বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে চার জনের প্রাণ যাওয়ার পর টনক নড়ল পুলিশ প্রশাসনের। মঙ্গলবার রাত থেকেই হুগলির বেগমপুরের ছোট তাজপুরে বেআইনি বাজি আটক করতে অভিযান চালানো হল। উদ্ধার হল প্রচুর শব্দবাজি এবং আতসবাজি। একই সঙ্গে মঙ্গলবারের বিস্ফোরণের জেরে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ছোট তাজপুরে একটি বাড়িতে বাজি বানানোর সময় মঙ্গলবার বিকেলে প্রবল বিস্ফোরণ হয়। গোটা বাড়িটাই কার্যত ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। দু’টি শিশু-সহ পরিবারের চার জন ঝলসে মারা যান। ওই ঘটনার পরেই প্রশাসনের কর্তারা নড়েচড়ে বসেন। পুলিশ জানিয়েছে, রাতেই পরিবারের কর্তা অশোক মালকে গ্রেফতার করা হয়। বিনা অনুমতিতে প্রচুর পরিমাণ বাজি বানানোর অভিযোগে আরও দু’জনকে ধরা হয়। আরও কয়েক জন পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। |
মঙ্গলবারের দুর্ঘটনায় অশোকবাবুর স্ত্রী, ছোট দুই ছেলেমেয়ে এবং ভাইয়ের মৃত্যু হয়। বুধবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে দেহগুলির ময়না-তদন্ত করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার সকালে ছোট তাজপুর মালপাড়ার চারটি বাড়িতে বিশাল পুলিশ বাহিনী হানা দেয় শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত এবং এসডিপিও রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। প্রায় আট হাজার কেজি বাজি উদ্ধার করা হয়। যার পুরোটাই বেআইনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “চারটি ক্ষেত্রেই বাড়ির ভিতরে বাজি তৈরি হত। এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। পুলিশ ওই চত্বরে নজর রাখবে।”
তবে শুধু বেগমপুরই নয়। চণ্ডীতলার কালীপুর, কলাছড়া এবং ডানকুনিরও বহু বাড়িতে বাজি তৈরি হয়। ধনেখালি, পোলবা, তারকেশ্বরের একাংশেও বাজি তৈরি কুটির শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। ন্যূনতম নিরাপত্তা ছাড়াই দিনের পর দিন বেআইনি ভাবে প্রশাসনের নাকের ডগায় ওই কাজ চললেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। প্রতি বারেই অবশ্য কালীপুজোর আগে কাগজে-কলমে পুলিশের অভিযান চলে। বাজিও উদ্ধার হয়। |