আকাশে ভেসে বেড়ায় পেঁজা তুলোর মতো সাদা মেঘ। কাশবনও ফুলে ফুলে সাদা। কুমোরপাড়ায় মৃতশিল্পীদের ব্যস্ততা। ঘরে ঘরে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ঢাকিদের। মন্ডপ সজ্জার শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তারা। বাজার দুর্মূল্য হলেও আয়োজনে যতটা সম্ভব খামতি না রাখতে চেষ্টার ত্রুটি নেই। কিন্তু গত বছরের মতো নিখরচায় দূরের কথা, গাঁটের কড়ি খরচ করেও পদ্মফুল কোথা থেকে মিলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছে পুজোর উদ্যোক্তাদের। কারণ, মালদহের চাঁচল মদকুমা জুড়েই এবার পদ্মফুলের আকাল দেখা দিয়েছে।
শুধু আকাল বললে কম বলা হয়। এলাকায় যে কটি পদ্মপুকুর রয়েছে, তার কোনওটিতেই পদ্মফুল ফোটেনি। সব কটি পদ্মপুকুরেই পোকার সংক্রমণ ঘটায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফুলের উৎস। |
চাঁচল ও তার আশেপাশে ৩০টির মতো পুজো হয়। অন্যদিনগুলো তেমন জরুরি না হলেও সন্ধিপুজোয় ১০৮টি পদ্মফুলের প্রয়োজন হয়। রামচন্দ্র অকাল বোধনে ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবীর আরাধনা করেছিলেন। সেই রীতি মেনে পুজোয় স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে পদ্মফুল। এতদিন এলাকার পদ্মপুকুরগুলো থেকে সেই প্রয়োজনীয় ফুল জোগান হত। চাঁচলের শ্রীরামপুর, কাশীপাড়া, ডুমরো এলাকাতে ওই পদ্মপুকুর আছে। গত বছর শ্রীরামপুরের বাসিন্দারা পুজোর উদ্যোক্তাদের কথা মাথায় রেখে বারওয়াড়ি একটি পুকুরে পদ্মচাষ করেছিলেন। নিখরচায় সেই পদ্মফুল তারা পুজোর উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিলিও করেছিলেন। কিন্তু এবার অন্য এলাকার মতো শ্রীরামপুরের ওই জলাশয়েও পোকার সংক্রমণ ঘটেছে। জলাশয়ের সমস্ত পদ্মগাছের পাতা পোকার সংক্রমণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গাছ নষ্ট হওয়ায় সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই ফুল ফোটেনি। ফলে অন্তত সন্ধিপুজোয় চাঁচলের পুজোগুলির জন্য কয়েক হাজার পদ্মফুলের যোগান কোথা থেকে মিলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় উদ্যোক্তারা। চাঁচলের পূর্বাচল ক্লাবের পীযূষ দাস, পাহাড়পুর রাজবাড়ির পুজোর উদ্যোক্তা পিনাকীজয় ভট্টাচার্য় বলেন, “পদ্মফুল ছাড়া পুজোর কথা ভাবা যায় না। লাগোয়া এলাকাতেও খোঁজ নিয়ে দেখেছি। সেখানেও একই ভাবে পোকার সংক্রমণে গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ফলে, এ বছর কোথা থেকে পদ্ম ফুল জোগাড় করা সম্ভব হবে তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” |