বকেয়া টাকা আদায়ের দাবিতে ট্রাক মালিকদের আন্দোলনের জেরে জঞ্জালের পাহাড় জমছে শিলিগুড়ি শহরে। মঙ্গলবার গাড়ি মালিকদের সংগঠন ‘পিডব্লুউডি অ্যান্ড কনজারভেন্সি হায়ার ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন তরফে জানানো হয়, বকেয়া না পেলে আর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। গত মে থেকে ২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানান সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক গোবিন্দ সরকার। তিনি বলেন, “বাজেট, বোর্ড মিটিং হলে টাকা পাব বলে জানিয়ে ছিলেন মেয়র। কিন্তু তাই হয়নি। আমাদের পক্ষে আর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।” যদিও মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “আশা করছি, দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।” |
শহরের ব্যস্ত এলাকায় রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে জঞ্জাল।
মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহর জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপ। এর মধ্যে জঞ্জাল অপরসারণের গাড়ি বন্ধ করে যাওয়ায় একদিনেই বিভিন্ন এলাকায় জমেছে জঞ্জালের স্তুপ। অনেক রাস্তায় জঞ্জালে হাঁটাচলাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। পুরসভা সূত্রের খবর, পুজোর মরশুমে স্বাভাবিক ভাবেই আর্বজনার পরিমাণ বেশি হয়। রোজ শহরে প্রায় ২৫০ টনের মত জঞ্জাল তৈরি হয়। পুজোর মরশুমে তা বেড়ে প্রায় ৩০০ টন দাঁড়ায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগেই গাড়ির ট্রিপ বাড়ানো ও সাফাই কর্মী সংখ্যা বাড়াবার দাবি জানিয়েছিলেন সিপিএম এবং তৃণমূলের কাউন্সিলররা। কিন্তু কিছু হয়নি বলে অভিযোগ।
এ দিন মেয়রের পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল। একই কথা বলেছেল জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের তৃণমূলের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত। তিনি বলেন, “বেশ কয়েক মাসের গাড়ির টাকা বাকি পড়ে রয়েছে ঠিকই। মেয়রের উচিত ছিল টাকার ব্যবস্থা করে সমস্যার সমাধান করা। মেয়রের পদত্যাগ করা উচিত।” এদিন শহরের বিভিন্ন রাস্তায় জমা জঞ্জাল দেখা গিয়েছে। শহরে নার্সিংহোম ও হাসপাতাল এলাকাতেও জমে রয়েছে জঞ্জাল। পুরসভার বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম বলেন, “একদিকে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ভয়াবহ। জঞ্জাল অপসারণের কাজ বন্ধ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।” পুরসভা সূত্রের খবর, পাওনা টাকার দাবি জানিয়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মেয়রকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন গাড়ি মালিকেরা। পুর বাজেটের পর টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়ে ছিলেন গঙ্গোত্রীদেবী। কিন্তু বাজেট, বোর্ড মিটিং হওয়ার পরেও টাকা না মেলায় এ দিন থেকে গাড়ি বন্ধ করে দেন মালিকেরা। পুরসভায় মোট ৪৫টি ভাড়ার গাড়ি জঞ্জাল অপসারণের কাজ করে। প্রতিটি ট্রিপের জন্য মালিকদের দেওয়া হয় ৪৩০ টাকা।
এ দিন গাড়ির মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মেয়র পারিষদ (পরিবহণ) সঞ্জয় পাঠক। কিন্তু আলোচনার পরেও কোনও সমাধানসূত্র বার হয়নি। আলোচনায় জুন মাস পর্যন্ত বকেয়া টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন সঞ্জয়বাবু। কিন্তু গাড়ি মালিকদের সংগঠনের সদস্যরা তা মানতে রাজি হননি। তাঁদের দাবি, “কমপক্ষে তিনমাসের টাকা দিতে হবে। যা পরিস্থিতি তাতে গাড়ির চালক ও কর্মীদের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না।” |