বোমা নিষ্ক্রিয় করতে বিশেষ কম্বল থানায়
হেঁটে পৌঁছতে লাগে সাকুল্যে দশ মিনিট। বোমা ফাটার খবর পেয়ে সেখানে তাঁরা পৌঁছেছিলেন আধঘণ্টা পরে। কলকাতা পুলিশের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের ওই কর্মীদের জন্য চাঁদনি চকে বোমা ঘিরে রেখে ভিড় সামলাতে হয়েছিল বৌবাজার থানার পুলিশকর্মীদের।
অগস্টের ঘটনা। লালবাজার থেকে কয়েক মিনিটের পথ আসতে দেরি হওয়া নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের কর্তাদের বক্তব্য ছিল, ঘটনাস্থল কাছে হলেও, পোশাক পরে সাজসরঞ্জাম নিয়ে তাঁদের সেখানে পৌঁছতে দেরি হবেই। তার মধ্যে যাতে কোনও বিপদ না ঘটে, সে জন্য লালবাজার থেকে দূরের থানাগুলিতে রাখা হচ্ছে বোমা নিরোধক কম্বল বা ‘বম্ব ব্ল্যাঙ্কেট। বম্ব স্কোয়াড আসার আগে এলাকার পুলিশকর্মীরা ওই বিশেষ ধরনের কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখবেন বোমা বা বিস্ফোরক।
লালবাজার সূত্রের খবর, আপাতত সংযুক্ত এলাকার ১০টি থানার হাতে ওই ‘বম্ব ব্ল্যাঙ্কেট’ দেওয়া হচ্ছে। পরে তা অন্য থানাকেও দেওয়া হবে।
থানার পুলিশ কর্মীদের ওই বোমা নিরোধক কম্বল ব্যবহার করে বোমা নিষ্ক্রিয় করার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে কয়েকটি থানায় বম্ব ব্ল্যাঙ্কেট দেওয়া হবে।”
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের নিজস্ব বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড এবং বম্ব ডিটেকশন স্কোয়াড রয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন মেটিয়াবুরুজ, নাদিয়াল, হরিদেবপুর, ঠাকুরপুকুরের মতো ১০টি থানাকে ওই বোমা নিরোধক কম্বল দেওয়া হচ্ছে?
পুলিশ সূত্রের খবর, যে সব থানার দূরত্ব লালবাজার থেকে বেশি এবং যেখানে বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড এবং বম্ব ডিটেকশন স্কোয়াডের পৌঁছতে অনেক সময় লাগে, সেই সব থানাকেই বেছে বেছে ওই বোমা নিরোধক কম্বল দেওয়া হয়েছে। পুজোর আগেই ওই সব থানায় পৌছে যাবে বলে লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন।
কেন প্রয়োজন ‘বম্ব ব্ল্যাঙ্কেট’?
পুলিশ জানিয়েছে, ঝিটকার জঙ্গল কিংবা আলিপুরদুয়ারে বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে পুলিশকর্মীদের মৃত্যুর পর সন্দেহজনক বিস্ফোরক বা বস্তুতে হাত দেওয়া নিষেধ স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীদের। এ ছাড়া অনেক জায়গাতেই বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডের পক্ষে পৌঁছনো সম্ভব না। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই রকম পরিস্থিতিতে বোমা বা বিস্ফোরক পাওয়া গেলে তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে ওই বম্ব ব্ল্যাঙ্কেট। ফলে বিস্ফোরণের পর ছিটকে বের হতে পারবে না বোমার স্প্লিন্টার। উত্তাপও রোধ করবে।
বোমা নিরোধক কম্বল বা ‘বম্ব ব্ল্যাঙ্কেট’ কী?
বোমা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওই বোমা নিরোধক কম্বলের ওজন ২০ কেজির একটু বেশি। ওই কম্বলের ভিতরে থাকে চার থেকে পাঁচটি নাইলনের ফ্রেম ও একটি রিং। রিং-এর ভিতরে বুলেট প্রুফ জ্যাকেটের মতো গুলি নিরোধকের মতো কেভলার থাকে। ওই কেভলার এবং ফাইবার উপরের স্তরে থাকে ওই নাইলনের আস্তরণ। বোমা বিশেজ্ঞদের একাংশদের দাবি, অতি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরকের ক্ষেত্রে ওই বোমা নিরোধক কম্বল কাজে না এলে বাকি ক্ষেত্রে এটা খুবই কার্যকর সারা বিশ্বে।
রাজ্য পুলিশও ওই বোমা নিরোধক কম্বল ব্যবহার করতে চাইছে। টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। মূলত ভিভিআইপি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ওই কম্বল ব্যবহার করা হবে মহাকরণ সূত্রের খবর।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.