আধার কার্ড করতে গেলে আগে প্রয়োজন হচ্ছে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জী (ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার) অর্থাৎ এনপিআর-এর আবেদনপত্র। কিন্তু সেই আবেদনপত্র না পেয়ে ফাঁপরে পড়েছেন কলকাতা পুর এলাকার বহু বাসিন্দা।
কথা ছিল, পুরসভার বিভিন্ন বরো অফিস থেকে এই আবেদনপত্র বিলি করা হবে। কিন্তু অধিকাংশ বরোয় এই আবেদনপত্র মিলছে না। মুশকিল আসানের পথ খুঁজতে ৫০ হাজার আবেদনপত্রের বরাত দিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা কবে মিলবে,
জানা নেই তাঁদের। ফলে আবেদনপত্রের খোঁজে প্রতিদিনই ভিড় জমছে বরো অফিসগুলোয়। |
ফর্ম জমা দেওয়ার লাইন। আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের বরো অফিসে। ছবি: দেবাশিস রায়। |
আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে কলকাতা ছাড়াও পাঁচ জেলার আধার কার্ডের প্রক্রিয়া শেষ করার দিন ধার্য হয়েছে। এর পাশাপাশি চলছে এনপিআর-এর কাজ। এর মধ্যেই তৈরি হয়েছে এই সমস্যা। পুজোর আগে শেষ সপ্তাহে কি তা হলে বরো অফিসে গিয়ে মিলবে আবেদনপত্র? পুরসভার ডেপুটি কমিশনার আলোকোজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা এই আবেদনপত্র দেওয়ার কোনও সময়সীমা ঘোষণা করিনি। যাঁরা এনপিআর-এ নাম নথিভুক্তির জন্য আবেদন করেননি, তাঁদের কাছ থেকে জনগণনা কর্মীরা সেগুলি সংগ্রহ করে আবেদনপত্র পূরণ করে দেবেন।” তিনি বলেন, “বহু লোক পুরসভার বরো অফিসে বার বার গিয়ে এনপিআর-এর আবেদনপত্রের খোঁজ করছেন। এর দরকার নেই।”
সমস্যা সমাধানে নতুন করে ৫০ হাজার আবেদনপত্র চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্য জনগণনা দফতরে। জনগণনা-অধিকর্তা অরুণাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুর-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এখনই ওঁরা যেন ২০ হাজার আবেদনপত্র আমাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। আশা করছি, দু’-এক দিনের মধ্যেই তাঁঁরা আবেদনপত্র নিয়ে যাবেন।”
কলকাতায় আধার কার্ড করার কাজ কতটা এগিয়েছে? এক পুর-অফিসারের দাবি, “গত জানুয়ারি পর্যন্ত ৬৬ শতাংশ নাগরিকের আধার কার্ডের আবেদনপত্র পূরণ হয়ে গিয়েছে। তার পরে হয়েছে আরও অন্তত ২৫ শতাংশ।” অরুণাশিসবাবু অবশ্য বলেন, “২০১০-এ বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনগণনা-স্বেচ্ছাসেবীরা যে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন, তাতেই সিংহভাগ কাজ হয়েছে। এর পরে, ২০১২-র জুলাই থেকে আমরা প্রায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার আবেদনপত্র কলকাতা পুরসভায় পাঠিয়েছি।”
কিন্তু আবেদনকারীদের একটা বড় অংশ এখনও আধার কার্ড পাননি। এমন অনেকেই খোঁজ নিচ্ছেন পুরসভায়। জনগণনা-অধিকর্তাও স্বীকার করেছেন, “এ শহরে আধার কার্ড পেয়েছেন মাত্র ২২ শতাংশের মতো আবেদনকারী।”
কিন্তু বায়োমেট্রিক পরীক্ষার পরেও যাঁরা কার্ড পাচ্ছেন না, তাঁরা অনিশ্চয়তার হাত থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না। তাঁরা কী করবেন? জনগণনা-অধিকর্তা বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে ই-মেল dco.wbl.rgi@censusindia.gov.in করলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কার্ড কী অবস্থায় আছে, তা জানা যাবে।” একই সঙ্গে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি-র ওয়েবসাইটেও দেখা যাবে নির্দিষ্ট আবেদনের অবস্থা। কী ভাবে? জনগণনা-অধিকর্তা বলেন, “uidai.gov.in সাইটে রেসিডেন্ট স্ট্যাটাস-এ গিয়ে কোনও অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপের নমুনা দাখিল করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জেনে যাবেন তাঁর কার্ড কী অবস্থার রয়েছে।”
|