সমস্যা শুনেই জলদি সমাধান মুখ্যমন্ত্রীর
রাস্তায় তাঁকে দেখতে ভিড় করেছিলেন বাসিন্দারা। এমনটা হয়ই। কিন্তু তিনি যে তাঁদের সঙ্গে দু’টো কথা বলে, দীর্ঘদিনের সমস্যা এক নিমেষে সমাধান করে দেবেন ভাবেননি অনেকে।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল সফরে এসে বুধবার রাস্তায় যেতে যেতে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে নানা সমস্যা মিটিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন দুপুরে বারিকুলের পূর্ণাপানির ভিড়ে ঠাসা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গলমহলের অনেক কাজ করেছি। আরও করব।”
খাতড়ার কেচোন্দাঘাটের কজওয়ে
বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
খাতড়ার কেচোন্দাঘাটের কজওয়ে
বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
এ দিন মুকুটমণিপুর থেকে তাঁর কনভয় বারিকুলের সভায় যাওয়ার পথে রানিবাঁধ গার্লস হাইস্কুলের সামনে কৌতূহলী মানুষজনের সঙ্গে ছাত্রীদের ভিড় দেখে থেমে যায়। গাড়ি থেকেই মমতা স্কুলের শিক্ষিকার সঙ্গে কথা বলেন। পরে সভায় তিনি ঘোষণা করেন, “ওই স্কুলে সমস্যার কথা শিক্ষিকারা আমাকে জানিয়েছেন। মুকুল রায়ের সাংসদ তহবিল থেকে ওই স্কুলের জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।” রানিবাঁধ থেকে ঘাগড়া-হলুদকানালি, কদমাগড়, কতরো-সহ বহু গ্রামের মানুষ তাঁকে দেখতে ভিড় করেছিলেন। কদমাগড় প্রাইমারি স্কুলের কাছে ভিড় দেখে তিনি কনভয় থামান। পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কদমাগড় প্রাইমারি স্কুলের এক শিক্ষক স্কুল ভবন নিয়ে তাঁর কাছে সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ওই স্কুলের সমস্যা মেটাতে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা জানান। কেচোন্দা হাইস্কুলেরও কিছু সমস্যার কথা তাঁর কানে যায়। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কিছু সমস্যার কথা বাসিন্দারা তাঁকে জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কথা বলে তিনি সেই সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিনই মুখ্যমন্ত্রী বারিকুলের অমৃতপাল গ্রামের কাছে ভৈরববাঁকিতে একটি সেতু তৈরির শিলান্যাস করেন। ভৈরববাঁকির ওই কজওয়ের মতোই খাতড়ার কেচোন্দাঘাটের কজওয়েও বৃষ্টির জলে জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য
শুনতে এসেছিলেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। ছবি: উমাকান্ত ধর।
বারিকুলের সভামঞ্চে মমতার স্পর্শ।
ছবি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ।
কেচোন্দাঘাটের কজওয়ের পাশেই সেতু তৈরির কাজ শুরু হলেও তা অসম্পূর্ণ অবস্থায় দীর্ঘ দিন ধরে পড়ে রয়েছে। ওই কজওয়ে দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে যান। তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ওই কজওয়ের পাশে অবিলম্বে সেতু সংস্কারের দাবি সম্বলিত পোস্টার দিয়েছিলেন বাসিন্দারা। মুখ্যমন্ত্রীর তা নজরে আসে। সভায় তিনি বলেন, “আমি সেচমন্ত্রীর কাছে খবর নিয়েছি, ওই সেতু সেচ দফতরের নয়, পূর্ত দফতরের। শীঘ্রই কাজটি শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের পর্যটন সম্ভাবনাও মুখ্যমন্ত্রীর নজর টেনেছে। এ দিন তিনি বলেন “আসার সময় দেখেছি বারিকুলের জঙ্গলে পর্যটনের সুন্দর সম্ভাবনা রয়েছে। এটা আমার মাথায় রয়েছে।”
বাঁকুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের
জমি মাত্র ৩-৪ দিনের মধ্যেই জেলাশাসক খুঁজে বের করেছেন। সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী ১৫ বিঘা
জমি দান করেছেন।” গত বার মুখ্যমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কথা বলেছিলেন। ছবি তুলেছেন অভিজিৎ সিংহ।
এলাকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য তিনি ছোট হাট তৈরি করার কথা জানান। মুখ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি উদ্যোগে ৫০টি ঘর করে দেওয়া হবে। কম টাকায় সেই ঘর নিয়ে ব্যবসা করে অর্থপার্জন করতে পারবেন যুবকরা।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সকালে মুকুটমণিপুর জলাধারের কিছুটা অংশ ঘুরে দেখেন। সভায় বলেন, “মুকুটমণিপুরে সরকারি জায়গার উপরে ব্যবসায়ীরা দোকান চালাচ্ছেন। তাঁদের বলছি, পর্যটকদের সুবিধা করে দিতে একটু পিছিয়ে যান। ওই দোকানের জায়গা আপনাদের নামে করে দেওয়া হবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই চটজলদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতায় খুশি জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর মতোই তাঁর প্রশাসনও এ বার দ্রুত সমস্যাগুলি সমাধান করুক।

বাঁকুড়ার জন্য
• বুধবার পঞ্চাশটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
• ১৭টি নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস, তার মধ্যে ভৈরববাঁকি নদীর উপরে বারিকুলের অমৃতপালে সেতুর কাজ উল্লেখযোগ্য।
• সাঁওতালি মাধ্যমের ২৬২ জন পার্শ্বশিক্ষককে নিয়োগপত্র (মঞ্চে পাঁচ জনকে)।
• রানিবাঁধ, সিমলাপালে আইটিআই হবে।
• ন্যাশনাল ফাইবার মিশনের আওতায় তুলো, সিল্ক নিয়ে ক্ষুদ্র শিল্পের ক্লাস্টার তৈরি করা হবে।
• বড়জোড়ায় ৫৬২ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে আইটি হাবে।
• রানিবাঁধ, মেজিয়া ব্লকে সরকারি ডিগ্রি কলেজের শিলান্যাস। রাইপুর ব্লকে একটি সরকারি পলিটেকনিক কলেজের শিলান্যাস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.