মার্কিন প্রশাসনে তালা
ভারতের রফতানি মার খাওয়ার আশঙ্কা
মার্কিন প্রশাসনে তালা পড়ে যাওয়ায় ফের কোপ পড়তে চলেছে ভারতের রফতানি বাণিজ্যে। মন্দার জেরে গত কয়েক বছর ধরেই তা তলানিতে ঠেকেছিল। ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে এই বিপত্তিতে তাই হতাশ ভারতের রফতানি শিল্পমহল।
মূলত আমেরিকার সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাবই এ দেশের রফতানির উপর পড়বে বলে বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন রফতানিকারীরা। কারণ মোটা বেতনের সরকারি কর্মীদের বেতন ছাঁটাই হলে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমবে। যার আওতায় আসবে ভারতের রফতানি পণ্যও। পাশাপাশি, ওবামা সরকারের ওই সিদ্ধান্তের জেরে আমেরিকার বন্দর পরিষেবাও ব্যাহত হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের। যার প্রভাবেও মার খাবে ভারতের রফতানি।
আমেরিকায় ওই অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে মঙ্গলবার কলকাতায় ইইপিসি ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অনুপম শাহ বলেন, “আমেরিকার বন্দরে কর্মীরা কাজ বন্ধ করলে জাহাজে মাল খালাস ব্যাহত হবে। ফলে ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ দিতে হবে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের রফতানিকারীদের। মার্কিন সমস্যার সমাধান না-হলে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য-সহ ভারতের পুরো রফতানি বাণিজ্যই বড় রকমের ধাক্কা খাবে।”
বন্ধ স্ট্যাচু অফ লিবার্টি দেখার জন্য খেয়া পারাপারের ঘাট।
১ অক্টোবর থেকেই আমেরিকার সরকারি কর্মীদের বেতন বন্ধ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসে ২০১৩-’১৪ সালের পুরো বাজেট পাশ করানো সম্ভব হয়নি। ওই দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরেই বাজেট পাশ হয়নি। প্রতিরক্ষা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, হাসপাতাল, বিমানবন্দরের মতো কিছু অতি জরুরি পরিষেবা চালু রাখার জন্যই শুধু বাজেটের ব্যয় বরাদ্দ অনুমোদিত হয়েছে। বাকি সমস্ত সরকারি দফতরের খরচ চালানোর জন্য বাজেট পাশ করানো সম্ভব হয়নি।
আমেরিকায় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত পণ্য ওঠানো-নামানোর ক্ষেত্রে বন্দর পরিষেবা জরুরি তালিকায় থাকলেও সাধারণ পণ্য পরিবহণ পরিষেবা ওই তালিকায় ঠাঁই পায়নি। শুধু তাই নয়, আমদানি রফতানি সংক্রান্ত অন্য বিভাগগুলির কাজও অচল হয়ে পড়ার আশঙ্কা। ফলে সার্বিক ভাবে রফতানিকারীরা পড়বেন সমস্যায়। অনুপমবাবু বলেন, “মন্দার পরে আমেরিকায় রফতানি যখন বাড়তে শুরু করেছে, ঠিক তখনই এই সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় ভারতের রফতানি বাণিজ্য নিয়ে আমরা বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন।”
এ দিকে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রফতানিকারীদের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেন অনুপমবাবু। তাঁর অভিযোগ, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যে করছাড় বা ‘ডিউটি ড্রব্যাক’ সুবিধা ২৫ থেকে ৪০% পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। রফতানির উদ্দেশে কোনও পণ্য আমদানি করার সময়ে যে-শুল্ক দিতে হয়, তা ফেরত পাওয়া যায় ডিউটি ড্রব্যাক ব্যবস্থায়। অনুপমবাবু অভিযোগ করেন, “বস্ত্র-সহ আরও কিছু পণ্য রফতানিতে তা কমানো না-হলেও ৩৫০০ ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের ক্ষেত্রে তা উল্লেযোগ্য ভাবে কমানো হয়েছে। আমাদের দাবি, ওই হার কমানো তো দূরের কথা, তা আরও ৩০% বাড়ানো হোক।” ভারত থেকে যত পণ্য রফতানি হয় তার ৫৫ শতাংশই ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য। আর ওই পণ্যের ৬০% তৈরি হয় ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে।”
এ দিন শাহ জানান, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে প্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ৫০০ কোটি টাকার একটি তহবিল গড়ার জন্য তাঁরা কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। বস্ত্র-সহ আরও কিছু শিল্পের ক্ষেত্রে ওই ধরনের তহবিল ইতিমধ্যেই গড়া হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.