|
|
|
|
ঋতব্রতর সামনেই বর্ধিত সভায় সিদ্ধান্ত |
১৮ জন নেতাকে ছাঁটল এসএফআই
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সংগঠনের বর্ধিত সভা থেকে নজিরবিহীন ভাবে জেলা কমিটির ১৮ জন নেতাকে ছাঁটল এসএফআই। বছর খানেক আগে জেলা সম্মেলন থেকেই এঁরা সকলে জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। শনিবার মেদিনীপুরের কৃষক ভবনে সংগঠনের বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সভা থেকেই ১৮ জন নেতাকে সংগঠন থেকে ছেঁটে ফেলার কথা ঘোষণা করা হয়। বদলে নতুন ৮ জনকে জেলা কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
কেন এই সিদ্ধান্ত? জানা গিয়েছে, এর পিছনে রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এসএফআইয়ের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দাবি, সংগঠনের সভা এবং কর্মসূচিতে নিয়মিত আসা এবং আলোচনায় যোগদানের গুরুত্ব বোঝার ক্ষেত্রে কয়েক জন সদস্যের ঘাটতি ছিল। এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা বলেন, “এটা সাংগঠনিক বিষয়। এ নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই।”
যদিও বিতর্কে ছেদ পড়ছে না এখানেই। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর দাবি, সমস্তটাই হয়েছে পরিকল্পনা মতো। গত জেলা সম্মেলনের আগে-পরে যাঁরা সংগঠনের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, বেছে বেছে তাঁদেরই ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সিপিএম সূত্রের মতে, এ ক্ষেত্রে দীপক সরকারের দেখানো পথেই হেঁটেছেন সৌগত। ২০০৪ সালে সিপিএমের জেলা সম্মেলনে দীপক সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। ওই সম্মেলনে জেলা সম্পাদকের পদ নিয়ে দীপকবাবুর সঙ্গে তরুণ রায়ের ‘লড়াই’য়ে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তরুণবাবু সূর্যকান্ত মিশ্রের অনুগামী বলে পরিচিত। শেষমেশ, তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অনিল বসুর ‘হস্তক্ষেপে’ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জেলা সম্পাদকের পদে রয়ে যান দীপকবাবু।
২০১২ সালে এসএফআইয়ের জেলা সম্মেলনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন সৌগতও। যাঁদের জন্য সেই সময় তাঁকে অপদস্থ হতে হয়েছিল, বছর ঘুরতে না-ঘুরতে এ বার তাঁদেরই একঘরে করার কাজ শুরু করে দিলেন এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক। যে ১৮ জনকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অসিত লৌহ, তাপস ঘোষ, সুব্রত চক্রবর্তী, ঋদ্ধি মুখোপাধ্যায়, শেখ রাহুল প্রমুখ। প্রথম দু’জন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। অসিত আবার রাজ্য কমিটির সদস্য।
বর্ধিত সভায় টানা এক ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন ঋতব্রত। সেখানেও পরোক্ষে সংগঠনের জেলা নেতৃত্বকে তিনি খোঁচা দেন। বুঝিয়ে দেন, বাম-আমলে গড়বেতা-কেশপুরে যা হয়েছে, তা অনুচিত। ঋতব্রতর কথায়, “এ রকম কলেজ আছে, যেখানে ৫ হাজার পড়ুয়া পড়েন, আর এসএফআইয়ের সদস্যপদ ৬ হাজার। এটা স্বীকার করতে কোনও সমস্যা নেই। আমাদের রাজ্যের বহু জায়গায় এই সবাই এসএফআই হয়ে যাওয়ার বিপদ সংগঠনকে আক্রান্ত করেছে।” গত সম্মেলন থেকে ২০ জনের সম্পাদকমণ্ডলী এবং ৭৩ জনের জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। বর্ধিত সভার পর জেলা কমিটির সদস্য সংখ্যা কমে হল ৬৪। বর্ধিত সভার পর মেদিনীপুর শহর এসএফআই নেতৃত্বহীন হয়ে পড়ল। কারণ, অসিতই ছিলেন সংগঠনের শহর জোনাল সম্পাদক। সুব্রত শহর জোনাল সভাপতি। |
|
|
|
|
|