‘ডাকাত’ ধরে তল্লাশির সময়ে মিলল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিকৃতি খোদাই করা একটি মেডেল। সেটির এক দিকে রয়েছে ওই প্রতিকৃতি। উল্টো পিঠে একটি হাতের উপরে ধরা জ্বলন্ত প্রদীপ। মেডেলে রবীন্দ্রনাথের নাম রুশ ভাষায় লেখা রয়েছে। রয়েছে ১৮৬১ এবং ১৯৬১ সালের উল্লেখও। এ সব দেখে পুলিশের অনুমান, রবীন্দ্রনাথের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ওই মেডেল কাউকে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ভারতীয় জাদুঘর এবং প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিচ্ছে। তবে মেডেলটি বিশ্বভারতী সংগ্রহশালার নয় বলে প্রাথমিক ভাবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা এক মহিলার কাছ থেকে তারা সেটি কিনেছিল বলে জেরায় জানিয়েছে ধৃতেরা। গত বৃহস্পতিবার ভবানীপুরের হরিশ পার্কের কাছে পুলিশের হাতে ওই ডাকাতেরা ধরা পড়েছিল।
পুলিশ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে মেডেলটি দেখিয়েছে বলে তাদের দাবি। পুলিশের বক্তব্য, মেডেল দেখে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন, সেটি বিশ্বভারতীর সংগ্রহশালার নয়। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের পরিচালক তপতী মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। তবে এ নিয়ে সরকারি ভাবে আমাকে কেউ জানায়নি।” |
বিশ্বভারতীর একটি সূত্রের খবর, নোবেল পদকের সঙ্গে তামা ও ব্রোঞ্জের তিনটি মেডেলও চুরি গিয়েছিল। উদ্ধার হওয়া মেডেলটি তারই একটি কি না, সে বিষয়ে তাঁরা এখনও নিশ্চিত ভাবে কিছু জানাতে পারেননি।
কলকাতার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মুরলীধর শর্মা শনিবার বলেন, “ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, মাস চারেক আগে জয়নগরের এক মহিলার কাছ থেকে তারা মেডেলটি কিনেছিল। কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু-তিন জনের কাছে সেটি বিক্রি করারও চেষ্টা করেছিল তারা। তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল মেডেল কেনার জন্য কোনও খদ্দের এলে তারা ওই টাকা ছিনিয়ে নেবে।” পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, মেডেলটি বিক্রি করার জন্য তারা খদ্দের খুঁজছিল। দাম চেয়েছিল পাঁচ থেকে সাত লক্ষ টাকা। এ নিয়ে কয়েক জনের সঙ্গে দরাদরিও করেছিল। কিন্তু সন্তোষজনক দাম না পাওয়ায় তারা সেটি বেচেনি। কাদের সঙ্গে মেডেল-চোরেরা যোগাযোগ করেছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম কুন্তল সামন্ত, কাশীনাথ সর্দার, বিশ্বনাথ নস্কর, ফটিক সর্দার ও মহেশ্বর সর্দার। তাদের বাড়ি মহেশতলা ও জয়নগরে। এ দিন তাদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে হাজির করানো হলে বিচারক ৫ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। |