পুজো শেষেই ঈদ। উৎসবের মরসুমে পর্যটনের মুখ চেয়ে সেজে উঠছে মুর্শিদাবাদ।
শহরের রাস্তা মেরামতি, আবর্জনয়া উপচে ওঠা নিকাসি সাফাই, মুর্শিদাবাদ পুর এলাকাকে একটু সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে চাইছে পুর কর্তৃপক্ষ। লালবাগ স্টেশন রোড থেকে জেলখানার রাস্তা, দক্ষিণ দরজা থেকে ওয়াসিফ মঞ্জিল, সেজে উঠছে আলোর মালায়। পুরসবা সূত্রে এমনই জানানো হয়েছে।
অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ, টানা পর্যটন মরসুম। লালবাগে এই পর্বে আসেন প্রায় ১৫ লক্ষ দেশি-বিদেসি পর্যটক। পুরপ্রধান শম্ভুনাথ ঘোষ বলেন, “মুর্শিদাবাদ শহরের মত প্রাচীন জনপদ দেখতে এই সময়ে বিদেশি পর্যটকের বিড় চোখে পনান মতো। আমাদেরও তাই একটু সেজেগুজে থাকতে হচ্ছে। আলো লাগানো হয়েছে। তাতেই খরচ পড়ছে প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা। সঙ্গে অন্যান্য কাজ। যতটা পারা যায় শহরটাকে সাফসুতরো করে রাখা হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিনে আস্তাবল মোড় থেকে রেজিষ্ট্রি অফিস হয়ে নাকুড়তলা মোড় পর্যন্ত, লালবাগ পেট্রল পাম্প থেকে মতিঝিল হয়ে হাসপাতাল রোড সংস্কারের কাজ শেষ। এখন লালবাগ রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে হাজারদুয়ারি হয়ে কাঠগোলা বাগান পর্যন্ত এবং ইছাগঞ্জ মোড় থেকে কুর্মিতলা হাইস্কুল হয়ে বহরমপুর-জিয়াগঞ্জ রাজ্য সড়ক পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে। তবে এখনও বেশ কিছু রাস্তা বর্ষার ক্ষত নিয়ে পড়ে রয়েছে। সেগুলি মেরামত করার দায়িত্ব অবশ্য পূর্ত দফতরের। |
শহরে রাস্তা বেশ সংকীর্ণ। এ বার সেই সব রাস্তায় পর্যটকদের ঢল নামলে আর গাড়ি ঘোড়া চলার জো তাকবে না। তাই পর্যটকদের বড় বাস আর শহরে ঢুকতে দেওয়া যাবে না বলেই মনে করছে পুরসভা। স্থানীয় কাউন্সিলর বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “লালবাগ বাস টার্মিনাসে পর্যটকদের বাস রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া উপায় নেই। শহরে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩০ জন যুবককেও নিয়োগ করা হবে।”
তবে শহরে ঢুকে পর্যটকেরা রিকশা, টাঙার ভাড়া নিয়ে অস্বস্তিতে পড়বে নাতো? লালবাগ স্টেশন কিংবা বাস স্ট্যান্ড থেকেই রিকশা বা টাঙা পাওয়া যায়। কিন্তু তাদের ভাড়ার কোনও ঠিক নেই। পুরপ্রধান বলেন, “পর্যটন মরশুমের আগেই আলোচনা করে টাঙা ও রিকশার নির্দ্ধারিত ভাড়া ঠিক করে দেওয়া হবে এবং বিভিন্ন মোড়ে তার তালিকাও টাঙিয়ে দেওয়া হবে।”
হাজারদুয়ারি মিউজিয়ামের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা পুরাতত্ত্ববিদ নয়ন চক্রবর্তী বলেন, “বিভিন্ন পরিষেবার অভাব থাকা সত্ত্বেও বহু পর্যটক প্রতি বছর লালবাগে ভিড় করেন। তাঁরা আসেন মূলত হাজারদুয়ারি, কাটরা মসজিদ বা সিরাজ-উদ-দৌলার সমাধি দেখার টানেই। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পেশার মানুষ উপকৃত হবেন। ফলে জেলার অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।” |