দ্রুত পুনর্বাসন ও ত্রাণের দাবি এডিডিএ-র কাছে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
সাঁকতোড়িয়ার ধস কবলিত এলাকার মানুষজনের পুনর্বাসন ও ত্রাণের দাবিতে এডিডিএ দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন কয়েকশো বাসিন্দা। নেতৃত্ব দেয় যুব কংগ্রেস। এর জেরে মঙ্গলবার জি টি রোডে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় এলাকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে।
এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ শ’পাঁচেক বিক্ষোভকারী কুমারপুরে এডিডিএ অফিসে যান। তাঁদের মিছিলের জেরে জি টি রোডে যানবাহন থমকে যায়। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। এডিডিএ অফিসে বিক্ষোভ শুরু হলে ঘটনাস্থলে যায় আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সাঁকতোড়িয়ার ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের অবিলম্বে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও ত্রাণের ব্যবস্থাও করতে হবে। তাঁদের আরও দাবি, এডিডিএ-র চেয়ারম্যানকে তাঁদের কাছে এসে প্রকাশ্যে এ ব্যাপারে আশ্বাস দিতে হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কার্যালয়ে ছিলেন না। প্রায় দু’ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। স্থানীয় বাসিন্দা, কংগ্রেসের যুবনেতা অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “২০১০ থেকে এলাকায় মাঝেমাঝেই কিছু জায়গায় ধস নামছে। পুনর্বাসনের দাবিও উঠেছে বহু বার। কিন্তু এডিডিএ উদ্যোগী হচ্ছে না।” শেষে পুলিশি মধ্যস্থতায় বিক্ষোভকারীরা নিখিলবাবুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। নিখিলবাবু আশ্বাস দেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টে নাগাদ তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করবেন। এর পরেই বিক্ষোভ থামে। |
কুমারপুরে এডিডিএ অফিসে বিক্ষোভ। মঙ্গলবারের নিজস্ব চিত্র। |
শুধু সাঁকতোড়িয়া নয়, রানিগঞ্জ-আসানসোল খনি অঞ্চলের নানা ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিও উঠেছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বড় ঘটনা ঘটলেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার কাজকর্ম নিয়ে নড়েচড়ে বসে এডিডিএ এবং জেলা প্রশাসন। কিন্তু কিছু দিন কেটে গেলেই সব আবার ধামাচাপা পড়ে যায়।
এ বার অবশ্য সে রকম কোনও পরিস্থিতি তৈরি হবে না বলে দাবি করেছেন এডিডিএ-র চেয়ারম্যান নিখিলবাবু। তিনি জানান, সোমবারই পুনর্বাসন সংক্রান্ত একটি বৈঠক করেছে জেলা প্রশাসন এবং এডিডিএ কর্তৃপক্ষ। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী নভেম্বরের মধ্যে ধস কবলিত এলাকার জনবিন্যাসের সমীক্ষা শেষ করা হবে। সেই সংক্রান্ত পরিচয়পত্রও দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, আসানসোলের ডামড়া, রানিগঞ্জের এগারা ও কোটালডিতে প্রায় ২০০০ একর সরকারি খাস জমি চিহ্নিত হয়েছে। ধস কবলিতদের সেখানে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সম্পাদক ইন্দ্রানী মিশ্রের অবশ্য দাবি, সাঁকতোড়িয়ার ধস কবলিতদের কুলটি পুর এলাকাতেই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তাঁদের যুক্তি, ওই এলাকার বাসিন্দাদের রুজি-রোজগার হয় এখান থেকে। তাই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেলে তাঁদের আয়ের পথ বন্ধ হবে।
গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ সাঁকতোড়িয়ার ১২ নম্বর কলোনির বাসিন্দা হেনা পারভিন ধসের ফলে তৈরি হওয়া একটি ফাটল দিয়ে ভূগর্ভে তলিয়ে যান। রবিবার রাতে ৮টা নাগাদ তাঁর দেহ উদ্ধার করে ইসিএলের খনি উদ্ধারকারী দল। মৃতার পরিবারকে বসবাসের জন্য একটি আবাসন দিয়েছে ইসিএল। এ দিন সকালে ওই কলোনিতে গিয়ে জানা যায়, সোমবার রাতে তাঁরা ফের মাটির কম্পন অনুভব করেছেন। কিছু জায়গায় নতুন করে ফাটলও দেখা গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। দু’দিনের বৃষ্টিতে ফাটল বেড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা চাঁদ মহম্মদের কথায়, “ফাটল দিয়ে মাঝেমধ্যে কটূ গন্ধও বেরিয়ে আসছে।” স্থানীয় ক্লাবের অস্থায়ী শিবিরে এ দিনও এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের থাকতে দেখা গিয়েছে।
দুর্ঘটনায় মৃত্যু। ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক মোটরবাইক আরোহীর। ঘটনাটি ঘটেছে জামুড়িয়ার বিজয়নগরের কাছে জামুড়িয়া চাকদোলা রাস্তায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বাউল দত্ত (৪৭)। বাড়ি আসানসোলের মহিশীলায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন মোটরবাইকে পিছনে বসেছিলেন বাউলবাবু। তাঁর বোনের বাড়ি জামুড়িয়ার বিজয় নগর থেকে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন বাউলবাবু। মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন তাঁর ২৫ বছরের ভাগ্নে। তাঁদের দু’জনের মাঝে বসেছিল তাঁর তিন বছরের নাতি। কিছুটা যেতেই পিছন দিক থেকে আসা একটি ডাম্পারের ধাক্কায় তাঁরা তিন জন লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই বাউলবাবুর মৃত্যু হয়।
|