ট্রিপল আই টি
শিক্ষা থেকে অর্থ বরাদ্দ, একসুর মমতা-জয়া
শিক্ষার মতো বিষয়কে সামনে রেখে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ফের জোট বেঁধে প্রতিবাদে নামল আঞ্চলিক দলগুলি।
শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (ট্রিপল আই টি) বিলে রাজ্যের ভূমিকাকে খর্ব করা হচ্ছে— ওই যুক্তি তুলে গত কাল শিক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরব হল তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বিজেডি, এডিএমকের মতো শাসক আঞ্চলিক দলগুলি। অভিযোগ, রাজ্য সরকার জমি ও যথেষ্ট অর্থ দেওয়া সত্ত্বেও বিলটিতে ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের ভূমিকাকে খর্ব করা হয়েছে। বিলটি নিয়ে ওই মতপার্থক্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের মতো পুরনো বিতর্ক আরও এক বার জাগিয়ে তুলল, যার জেরে এখন কার্যত বিশ বাঁও জলে ট্রিপল আই টি বিলের ভবিষ্যৎ। যে ভাবে বিভিন্ন দল বিলটির বিরোধিতায় একজোট হয়েছে, তাতে ইউপিএ-র শেষ ছয় মাসে তা পাশ হওয়ার আর আশা দেখছেন না কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তারা।
প্রযুক্তি তথা উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে দেশে ২০টি ট্রিপল আই টি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই চারটি রাজ্যের ট্রিপল আই টি-তে পড়াশোনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। গত মার্চে লোকসভায় ‘ট্রিপল আই টি বিল’টি পেশ করা হয়েছিল। এখন সেটি শিক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে রয়েছে। কিন্তু ট্রিপল আই টি-র পরিচালনায় যে ভাবে এক দিকে রাজ্যের ভূমিকা খর্ব করা হয়েছে ও বেসরকারি সংস্থার হাতে বাড়তি প্রশাসনিক দায়িত্ব তুলে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাতে ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছে কংগ্রেস বাদে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই। কমিটির এক সদস্যের কথায়, “স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বীরেন্দ্র সিংহ কংগ্রেসের সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও বিলটির রূপরেখা নিয়ে মন্ত্রকের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।”
কপিল সিব্বল মন্ত্রী থাকাকালীন সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিতে (পিপিপি মডেল) ট্রিপল আই টি-গুলি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই এলাহাবাদ, গ্বালিয়র, জব্বলপুর ও কাঞ্চিপুরমে ট্রিপল আই টি মানের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। ওই চারটি-সহ ২০টি ট্রিপল আই টি-কে জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ও প্রশাসনিক কাজে স্বাধীনতা দিতে গত মার্চে এই বিলটি লোকসভায় আনা হয়। বিলে প্রতিটি ট্রিপল আই টি গড়ার খরচ ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি টাকা যার ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৪ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র। রাজ্য দেবে ৩৫ শতাংশ বা প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। বাকি ১৯ কোটি টাকা দেবে বেসরকারি সংস্থা। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উৎকর্ষ বাড়াতেও ৫০ কোটি দেবে কেন্দ্র। কিন্তু ৫০-১০০ একর জমির জোগান বিনামূল্যে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকেই।
বৈঠকে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতে, শহরাঞ্চলে ১০০ একর জমির দামই তো ১০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। তাই খরচ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে প্রতিষ্ঠান গড়তে প্রায় সমান অর্থ দিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য। অথচ বিল বলছে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিতে ১২ জন সদস্যের মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিই থাকবে আট জন। রাজ্যের প্রতিনিধি থাকবে মাত্র চার জন। তা ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানের জন্য যে কোন নির্দেশ ও আইন বানানোর ক্ষমতা থাকবে কেবল কেন্দ্রের হাতে, রাজ্যের কোনও এক্তিয়ার থাকবে না। ডেরেকের মতে, এটা রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ। তৃণমূলের ওই বক্তব্যকে সমর্থন জানান উপস্থিত এডিএমকে, বিজেডি ও সপা-র সদস্যরা। বিলে কেন্দ্র ও রাজ্যের সমান প্রতিনিধিত্বের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা।
তিন সদস্যের চেয়ারম্যান নিয়োগ কমিটিতে কেন্দ্র, রাজ্য ও শিল্প মহল থেকে এক জন করে প্রতিনিধি রাখার যে বিধান রাখা হয়েছে— তাতেও আপত্তি রয়েছে বহু দলের। তাদের বক্তব্য, সময়ের চাহিদা মেনে পাঠ্যক্রমে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শিল্প মহল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেই পারে, কিন্তু প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তাদের ছড়ি ঘোরানো মেনে নেওয়া যায় না।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.