পুজোর মুখে হুগলির বেগমপুরে একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হল চার জনের। মৃতদের মধ্যে এক মহিলা এবং তাঁর দু’টি শিশুসন্তানও রয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় এক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে ওই দুর্ঘটনায় মৃতেরা হলেন মামণি মাল (২৮), তাঁর ছেলে হাকিম (৭), মেয়ে সোহানা (৫) এবং দেওর তাপস মাল (৩০)। মামণির একতলা বাড়ির একটি ঘরে ওই বেআইনি বাজি কারখানা চালানো হত। কারখানার অন্যতম মালিক, মামণির স্বামী অশোক মাল পলাতক। পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, “ওই এলাকায় অবৈধ বাজি তৈরি রুখতে পুলিশ ধারাবাহিক অভিযান চালাবে।” |
পুড়ে খাক। দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেগমপুরের ছোট তাজপুর মালপাড়ায় অশোকের বাড়িতে মজুত বাজিতে কোনও ভাবে আগুন লেগে যায়। প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণের অভিঘাতে বাড়িটি ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। জিনিসপত্র পুড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। প্রাথমিক ভাবে বিস্ফোরণের আওয়াজে গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পরে অবশ্য তাঁরাই জল ঢেলে আগুন নেভান। অশোকবাবুর বৃদ্ধা মা অগ্নিদগ্ধ হন। তাঁকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ইমরান খান বলেন, “২০ বছর ধরে ওই বাড়িতে বাজি তৈরি হচ্ছে। নিষেধ করেছি, শোনেনি। পুলিশকে বলেছি। তাতেও কাজ হয়নি। এর ফলে যা হওয়ার তাই হল।”
বস্তুত, হুগলির চণ্ডীতলা এবং ডানকুনির বেশ কিছু এলাকায় দুর্গাপুজোর আগে থেকেই বহু ঘরে বাজি তৈরি হয়। পুলিশ মাঝেমধ্যে ধরপাকড় করলেও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেআইনি এই কারবার বন্ধে পুলিশ-প্রশাসন তেমন সদিচ্ছা দেখায় না। আর প্রশাসনের এই গাফিলতির সুযোগ নিয়েই পুজোর মরসুমে চড়া লাভের আশায় বাজি তৈরি হয় হুগলির এই অংশে। কয়েক বছর আগেই চণ্ডীতলার কলাছড়ায় একই ভাবে বিস্ফোরণে মহিলা, শিশু-সহ বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার পরে ধনেখালিতেও বিস্ফোরণে বেশ কিছু শ্রমিক মারা যান। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। এ বার একই ঘটনা ঘটল বেগমপুরেও। |