এখন আর ‘এসেছে শরত্‌ হিমের পরশ’ বুঝি না। শেফালির গন্ধে নয়, কাশফুলে নয়, পাতাজোড়া জুতোর বিজ্ঞাপনে বুঝি পুজো আসছে। আমলকী বনের বুক দুরুদুরু করে কিনা জানি না, আমাদের অনেকের বুক দুরুদুরু করে। চাঁদার ভয়ে, ভিড়ের ভয়ে।
ভোঁদারও বুক দুরুদুরু করত পুজোর আগে থেকে। বলত, এ বারও ওরা মারবে না তো? মার তো খেয়েছিল কয়েক বার, ওর সামনের একটা দাঁত ছিল না। এমনিতেই কথায় একটু জড়তা ছিল, যুক্তাক্ষর উচ্চারণ করতে পারত না। তার উপর আবার সামনের একটা দাঁত নেই। ও দুর্গাপুজোর ভিড়ে নিজস্ব চোঙা ফুঁকে বলেছিল, ‘ছমনা পাত্‌তো, হারিয়ে গেছো, তোমার কাকু মাছভাতের দোকানে অপেক্ষা করছে।’ মানে, কোনও শ্রমণা পাত্রর উদ্দেশ্যে চোঙা ফোঁকা হচ্ছে। মাছভাতের দোকান মানে মার্ক্সবাদের দোকান। ‘চিরায়ত মার্ক্সবাদী সাহিত্যের স্টল’। বলুন তো, মার খাবে না কেন?
আসলে, ও ভলান্টিয়ার হতে চাইত। বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোত্‌সব কমিটি ভোঁদার মতো ছেলেকে কেন ভলান্টিয়ার করবে? কত কাতর অনুরোধ করেছে ভোঁদা, এ বারটা আমাকে ভলিন্টিরি করুন, একদম ঠিকঠাক কাজ করব। শক্ত করে দড়ি ধরব। একটা ব্যাটাছেলেকেও লেডিজ লাইনে ভিড়তে দেব না, মা কালীর দিব্বি। কিন্তু যতই কাকুতি-মিনতি করুক, ভোঁদাকে কিছুতেই এই সব গুরুদায়িত্ব দেওয়া হত না। আমাকেও বলেছে ভোঁদা তোর পিছেমোছাই তো বাব্বাজারের হোম্মাচোম্মা (হোমরাচোমরা)। বলেটলে মাইরি এক বারের জন্য ভলিন্টিরি করে দে না। মাইরি, ঝাম্মুড়ি খাওয়াব।
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।
সব কাতর অনুরোধ বিফলে যেত। এর পর ও নিজে নিজেই ভলান্টিয়ার হয়ে যেত। কারও এন.সি.সি-র গোবদা বুট জোগাড় করেছিল, খাকি হাফপ্যান্টে সাদা ফুলশার্ট গুঁজে, হাতে ছোট একটা লাঠি এবং মুখে একটা পিঁপ-পিঁপ নিয়ে দুর্গোত্‌সব কমিটির খাস তালুকের বাইরে গিয়ে স্বনিযুক্ত ভলান্টিয়ারগিরি করত। আস্তে আস্তে হেঁটে যান... হুটোপটা করবেন না... লেডিজ লেডিজের লাইনে, জেন্‌স্‌ জেন্‌স্‌-এর লাইনে... অ্যাই কী হচ্ছে, ছিগ্‌গেট ফোঁকা হচ্ছে, ধূমপান করিবেন না। হাত ধরাধরি করে হাঁটা ছেলেমেয়েদের বলত, অ্যাই, কী হচ্ছে, ভদ্দ ভাবে হাঁটো, পূজাঙ্গন পবিত্তো স্থান...।
একটু ক্ষমতার স্বাদ পেতে চাইত ভোঁদা, একটু হম্বিতম্বি করার স্বাদ। ভোঁদা, ভোঁদারা, অন্যের হম্বিতম্বি দেখেই গেছে শুধু। এই উত্‌সব মরশুমে হম্বিতম্বির সামান্য প্রসাদ পেতে চাইত ভোঁদা।
ভোঁদা আমাকে কাতর অনুরোধ করেছিল আমাকে ভলিন্টিরি দিতে হবে না, শুধু তোর পিছেমোছাইকে বলে একটা ব্যাজ ম্যানেজ করে দে মাইরি...।
সেটাও পারিনি। তবু ভলান্টিয়ারগিরি করত। আরও নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে। বিকেল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত খাটত। কিন্তু লুচি আলুরদম লাড্ডুর বাক্সটা পেত না ওর এই ভলান্টিয়ার হওয়াটা বেআইনি ছিল বলে। অবশেষে ও একটা ব্যাজ জোগাড় করতে পেরেছিল। কোনও পুরনো এক বছরের কোনও এক বৈধ ভলান্টিয়ারের বৈধ ব্যাজ। ভিক্ষা না চুরি, কী করে জোগাড় হল জানি না, তবে জামায় ব্যাজের অহংকার লাগানো ছিল সেফ্টিপিনে। কিন্তু অবৈধ ভলান্টিয়ারের জামায় বৈধ ব্যাজ লাগানো আরও বেশি অপরাধ। ও কেন মার খাবে না বলুন...
ভলিন্টিরির পরিবর্তে এর পর নিরুদ্দেশ ঘোষণা শুরু করেছিল। হাতে চানাচুরওয়ালাদের চোঙা। হারিয়ে যাওয়া লোকদের খুঁজে দিত। তবে সন্ধানস্থল মাছভাতের দোকান না বলে বলত বটা-র চপের দোকান। সহজ উচ্চারণ, কোনও যুক্তাক্ষর ছিল না। বটার সম্মতিও ছিল। ওর তেলেভাজার দোকানটার বিজ্ঞাপনও হত। কত জন হারানো লোককে খুঁজে দিয়েছিল জানি না, তবে ভোঁদা নিজে হারিয়ে গিয়েছিল।
ভোঁদার ওই ভলিন্টিরি-কামনার পিছনে যে একটু ক্ষমতাবাসনা আছে, সেটা বুঝেছিল কোনও এক ট্রাফিক পুলিশ। চিত্‌পুর ব্রিজের পাশে শুরু হয়েছিল ওর নব ভলিন্টিরি। লরি, গাড়ি এ সব থামাত। ওকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল কোনটা ওভারলোডেড, কোন লরি বে-টাইমে যাচ্ছে। ভোঁদা হাঁকত, এই শালা শুয়োরের বাচ্চা বেআইনি লরি, থপ্‌, থপ্... (স্টপ, স্টপ)। ভোঁদা তোলা আদায় করত। পুলিশ ওকে ক্ষমতা দান করেছিল।
ভোঁদাকে কোনও এক লরি পিষে দিয়েছিল। বহু কাল হল।
ভোঁদাকে দেখলাম, বাজারে। চাঁদা আদায় করতে বেরিয়েছে এক দল। ওদের মধ্যে একটা ন্যাংলাপ্যাংলা। এক জন সবজি-বিক্রেতার কাছে চারশো টাকা দাবি করছে, সবাই উচ্চনাদে কথা বলছে। ন্যাংলাপ্যাংলাটা হাতে একটা ঝিঙে নিয়ে বলল, টাকা না দিলে ধিঙেটা পেতোনে চলে যাবে একদম... এক জন বলল এই, তুই থাম।

• লজেন্সের প্যান্ডেলে গেলেন, ভলান্টিয়ারদের কথা না শুনে খানদশেক ছিঁড়ে চিবিয়ে নিলেন।
মুখে আগুন-জ্বলুনি শুরু হতে বুঝলেন, থিমটা আসলে ‘টফি’ নয়, ‘খতরনাক পিঁপড়ে’!
• পুজোর জন্য তেড়ে জিম করলেন। ইনস্ট্রাক্টর দশটা ডন বললে
আপনি একশোটা দেন। বোধ হয় বাড়াবাড়ি করলে শরীরের মাথা
গুলিয়ে যায়, ষষ্ঠীতে দেখলেন ডান হাতটা হয়ে উঠেছে সানি দেওল,
বাঁ হাতটা থেকে গেছে সোমালিয়া।
• পাড়ায় ‘জ্যান্ত দুর্গা’ থিম, সব লাইভ হবে। অডিশনে গিয়ে
তালি কুড়োলেন, তার পর দেখলেন মোষের রোলে চান্স পেয়েছেন।
দুর্গার তলায় সিংহের তলায় অসুরের তলায় আপনি,
জিভ বের করে পাঁচ দিন টানা।

• এহপ্তায় তাইল্যান্ড ওপেন খেলছেন নতুন এক জন পার্টনার নিয়ে, জানালেন লিয়েন্ডার পেজ। ২৩ বছরের টেনিস-জীবনে তাঁর পার্টনার-সংখ্যা এই নিয়ে দাঁড়াল ৯৫! চলতি ধারণা: ডাব্ল্স খেলতে গেলে সবচেয়ে যা দরকার, তা হল বোঝাপড়া। দিনের পর দিন দুটি মানুষ একসঙ্গে খেলতে খেলতে এমন তালমিল গড়ে উঠবে, এ মারার আগেই ও জানবে ব্যাকহ্যান্ড ভলি হবে, ও চোখ কুঁচকোলেই এ বুঝবে কনফিডেন্সে স্বল্প ক্র্যাক ধরেছে। সেখানে কিনা লিয়েন্ডার পালটে চলেছেন তো চলেইছেন তাঁর পার্টনার, আর জিতেই চলেছেন ট্রফি। যা ক্ষয় ধরায় এই ধারণায়: দুজন মিলে স্বর্গ-খেলনা গড়তে গেলে দরকার অনেক দিনের দুজন হওয়া, বহু দিন ধরে দুজনত্ব বিতানো। উঁহু, কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে বরং দিনযাপনের কোয়ান্টিটিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে, যখন মন যাকে চায় তার সঙ্গে খেলা শুরু করুন। লিজ টেলর যখন আজ একে কাল ওকে বিয়ে করতেন, বহু লোক বলত, মেয়েটা ভালবাসার মানে বোঝে না। অথচ তিনিই হয়তো প্রেমের মানে সেরা বুঝেছিলেন, ভালবাসা ফুরনো মাত্র সম্পর্ক ভেঙে দিয়েছেন, অভ্যাসের চাকা-গড়গড়’কে গড় করে নিরর্থক ডাব্ল্স-এ সেঁটে থাকেননি। লিয়েন্ডার থেকেও নিন সেই শিক্ষা: সাফল্যের শর্ত সঙ্গী-আনুগত্য নয়, তা হল: নিজের ইচ্ছেকে চূড়ান্ত মর্যাদা দেওয়ার প্রতিজ্ঞা, অন্যের ধারণাকে পাত্তা না দেওয়ার সাহস।

• ইংল্যান্ডে দুজন নাগরিককে কোর্ট ৩০০ পাউন্ড ফাইন করলেন। অপরাধ: রাস্তায় থুতু ফেলা। অ্যাদ্দিন থুতু ফেললে আশি পাউন্ড স্পট ফাইন ধার্য ছিল, এ দুজন তা দিতে অস্বীকার করায় স্থানীয় কাউন্সিল মামলা কোর্টে পাঠান, এই প্রথম বার। বিচারক রায় দিয়েছেন: এ অতি অভদ্র, ‘অ্যান্টি-সোশাল’ কাজ। তাই ডবল ফাইন, সঙ্গে এটা-ওটা নিয়ে তিনশো পাউন্ডের রসিদ হাতে। এ দেশে হলে জনতা গোড়ায় হ্যা-হ্যা, পরে বিস্ময়-অবিশ্বাসের ‘যাঃ!’, তারও পর রেগে কোর্ট ভাঙচুর করে জজকেই শূলে চড়াত, কারণ দেশের প্রতিটি ইঞ্চিতে থুতু ফেলা ভারতীয়মাত্রেরই মৌলিক অধিকার, গুটখার থুকে সে হাওড়া ব্রিজের হাল এমন করে ছাড়ে যে ফাইবার গ্লাসের পেন্টুল পরাতে হয়। আইন নিয়ে তার মাথাব্যথাই নেই, এক যদি না পুলিশে ধরে। টুকটাক ফাইন হেথাও চালু, মেট্রো রেল, কলকাতা পুরসভা রোজগারও করছে। এখন সায়েবদের দেখে সুপ্রিম কোর্ট কড়া শাস্তি ও চড়া ফাইন লাগু করলে, অন্তত বিলিয়নাধিক থুতুনিষ্ঠ ভারতবাসীর কাছ থেকে যে পরিমাণ জরিমানা আদায় হবে, ওবামার কাছে আর হাত পাততে হবে না, টাকার দর চোঁওও উঠবে, আর্থিক ঘাটতি, সেটা কী বস্তু, ঘোয়াক, থুঃ!
১.৩
সারা বিশ্বে প্রতি বছর
যত বিলিয়ন টন
খাবার নষ্ট হচ্ছে
৫০০০০০
ইউ এস ওপেন ডাব্ল্স-এ
চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় লিয়েন্ডার পেজ-কে
যত টাকা দেবে বলে ঘোষণা
করল রাজ্য সরকার
১৪৭০
ওসামা বিন লাদেন সংক্রান্ত
সব তথ্য গোপন রাখতে গোয়েন্দা
সংস্থা সিআইএ-কে মার্কিন সরকার
যত কোটি ডলার দিয়েছে বলে
জানালেন এডওয়ার্ড স্নোডেন
৯৪.৬৫
ত্রিপুরায় সাক্ষরতার হার
যত শতাংশ। সারা দেশে সর্বোচ্চ। কেরলে ৯৩.৯১%,
মিজোরামে ৯১.৫৮%
৫০০০০

যত মার্কিন ডলার পুরস্কার পেলেন এ বছরের
‘মিস আমেরিকা’ খেতাবজয়ী নিনা দাভুলুরি
১৬৫০
যত লক্ষ পাউন্ড
সম্পত্তির মালিক
ফুটবলার ডেভিড বেকহ্যাম

২২৫৬০০০
কলকাতা শহরের মোট যত জন মানুষ বস্তিতে থাকেন। ১৪৪টি ওয়ার্ডে
মোট বস্তি আছে ৩৩৩৪টি

৪৪১১
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যত মিটার উঁচু
চিনের দাওচেং ইয়াডিং বিমানবন্দর
সদ্য চালু হল। এটি বিশ্বের
উচ্চতম অসামরিক বিমানবন্দর

২০২৫৮৬
ডাচ সংস্থা ‘মার্স ওয়ান’-এর
উদ্যোগে মঙ্গলগ্রহে যেতে
১৪০টি দেশ থেকে মোট
যতগুলো দরখাস্ত জমা পড়ল। তালিকায় আছেন ২০০০০ ভারতীয়ও


সী


রা
য়
মায়াবী জ্যোত্‌স্না আলো দেয় উঁকিঝুঁকি।
তিথি মেনে রেগুলার দিয়ে যায় টুকি।
বলেছেন বিজ্ঞানী, আমরা আগেই জানি,
ওই চাঁদ বুড়ি নয়, আসলে সে খুকি!
পিলে-চমকানো রাত্রি-জাগানো প্রাণহরা ডেসিবেলে
বীভত্‌সতার সেরা আনন্দ শব্দবাজিতে মেলে
ফেটে গেলে যাক কানের পরদা
সাহস দিচ্ছে মেজদা বড়দা
সকলেই চেনে আমরা মায়ের চির-দুরন্ত ছেলে!
লেটারিং বেটারিং
এ আমার এ তোমার পাপ




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.