ফের পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ছোটনের বাবা পুরীর টিকিট কেটেছেন। বারো বছরের ছেলেটি এই নিয়ে চার বার সমুদ্র দেখতে যাচ্ছে। সমুদ্র নিয়ে তার একটাই কৌতূহল, অত বিশাল সাগরের উপরে তো শুধু ঢেউ আর ঢেউ। কিন্তু নীচে কী? অনেক চেষ্টা করেও বাবা-মায়ের কাছ থেকে মনের মতো উত্তর পায়নি সে।
ছোটনের মতো অজস্র মনের কৌতূহল মেটাতে পূর্ব বড়িশার শীতলাতলা কিশোর সঙ্ঘ মণ্ডপ সাজাচ্ছে সাগরতলের অনুকরণে। দর্শনার্থীরা প্রবাল স্তূপ, সামুদ্রিক প্রাণী, গাছ, মাছ, দেখতে দেখতে পৌঁছে যাবেন সমুদ্রের তলদেশে। আর সেখানেই দেখা মিলবে সাবেক সাজের দেবীমূর্তির।
৮০ বছরের পুরনো শোভাবাজার বড়তলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব সমিতির মণ্ডপ হচ্ছে শিব নুড়ির অনুকরণে। গর্ভগৃহে পাথরের মূর্তির আদলে তৈরি প্রতিমা। সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছিল কেদারনাথ। বার বার প্রাকৃতিক রোষের শিকার হচ্ছে মানুষ। একটু সতর্ক হলেই এড়ানো যায় এই সব বিপদ। মণ্ডপে মডেলের সাহায্যে দেখানো হবে কী ভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
ঠাকুরপুকুর ক্লাবের মণ্ডপ সাজছে ব্যাট, বল, উইকেট, বেল দিয়ে। মণ্ডপে থাকছে ক্রিকেটের পিচও। এই পুজোর এ বারের থিম ‘পুজোর মজা সকাল সাঁঝে, দুগ্গা এলো বাইশ গজে’।
ছোটনের মতো অনেকে যাতে বাবা-মায়ের কাছে মণ্ডপে নিয়ে আসার জন্য বায়না ধরে, সে জন্য ছোটদের খেলনা দিয়ে ‘খেলাঘর’ বানাচ্ছে চৌবাগা রোডের হোসেনপুর কিশোর সঙ্ঘ। মণ্ডপে ঢোকার মুখে দেখা যাবে একটি বড় চৌবাচ্চায় বিভিন্ন খেলনা নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে।
সোনারপুর রিক্রিয়েশন ক্লাবের পুজোয় দুর্গা অস্ত্রহীন। অসুর দেবীর ক্ষমাপ্রার্থী। সিংহ শান্ত। মণ্ডপ অরুণাচল প্রদেশের বৌদ্ধ গুম্ফার অনুকরণে। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা পুজোর দিনগুলিতে এখানে উপাসনা করবেন।
ঢাকুরিয়ার বাবুবাগানের মণ্ডপসজ্জায় শিশু সাহিত্যিক যোগীন্দ্রনাথ সরকারের লেখা বিভিন্ন বিষয়ের প্রতিলিপি। ব্যবহার করা হচ্ছে শুকনো ফল, লতা, মাশরুম, পাটকাঠি। এই পুজো ৫২ বছরে পা দিল। ছাপা কাপড়ের মোড়কে সাজছে বেহালা ২৯ পল্লির মণ্ডপ। নাটমন্দিরের অনুকরণে মণ্ডপ। ভিআইপি রোড এবং কৃষ্ণপুর মেন রোড সংলগ্ন দক্ষিণ রবীন্দ্রপল্লি সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির মণ্ডপের প্রবেশপথে থাকছে ভোরের সূর্যের প্রতিলিপি। ছোট, বড়, মাঝারি মাপের অজস্র সূর্যের মডেল দিয়েই সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ। চালচিত্র-সহ সাবেক সাজের প্রতিমা। এই পুজোর থিম ‘নতুন সূর্য’। |