|
|
|
|
আন্দোলনে আদিবাসী মঞ্চ |
ভূমিহীনদের জন্য জমি চেয়ে পথে আদিবাসীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
দীর্ঘ দিন দখলে থাকা বাস্তু ও চাষজমির পাট্টা বিলি, সব ভূমিহীনকে স্থানীয় ভাবে সরকারি জমি বিলি বণ্টনের ব্যবস্থা করা, নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে আবেদন করা প্রত্যেক ব্যক্তিকে জায়গা-সহ বসত বাড়ি দেওয়া, বনাধিকার আইন কার্যকর করা-সহ বেশ কিছু দাবিতে সোমবার মেদিনীপুর শহরে মিছিল করে আদিবাসী বনবাসী অধিকার মঞ্চ। মিছিল শেষে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) অরিন্দম দত্তের দফতরে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মঞ্চের সদস্যরা এসে এই কর্মসূচিতে যোগদান করেন। মঞ্চের আহ্বায়ক ঝর্ণা আচার্য্য বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে আদিবাসী মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রাপ্য সুযোগ পাচ্ছেন না। নির্দিষ্ট কিছু দাবির প্রেক্ষিতেই আমাদের এই কর্মসূচি।” এ দিন সব মিলিয়ে ১৮ দফা দাবি জানানো হয়। আদিবাসী বনবাসী অধিকার মঞ্চের হুঁশিয়ারি, দ্রুত পদক্ষেপ করা না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।
সোমবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরের অরবিন্দনগর এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়। পরে তা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। মঞ্চের বক্তব্য, এই জেলায় আদিবাসী মানুষের সংখ্যা এক লক্ষেরও বেশি। বিনপুর-২ ব্লক এলাকায় সর্বাধিক সংখ্যক আদিবাসী মানুষ বসবাস করেন। সামগ্রিক ভাবে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষেরা অধিকাংশই ভূমিহীন। কৃষি মজুর, ইটভাটার মজুর, ঘরবাড়ি তৈরির মজুর প্রভৃতি কাজই আদিবাসীদের জীবিকার মূল অবলম্বন। গোপীবল্লভপুর ১, কেশিয়াড়ি, সাঁকরাইল, ঝাড়গ্রাম-সহ ১০টি ব্লকের ৬২টি গ্রামে ২ হাজার ৭৪১টি আদিবাসী পরিবার দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করে আসছে। ওই ৬২টি গ্রামের ২০টিই জঙ্গল অধ্যুষিত। অথচ, এই সব গ্রামে এখনও বনাধিকার আইন কার্যকর হয়নি। তৈরি হয়নি বনাধিকার কমিটিও। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের প্রকল্পেও সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ মঞ্চের।
মঞ্চের নেতাদের বক্তব্য, বর্তমান সরকারের নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্প শুরুর পরে যে ভাবে সরকারি আধিকারিকেরা খুব সহজেই ভূমিহীন পরিবারগুলোর হাতে তাদের জমির পাট্টা তুলে দিচ্ছেন, তাতেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, কোনও ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে যে জমিতে বসবাস করছেন, চাষ করছেন, কিন্তু জমির পাট্টা পাচ্ছেন অন্য জন। আবার কোনও ব্যক্তি পাট্টা পেয়েছিলেন বেশ কিছু দিন আগে, কিন্তু সেই ব্যক্তি তা রেকর্ড করতে না পারায় জমির নতুন করে পাট্টা প্রদান করা হচ্ছে অন্য কারও নামে। মঞ্চের আহ্বায়ক ঝর্নাদেবী বলেন, “আদিবাসী বনবাসী ভূমিহীন পরিবারগুলোর জমির অধিকার বাস্তবায়িত করতে হলে শুধুমাত্র আইন করলেই হবে না। সরকারি আধিকারিকদের মানবিক হতে হবে। কোথায় কোথায় সরকারি খাস জমি পড়ে রয়েছে, তা দেখে সুষ্ঠু ও সঠিন বণ্টন করে ভূমিহীন পরিবারগুলোর হাতে তুলে দিতে হবে। আবার যেখানে সরকারি খাস জমি নেই, সেখানে বিক্রিতে ইচ্ছুক জমি মালিকের থেকে জমি কিনে তা বণ্টন করতে হবে ভূমিহীন পরিবারগুলোকে।” |
|
|
|
|
|