগ রয়েছে অন্যান্য কাউন্সিলরদের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে জঞ্জাল জমে থাকায় অন্য কোন রোগ ছড়াতে পারে। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “আমরা দু’মাসের বকেয়া টাকা দিতে চেয়েছিলাম। আলোচনা ফলপ্রসূ হয় নি। প্রশাসনকে জানিয়েছি গাড়ি দেওয়ার জন্য।” তবে পুরসভার যে গাড়ি রয়েছে তা দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার থেকে জঞ্জাল পরিষ্কার করা হবে বলে জানান পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ। |
—নিজস্ব চিত্র। |
পুরনো খবর: আন্দোলনে ট্রাক মালিকেরা, জঞ্জাল জমছে শিলিগুড়িতে
|
শব্দবাজি-সহ ধৃত
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান |
কুলগড়িয়ার কাছে পটনা থেকে কলকাতাগামী একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে১৮০ প্যাকেট নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক করল পুলিশ। ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। ধৃতের নাম আবদুল রহমান। ধৃতের বাড়ি মধ্যপ্রদেশের সাজাপুর জেলার বক্সীতে। |
|