|
|
|
|
সার্কুলার রোড ছিল শাপমুক্তির প্রতীক্ষায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা
|
রাঁচি থেকে রায় ঘোষণার খবর তখনও এসে পৌঁছয়নি। কিন্তু পটনার ১০ নম্বর সার্কুলার রোডের বাড়িটি ঘিরে সকাল থেকেই যেন শ্মশানের নিস্তব্ধতা। এমনিতেই বাড়িতে লোক বলতে খুব একটা কেউ নেই। ছোট ছেলে তেজস্বীকে নিয়ে গৃহকর্তা লালু প্রসাদ গত কালই রাঁচি পৌঁছে গিয়েছেন। দলের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীরাও সেখানে। প্রতিদিনের স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিদিনকার জনসমাগমও এ দিন চোখে পড়েনি। ফলে বাড়ির চারপাশ যেন ঘিরে ধরেছিল অখণ্ড নিস্তব্ধতা। বড় ছেলে তেজ প্রতাপকে নিয়ে লালুপত্নী রাবড়ী দেবী সারাদিন প্রহর গুনেছেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা লালুপত্নীর সঙ্গী বলতে ছিল একরাশ উৎকণ্ঠা আর উদ্বেগ। কী জানি স্বামীর কী হয়?
এ দিন রায় ঘোষণার পরে লালু ফোনে প্রথম কথা বলেন স্ত্রী রাবড়ী দেবীর সঙ্গে। যাঁর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন জীবনের সব সুখ-দুঃখ, এই কঠিন সময়ে সেই জীবনসঙ্গীকেই সবার আগে মনে পড়ে আরজেডি প্রধানের। |
|
খাঁ খাঁ করছে আরজেডি-র সদর দফতর। সোমবার পটনায়। ছবি: পিটিআই। |
সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেছেন রাবড়ী দেবীর সঙ্গে দেখা করার জন্য। বাড়িতে ঢোকার অনুমতি মেলেনি। এর মধ্যেই এক বার বাড়ির বাইরে আসেন তেজ প্রতাপ। সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন, “বাবার সঙ্গে মায়ের কথা হয়েছে। আদালত থেকে জেলে যাওয়ার আগে বাবা আমার সঙ্গেও কথা বলেছেন। বাবার বার্তা মা এবং আমরা দুই ভাই বিহারের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেব। এটাই
আমাদের সঙ্কল্প।”
গত কাল লালু সপার্ষদ দানাপুরের গোশালার বাড়ি থেকে রাঁচির উদ্দেশে রওনা হন। ওই বাড়িটি পটনায় তাঁর নিজের বাড়ি হিসেবেই পরিচিত। সংস্কার হিসেবেই চূড়ান্ত রায় শোনার আগে তিনি নিজের বাড়ি থেকে যাত্রা করেন। সার্কুলার রোডে রাবড়ীর সরকারি আবাস থেকে নয়। গত কয়েক দিন ধরেই বাড়িতে যাগযজ্ঞ চলেছে। লালু প্রসাদ বিভিন্ন মন্দিরে পুজোও দেন। দু’মাস আগে ঘুরে এসেছিলেন মহারাষ্ট্রের সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির। স্নান করে এসেছেন প্রয়াগেও।
শুধু তাঁর পরিবারই নয়, প্রার্থনা করেছেন লালুর সমর্থকরা-অনুগামীরাও। আজও সকাল থেকে লালু প্রসাদের সংখ্যালঘু অনুগামী থেকে সব ধরনের কর্মী, সমর্থকরা গিয়েছেন ধর্মস্থানে। কেউ গিয়েছেন মসজিদে, কেউ আবার মন্দিরে। তবু শেষ রক্ষা হল না। রায়ের পরে আরজেডির দলীয় অফিস ছিল সুনসান। দলীয় অফিসের বাইরে যেখানে গাড়ির ভিড় লেগে থাকে সেখানে আজ অবাধ পার্কিং। ঘাঁটি আগলে বসেছিলেন দলের কয়েক জন সমর্থক এবং স্থানীয় কিছু নেতা। টিভিতে চোখ রেখে থমথমে মুখে বসেছিলেন তাঁরা। তাঁদের একজনের মন্তব্য, “রায় নেতাজির পক্ষে গেলে কত কিছু করার পরিকল্পনা ছিল।” উৎসবের জন্য আয়োজনে কোনও কমতি ছিল না। ছিল আবিরের বস্তা। গাড়ির মধ্যে মজুত করা ছিল বাজির প্যাকেটও। অভাব ছিল স্রেফ একটা স্ফুলিঙ্গের। |
|
|
|
|
|