উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের তালিকাভুক্তদের কার্যকাল শেষের সময়সীমা বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। এনবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পের তালিকাভুক্ত ৬০৭ কর্মীর কার্যকালের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ করার ব্যাপারে নিগম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। নিগমের কর্তারা ভিআরএসের জন্য এক মাস আগে ৯২ কোটি টাকা আর্থিক বরাদ্দ চেয়ে রাজ্যের দ্বারস্থ হন। তালিকাভুক্তদের সবাইকে একসঙ্গে ভিআরএস দেওয়া হলে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখায় সমস্যা হবে জানিয়ে প্রথম দফায় ৩০০ জনকে ভিআরএস দেওয়ার আর্জি জানান। চালক ও কন্ডাক্টর পদে অস্থায়ী ভাবে ২৬০ জনকে নিয়োগের আবেদনও পরিবহণ দফতরে পাঠিয়ে দেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আর্থিক বরাদ্দ দূর অস্ত ওই প্রকল্পের ব্যাপারে কোন নির্দেশিকা পর্যন্ত নিগম কর্তাদের কাছে আসেনি। পুরানো নির্দেশ মতো তালিকাভুক্তদের কার্যকালের মেয়াদ ফুরানোর শেষ দিনে বিষয়টি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। সোমবার বিকালে জটিলতা কাটাতে উদ্যোগী হন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা নিগমের চেয়ারম্যান গৌতম দেব। রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায় ও এনবিএসটিসি ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের সঙ্গে কথা বলেন নিগম চেয়ারম্যান। এর পরে তালিকাভুক্তদের মেয়াদ বাড়ানোর আশ্বাস দেয় পরিবহণ দফতর। মন্ত্রী তথা নিগমের চেয়ারম্যান গৌতমবাবু বলেন, “পরিবহণ সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। শীঘ্রই কার্যকালের সময়সীমা বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি জারি হবে।”
এনবিএসটিসি সূত্রের খবর, গত নভেম্বর মাসে স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কয়েক দফায় সময়সীমা বাড়ানর পর ৬৮৭ জন আবেদন করেন। ৬১২ জনের আবেদন গৃহীত হয়। আবেদন গৃহীত হওয়া ৫ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বাকি ৬০৭ জনের কার্যকাল শেষের মেয়াদ ৩০ সেপ্টেম্বর নির্দিষ্ট করে দেয় পরিবহণ দফতর। কর্মীর একাংশের অভিযোগ, আর্থিক সংস্থান না করেই তড়িঘড়ি ওই প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জয়দেব ঠাকুর বলেন, “ভিআরএস সংক্রান্ত ব্যাপারে নতুন নির্দেশ বা আর্থিক বরাদ্দ পাইনি।”
ঘটনায় ক্ষুব্ধ নিগমের ইনটাক অনুমোদিত ওয়াকার্স ইউনিয়ন। ওই সংগঠনের কোচবিহারের ডিভিশনের সম্পাদক সুজিত সরকার বলেন, “স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকার ছেলেখেলা করছে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রকল্পের ঘোষণা হল। সরকার তা কার্যকর করতে তো পারলই না, উল্টো নতুন নির্দেশিকাও জারি করতে পারল না।” এনবিএসটিসি ড্রাইভার্স অ্যান্ড তৃণমূল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “ভিআরএস নিয়ে যাতে বিভ্রান্তি না হয় তা কর্তৃপক্ষের দেখা দরকার।” |