নিম্নচাপের ভ্রূকুটি কুমোরটুলি
থেকে পুজোর বাজারে
পুজোর আগে ফের দুঃসংবাদ! আবহাওয়া দফতর বলছে, বৃহস্পতিবার বঙ্গোপসাগরে যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল, শুক্রবার তা আরও শক্তিশালী হয়েছে। শনিবার আবহবিদেরা জানান, ঘূর্ণাবর্তটি শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে চলেছে। যার ফলে আগামী কাল, সোমবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চলবে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। এর ফলে পুজো মণ্ডপের প্রস্ততি থেকে কেনাকাটা, সর্বত্রই চিন্তার মেঘ ঘনিয়েছে।
ঘটনাচক্রে, গত কয়েক বছরে পুজোর আগে অল্পবিস্তর বৃষ্টি হলেও এ বার অগস্টের শুরু থেকেই বঙ্গোপসাগরে একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত-নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। সেপ্টেম্বরেও তা পিছু ছাড়েনি। এ দিনও দক্ষিণবঙ্গে সকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি নেমেছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেল থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় ২১.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আবহবিদদের এ বার অবাক করেছে বর্ষার শেষ লগ্নে বৃষ্টির এমন তীব্রতা। আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্তের জেরে উল্লম্ব মেঘ তৈরি হচ্ছে। তা ভেঙে পড়ছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশের উপরে। যার জেরেই বৃষ্টির সঙ্গে হাজির হচ্ছে ঝোড়ো হাওয়া, বজ্রপাত।
সাধারণত, কালবৈশাখীর ক্ষেত্রে এমন উল্লম্ব ও বজ্রগর্ভ মেঘ দেখা গেলেও বর্ষায় তা কিছুটা বিরল। তা হলে এ বার এমন হচ্ছে কেন? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানী গণেশকুমার দাসের ব্যাখ্যা, উপকূলীয় এলাকায় জলীয় বাষ্প রয়েছে। বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরে রয়েছে ঠান্ডা হাওয়াও। এর ফলে উল্লম্ব মেঘপুঞ্জ তৈরি হচ্ছে। আর সেই মেঘ তৈরির উপরে প্রভাব ফেলছে সাগরের শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ। আবহাওয়া দফতর সূত্রের দাবি, আরও দিন দুয়েক এই উল্লম্ব মেঘই ব্যাঘাত ঘটাতে পারে পুজো প্রস্ততিতে।
একই কথা বলছেন শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তারাও। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির জেরে অনেক জায়গাতেই মণ্ডপের কাজ বন্ধ রয়েছে। সন্তোষপুর লেকপল্লি পুজো কমিটির কর্তা সোমনাথ দাস জানান, বৃষ্টির জন্য শনিবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। মহালয়ার মধ্যে কাজ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তিনি। একই অবস্থা হাতিবাগান নলিন সরকার স্ট্রিটের পুজোরও। আয়োজকদের তরফে সিদ্ধার্থ সান্যাল বলছেন, “কাজ তো করাই যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ার আগে মণ্ডপের কাজ শেষ কঠিন হবে।” টালা বারোয়ারির কর্তারা অবশ্য বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে একটি ছাউনির ব্যবস্থা করেছেন। সেখানেই মণ্ডপের কাজ চলছে বলে পুজো কমিটির কর্তা ত্র্যম্বক বসু জানান। ফাঁপরে পড়েছেন কুমোরটুলির শিল্পীরাও। বৃষ্টিতে প্রতিমার গায়ের রঙ শুকোচ্ছে না। হ্যালোজেন ও ব্লো ল্যাম্প জ্বালিয়ে রঙ শুকোতে হচ্ছে বলেও শিল্পীরা জানাচ্ছেন।
পুজোর বাজারেও একই ছবি। আকাশের অবস্থা দেখে মুখ ভার বিক্রেতাদেরও। গড়িয়াহাট থেকে হাতিবাগান, ফুটপাথের বিক্রেতারা সব থেকে বেশি চিন্তায়। হাতিবাগানের এক বিক্রেতা নবীন দাসের বক্তব্য, “ছুটির দিনে সাধারণত ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু বৃষ্টির ঠেলায় আজ, কাল রবিবার কী হবে, বুঝতে পারছি না।” একই কথা গড়িয়াহাটের দোকানদার রবি বিশ্বাসের মুখেও। বলছেন, “বৃষ্টির জেরে শনিবারও তেমন ভিড় জমেনি। এমন চললে লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.