র‌্যান্টি এখন ইউনাইটেডের ম্যালরি

ইউনাইটেড স্পোর্টস-৩ (র‌্যান্টি, বিশ্বজিৎ, এরিক)
স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া-১ (ভিক্টোরিনো)
র‌্যান্টি মার্টিন্স কি ইউনাইটেড স্পোর্টসের জর্জ ম্যালরি? রবিবারের বৃষ্টিভেজা পড়ন্ত বিকেলে এটাই প্রশ্ন ময়দানে।
শুনে হাসছেন র‌্যান্টির ক্লাবেরই শীর্ষ কর্তা নবাব ভট্টাচার্য। তিন বার এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছিলেন ম্যালরি। ‘বারবার কীসের টানে এভারেস্টে যাও?’ জানতে চাইলে বলতেন, “চ্যালেঞ্জটা যে ওখানেই বন্ধু...!”
স্পোর্টিং ক্লুবের বিরুদ্ধে গোল করে এবং করিয়ে এ দিন র‌্যান্টিও যে ধরা দিলেন ম্যালরির মেজাজেই। সংবাদমাধ্যমের কেউ এক জন গত বারের সর্বোচ্চ গোলদাতার কাছে জানতে চেয়েছিল, এ বারও কি রোজ নোটবইয়ে গোলদাতার জায়গায় র‌্যান্টির নাম আগাম লিখেই ম্যাচ রিপোর্ট শুরু করতে হবে? জবাবে নাইজিরীয় গোলমেশিন বললেন, “সবে তো শুরু। এখনও যে আমরা পুরোপুরি ফিট নই।” মধ্যবিত্তের সংসারের মতো নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো আর্থিক অবস্থা। এখনও টাকা পাননি। নেই স্পনসর।
এই লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা ঠিক কী? র‌্যান্টি যেন মুহূর্তেই জর্জ ম্যালরি। বললেন, “চ্যালেঞ্জটা যে ওই সবুজ মাঠেই! এটাই তো টিমমেটদের রোজ বলছি।” ম্যাচের সেরা র‌্যান্টিকে তখন একশো টাকার নোট হাতে গুঁজে দিচ্ছেন ইউনাইটেড কর্তা আলোকেশ। কল্যাণী স্টেডিয়ামের বাইরে শরতের বিকেল মুখরিত র‌্যান্টি-বন্দনায়। বাজনার সঙ্গে নাইজিরীয় ফুটবলারের ছবি নিয়ে দেদার নাচানাচি। যা দেখে ইউনাইটেড কোচ এলকো সাতোরি-ও বলছেন, “দল বেঁধে মাঠে আসা এই সমর্থকরাই তো আমাদের অনুপ্রেরণা।”
তিন নায়ক

এরিক, বিশ্বজিৎ এবং র‌্যান্টি। রবিবার কল্যাণীতে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ইউনাইটেডের ডাচ কোচ জানতেন যে, স্পোর্টিংয়ের তরুণ ফুটবলাররা শুরু থেকেই দৌড়বে। আর যেহেতু অ্যাওয়ে ম্যাচ, তাই ৪-৪-১-১ ছকে মাঠে নামলেও মাঝমাঠে ভিড় বাড়িয়ে তাঁদের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন চলে যাবেন ৪-৫-১ ছকে। দুই প্রান্তিক হাফ ডসন ফার্নান্ডেজ এবং জো পেরিরা জটলা বাড়ানোর জন্য ঢুকে আসবেন ভিতরের দিকে। সমস্যা বাড়বে এলকোর দুই সাইডব্যাক দীপক এবং ধনচন্দ্রের। ডাচ কোচ তাই পালটা চাল দিয়েছিলেন ৪-৩-১-২ ছকে দল নামিয়ে। আক্রমণে র‌্যান্টি-বিনীথ। তাঁদের একটু পিছন থেকে ‘ডায়মন্ড’ ছকে সাপ্লাই লাইন সচল রাখলেন লাইবেরিয়ার এরিক।
গত বার আই লিগে এই মাঠেই র‌্যান্টির সঙ্গে ইউনাইটেডের শেষ ম্যাচে যিনি মারপিট করে নজর কেড়েছিলেন এ দিনের ম্যান অব দ্য ম্যাচের। এখন তাঁরা আবার হরিহর আত্মা। প্রথম তিরিশ মিনিটেই র‌্যান্টির গোল। কিন্তু ফিটনেসের অভাবে ভারী মাঠে এর পরেই ছন্দ হারানো শুরু ইউনাইটেডের। দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরু হতেই দীপকদের রক্ষণে ভুলভ্রান্তির সুযোগে ১-১ ভিক্টোরিনোর। গোলের সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন গোয়ার দলটির বিদেশি স্ট্রাইকার বইমাও।
মাঝমাঠে বল ধরে খেলার জন্য তাই হাতে চোট পাওয়া বিনীথের জায়গায় সৌভিক এবং লালকমলের জায়গায় জয়ন্তকে নামিয়ে এলকো চলে গেলেন ৪-৩-৩ ছকে। শেষ তিন মিনিটে বাজিমাত সেই কৌশলেই। র‌্যান্টির গোলে শট গোলকিপার রবিকুমারের হাত থেকে বেরিয়ে আসতেই আই লিগে জীবনের প্রথম গোল করলেন সন্দীপ নন্দীর পাড়ার ছেলে বিশ্বজিৎ। আর চার মিনিট পরেই একক ক্যারিশ্মায় গোল এরিকের।
একুশ দিনের অনুশীলনে শুরুতেই জোড়া জয়। বইমাদের কোচ ব্রুজন বলে গেলেন, “রক্ষণের ভুলে হারলেও এই ফ্যাক্টরটা সম্ভ্রম জাগাবেই।” ইউনাইটেড শিবিরের ভিতরের খবর, চতুর্থ বিদেশি চলে আসবেন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই। এলকো-ও বলছেন, “কয়েকটা ম্যাচ গেলেই দাঁড়িয়ে যাবে দলটা।”

ইউনাইটেড স্পোর্টস: সংগ্রাম, দীপক, অনুপম, বেলো, ধনচন্দ্র, রফিক (বিশ্বজিৎ), আসিফ, লালকমল (জয়ন্ত), এরিক, বিনীথ (সৌভিক), র‌্যান্টি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.