চার দশক ধরে কোনও সমস্যা হয়নি। দু’বছর আগে কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পরেও পুজো হয়েছে নির্বিঘ্নে। কিন্তু এ বছর জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বেহালার একটি ক্লাবের সেই পুজোর অনুমতি আটকে দিয়েছে পুলিশ। শেষে পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছে ক্লাবটি।
পুজো আটকে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় রয়েছে কলকাতা পুলিশের একাংশেও। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, উৎসব-আনন্দের কথা মাথায় রেখে অনেক পুজোকেই কম-বেশি ছাড় দেওয়া হয়। প্রশাসনের শীর্ষ স্তরেরও তাতে অনুমতি রয়েছে। বিষয়টি মেনে নিয়ে লালবাজারের এক শীর্ষকর্তাও বলেছেন, “এ ক্ষেত্রে আমরা মানবিকতার সঙ্গেই বিচার করব।”
ক্লাবের সম্পাদক দেবযানী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পাড়ার একটি জমিতে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পুজো করছেন তাঁরা। ক্লাবের দাবি, জমিটি দীর্ঘ দিন ধরে মালিকানাহীন। তবে এ নিয়ে এত দিন কোনও প্রশ্ন তোলেনি পুলিশ। গত দু’বছর কলকাতা পুলিশের অধীন বেহালা থানা তাঁদের পুজোর অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু এ বার সেই বেহালা থানাই জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের জানিয়েছে, জমির মালিকানা বা মালিকের অনুমতিপত্র দিতে হবে। বিষয়টি স্বীকার করেছেন ডিসি (সাউথ-ওয়েস্ট) সুব্রত মিত্রও। তিনি বলেন, “পুজো করার জন্য সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা বা মালিকের অনুমতি লাগবে। ওই ক্লাব সেটি জমা দিলেই অনুমতি মিলবে।”
এ দিকে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটি, পুলিশ, দমকল-সহ প্রশাসনকে নিয়ে সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পুজো সাত-দশ দিনের ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়ার জন্য খুব কড়া হওয়ার দরকার নেই। পরিস্থিতি বুঝে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া যেতেই পারে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে বেহালা-ঠাকুরপুকুর কলকাতা পুলিশের আওতায় আসার পর থেকে সেই রকম মনোভাবই নেওয়া হয়েছিল। জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও এলাকার পরিস্থিতি ও বাসিন্দাদের আবেগের কথা মাথায় রেখে বেহালার ওই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
জমির মালিকানা নিয়ে যে প্রশ্ন রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই ক্লাব-কর্তৃপক্ষ। দেবযানীদেবীর দাবি, এলাকার এক ব্যক্তি নিজেকে জমির মালিক বলে দাবি করলেও তার কোনও প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি। দেবযানীদেবী বলেন, “ওই জমিটি দীর্ঘ দিন ধরে মালিকানাহীন। গত ৪০ বছর ধরে সরকারি নিয়ম মেনে আমরাই ওই জমিতে পুজো করে আসছি। তা হলে এ বার কেন জমি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে?” |