সিকিম
পাহাড়ে চড়ার প্রশিক্ষণে মৃত্যু যুবকের
ক্ষ্য ছিল এভারেস্ট জয়। সেই ইচ্ছে আর পূরণ হল না সৈকত কুণ্ডুর। লক্ষ্যপূরণের জন্য পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় মৃত্যু হল হাওড়ার আন্দুলের বাসিন্দা, ছাব্বিশ বছরের ওই যুবকের।
পশ্চিম সিকিমের জোংরি এলাকায় ওই প্রশিক্ষণ চলছিল দার্জিলিঙের হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের (এইচএমআই) অধীনে। সৈকতের মামাতো দাদা দেবরাজ পাল বলেন, “রবিবার সকালে ইনস্টিটিউট থেকে ফোন করে আমাদের জানানো হয়, সৈকতের শরীর খারাপ হয়েছিল উপরে উঠে। ওকে নীচে নামানো হচ্ছিল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সময় বেশি লাগছিল নামাতে। পথেই মৃত্যু হয় ভাইয়ের।” তিনি জানালেন, কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন সৈকতের বাবা। এ বার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সৈকতের মা কস্তুরীদেবী। সিকিমের ইয়কসামে গত ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ওই প্রশিক্ষণ শিবির শুরু হয়েছে। ২৮ দিন ধরে প্রশিক্ষণ চলার কথা। ইয়কসাম থেকে বাখিম হয়ে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের জোংরি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে প্রায় ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা ‘বেসক্যাম্প’ চৌরিখাংয়ে হয় মূল প্রশিক্ষণ। এইচএমআইয়ের আধিকারিক অশ্বিনী কুমার জানান, সৈকত বেসক্যাম্পে অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে ইয়াকসমে নামিয়ে আনা হচ্ছিল। পথেই তিনি মারা যান।
এইচএমআইয়ে ‘বেসিক কোর্স’ শেষ করার পরে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে ‘অ্যাডভ্যান্স কোর্স’ করার সুযোগ পান পাহাড়ে চড়ায় আগ্রহীরা। সৈকতও ‘বেসিক কোর্স’ পাশ করার পরেই এই সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর দেহ আনতে কলকাতা থেকে একটি দল ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছে দার্জিলিঙের উদ্দেশে। ওই দলের অন্যতম সদস্য অসীম মণ্ডলের আক্ষেপ, “২০১৮ সালে এভারেস্ট অভিযানের পরিকল্পনা নিচ্ছিল সৈকত। স্পনসর খুঁজছিল। নানা ধরনের অভিযানে অংশ নিয়ে অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছিল। সে জন্যই জরুরি ছিল পর্বতারোহণের এই অ্যাডভান্স কোর্স। সেখানে গিয়ে যে কী ভাবে এমনটা হয়ে গেল!”
অসীমবাবুর হাত ধরেই অভিযানের জগতে পা রাখেন সৈকত। তিনি রবিবার বলেন, “বিভিন্ন অভিযানে ওকে কাছ থেকে দেখেছি।
অভিযান সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই মেতে থাকত। করে ফেলেছিল ‘স্কুবা ডাইভিং’-এর কোর্সও। নিজের উদ্যোগে ‘নেচার এক্সপ্লোরার অর্গানাইজেশন’ নামে সংগঠন তৈরি করেছিল।” তিনি জানান, সৈকত শারীরিক ভাবে সুস্থ তো ছিলেনই, উচ্চতাজনিত অভিজ্ঞতাও তাঁর এই প্রথম নয়। সে কারণেই এইচএমআই সূত্রে অসুস্থতার কারণে মৃত্যু বলা হলেও বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না অসীমবাবু।
বিশিষ্ট পর্বতারোহী গৌতম দত্ত অবশ্য জানাচ্ছেন, প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক হলেও খুব অস্বাভাবিক নয়। তাঁর মতে, অনেক সময়ই সামান্য অসুস্থতার কথা গোপন করে যান শিক্ষার্থীরা। পরে আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারায় সেই অসুস্থতার কারণেই ‘পালমোনারি ইডিমায়’ (ফুসফুসে জল জমে যাওয়া) আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাঁরা। অভিজ্ঞ পর্বতারোহীদের ক্ষেত্রেও অনেক সময়ই এমন ঘটে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.