আগাম জানানো সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাওয়ার জন্য নির্ধারিত স্থানে বাস তাঁদের নিতে আসেনি, এই অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বাসকে বৃহস্পতিবার সকালে রাইপুরে আটকে রাখলেন স্থানীয় তৃণমূলের কর্মীরা। পরে পুলিশ গিয়ে আটক বাসগুলিকে জোর করে ছাড়িয়ে দিলে তাদের সঙ্গে বচসা বাধে তৃণমূল কর্মীদের। প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান তৃণমূলের কর্মীরা। অবরোধের সময় জোর করে রাস্তা পেরোতে গেলে একটি ছোট গাড়ির সামনের কাচ ভাঙা হয় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার জেরে এ দিন সকাল সাতটা থেকে ঘণ্টা দুয়েক বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়। ভোগান্তির শিকার হন ওই রাস্তায় যাতায়াতকারী গাড়ি চালক থেকে সাধারণ যাত্রী। পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে অবশ্য অবরোধ ওঠে। স্বাভাবিক হয় যান চলাচল। |
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী রাইপুরের সবুজ বাজার এলাকায় জড়ো হয়ে বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, ফুলকুসমা ও খাতড়া রুটের কিছু বাসকে আটকান। রাইপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগবন্ধু মাহাতো বলেন, “বুধবার বারিকুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ছিল। সেখানে যাওয়ার জন্য বাঁকুড়া থেকে রাইপুর, ফুলকুসমা, শিলদা, মেদিনীপুর, খাতড়া-সহ বেশ কয়েকটি রুটের ৩৭টি বেসরকারি বাসের মালিককে আগাম চিঠি দিয়েছিলাম। ওই বাসগুলি দেওয়া হবে বলে তাঁরা সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, অধিকাংশ বাসই আসেনি।” তাঁর ক্ষোভ, “শেষ মুহূর্তে বাস না পেয়ে আমাদের প্রচণ্ড অসুবিধা হয়েছে। বাসগুলি যে আসছে না, তা-ও বাসমালিক বা বাসকর্মীরা আমাদের জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি।” তাঁর দাবি, কেন ওই বাসগুলি আসেনি, তা জানতে চেয়েই দলের কর্মীরা ওই সব রুটের কয়েকটি বাসকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। বাসকর্মীরা সদুত্তর দিতে না পারায় কয়েকটি বাসকে আটকেও রাখা হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বাঁকুড়া জেলা বাস মালিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক দীপক সুকুল অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “এ বার জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের মাধ্যমে রাইপুরে ২৫টি বাস দেওয়া হয়েছিল। সেই বাসগুলি তৃণমূলের লোকেরাই নিয়েছেন। তাই বাস না দেওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।” তাঁর দাবি, বুধবার ফুলকুসমায় তৃণমূলের লোকজন একটি বাস ভাঙচুর করেছে। এ ভাবে জোর করে বাস ভাঙচুর বা আটকে রাখাটা কোনও রাজনৈতিক দলের উচিত নয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর দ্বারস্থ হবেন বলেও দীপকবাবু জানিয়েছেন। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাস মালিক বলেন, “একই জায়গায় যাওয়ার জন্য তৃণমূলের তিনটে-চারটে গোষ্ঠী থেকে একটা বাসকে চিঠি ধরিয়ে যেতে বলা হচ্ছে। এক গোষ্ঠীর লোকেরা সেই বাস নিয়েছেন বলে অন্য গোষ্ঠীর লোকেরা বাস আটকে দিচ্ছেন। রাইপুরে সেটাই হয়েছে।” রাইপুর থানার আইসি দেবাশিস নাথ বলেন, “রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য যেটুকু করা উচিত, পুলিশ সেটুকুই করেছে।” |