খারাপ হয়ে যাওয়াতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল একটি লরি। হঠাৎই লরির সামনে এসে দাঁড়াল একটি সাদা রঙের গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে তিন যুবক নিজেদের পরিচয় দিল সিটি পুলিশকর্মী বলে। কথা বলার মাঝেই জোর করে চালকের কেবিনে উঠে পড়ল তাঁরা। পরে চালক-খালাসিদের অস্ত্র দেখিয়ে কয়েক হাজার টাকা ডাকাতি করল। তার পরে গাড়ি নিয়ে চলে গেল বাবুঘাটের দিকে। সোমবার গভীর রাতে, হেস্টিংস মোড়ের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয় খিদিরপুর এলাকা থেকে। উদ্ধার হয়েছে কয়েক হাজার টাকা-সহ একটি রিভলভার এবং ভোজালি।
পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে একটি পাট বোঝাই লরি নদিয়ার চাপরা থেকে বজবজের একটি চটকলে যাচ্ছিল। রাত ২টো নাগাদ হেস্টিংস মোড়ের আগে সেটি খারাপ হয়ে যায়। চালক স্বপন কর্মকার জানান, বৃষ্টির জন্য খালাসি-সহ তিন জন লরির ভিতরে ছিলেন। আচমকা একটি গাড়ি এসে দাঁড়ায় সামনে। চালকের অভিযোগ, গাড়ি থেকেই নেমে তিন দুষ্কৃতী তাঁর কেবিনে উঠে আসে। এবং নিজেদের পুলিশকর্মী পরিচয় দিয়ে অস্ত্র বার করে ভয় দেখাতে থাকে। স্বপনবাবুর আরও অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা তাঁদের মারধর করে কয়েক হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ডাকাতি করার পরে দুষ্কৃতীরা গাড়ি ঘুরিয়ে বাবুঘাটের দিকে চলে যায়। পরে হেস্টিংস মোড়ে টহলরত পুলিশকর্মীদের কাছে গাড়িটির নম্বর জানিয়ে অভিযোগ করেন স্বপনবাবু।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটির নম্বর থেকে প্রথমে গাড়ির মালিকের সন্ধান মেলে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, গাড়িটি একটি ট্র্যাভেল এজেন্সির গাড়ি। মালিক পুলিশকে জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরের পর থেকে গাড়িচালক গুড্ডু সিংহের তাঁর যোগাযোগ নেই।
গোয়েন্দারা দাবি করেছেন, মঙ্গলবার সকালে সার্কুলার গার্ডেনরিচ রোডের বাড়িতে গুড্ডুর খোঁজ পাওয়া যায়। তাকে জেরা করার পরেই বাকিদের ধরা হয়। ওই তিন জনের নাম মহম্মদ আজহারউদ্দিন ওরফে বিট্টু, মহম্মদ আফতাব ও সন্তু মাইতি। সবারই বাড়ি বন্দর এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে গাড়ি চালাচ্ছিল গুড্ডু। আফতাব ভোজালি দেখিয়ে লরির চালক ও খালাসিদের মারধর করে। ঘটনার পরে চার জন মদ্যপান করে এবং টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে যে যার বাড়ি চলে যায়। ধৃতেরা আগে কোন অপরাধমূলক কাজে যুক্ত ছিল কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। |