শুভেচ্ছা সহ...
ক’দিন পরেই পুজো। মানে দেদার মজা। সারা বছরের ক্লান্তি কাটিয়ে চনমনে হওয়ার কয়েকটা দিন। কিন্তু শুধুই কি তাই? চোরাগোপ্তা কোনও উদ্বেগও কি নেই? আবেগ ছাপিয়ে কি উঁকি মারে না ‘খরচ বাড়া’র মতো এক ঘোর বাস্তব চিন্তা? কারণ, এক দিকে প্রিয়জনের জন্য উপহার। আর অন্য দিকে বাড়ির পরিচারক, গাড়ির চালক থেকে শুরু করে ফ্ল্যাটের সিকিউরিটি, পাড়ার নাইট গার্ড, কাগজওয়ালা, দুধওয়ালা এবং আরও বহু মানুষের বখ্শিস। এত সব কিছুর সঙ্গে এঁটে ওঠে না পকেটের রেস্ত। তা হলে? চড়া মূল্যবৃদ্ধির বাজারে নির্মল আনন্দে মাতার পথ কি একেবারেই বন্ধ? মোটেই না। বন্ধ যে নয়, সেটা বলতেই তো বসেছি আজ। আর সেটা শুধু পুজো নয়, বছরভর উপহার দেওয়ার যে-সব অসংখ্য মুহূর্ত আসে-যায়, সেই সব কিছু নিয়েই। সেখানে কোনওটা আগে থেকে জানা থাকে। কোনওটা আচমকা এসে রক্তচাপ বাড়ায়। কারও জন্য বরাদ্দ ছোট, কারও বড়। কোনওটা খুব কাছের কারও জন্য। কোনওটা আবার নেহাতই ভদ্রতা, মুখরক্ষা। আসলে উপহার খাতে খরচের পরিকল্পনা আগাম করতে অভ্যস্ত নই আমরা। অথচ সেটাই এই সমস্যা সমাধানের একমাত্র পথ। ঠিক যেমন করে সংসার খরচ, বেড়াতে যাওয়া বা ছেলেমেয়ের পড়ার খরচ হিসাব করে চলি। তা হলেই আর টাকা-পয়সা সংস্থানের উদ্বেগে মাটি হয়ে যায় না কাউকে কিছু দেওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা পরম আনন্দের অনুভূতিগুলো।

খাতা কলম চাই-ই
একটু হিসাব কষে দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে, বছরের বিভিন্ন সময়ে উপহার দেওয়ার পিছনে যে-টাকা খরচ করা হয়, সেই অঙ্কটা কত বড়। আর্থ-সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী বিভিন্ন মানুষের উপহারের দামে ফারাক থাকবে। তবুও যদি ধরি, কারও জন্মদিনে খুব কম করে ১০০ টাকার উপহার কিনছেন, তা হলে সারা বছরে কমপক্ষে ৫টা জন্মদিন এলে আপনার খরচ দাঁড়াবে ৫০০ টাকা।
উৎসবে-অনুষ্ঠানে মা-মাসিকে শাড়ি দেবেন। খুব ভাল। ধরুন, পাঁচ জনকে শাড়ি দিতে হবে। মাথাপিছু ১,০০০ টাকা ধরেছেন। এখানেই তো ৫,০০০ টাকা হয়ে গেল।
আচমকাই সকালে পাড়ার মহুয়াদি এসে ছেলের পৈতের নিমন্ত্রণ করে গেলেন। সম্মানের প্রশ্ন। যেতে হবেই। ব্যাস্, ৩০০-৪০০ টাকার ধাক্কা।
আর আপনি যদি খুব বেশি মিশুকে হন এবং অফিস বা পাড়ার সকলের সঙ্গে বেশ ভাল সম্পর্ক থাকে, তা হলে তো কথাই নেই। প্রতি বিয়ের মরসুমে নেই নেই করে কমপক্ষে গোটা তিন-চারেক নিমন্ত্রণ। এর পর ধর্মীয় উৎসব, বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়দের অজস্র জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী তো লেগেই আছে। রয়েছে ছেলেমেয়ের স্কুলের বন্ধুদের হাজারো অনুষ্ঠানও। ফলে এই আর্থিক গুঁতো থেকে বাঁচার পরিকল্পনা যদি সত্যিই করতে চান, তবে কাগজ-কলম নিয়ে না-বসে কোনও উপায় নেই। রীতিমতো তালিকা ধরে হিসাব করতে হবে আপনাকে।

প্রথমেই তালিকা
বাজারের খাতায় কী ভাবে হিসাব করেন? কোন কোন জিনিস কিনতে হবে আগে তার তালিকা তৈরি করে নেন, তাই তো? তার পর সেটার পরিমাণ লিখে দাম হিসাব করেন। উপহারের ক্ষেত্রেও প্রথমে সেটাই করে ফেলুন। কোন ধরনের অনুষ্ঠান সারা বছর আসতে পারে তার তালিকা তৈরি করুন। তার পর সেটা ধরে এগোন।
• নিকটাত্মীয়ের বিয়ে
• নিকটাত্মীয়ের জন্মদিন।
• বন্ধুর বিয়ে।
• বন্ধুর জন্মদিন
• পাড়া-প্রতিবেশীর বিয়ে।
• পাড়ারই কারও জন্মদিন, অন্নপ্রাশন, পৈতে।
• আত্মীয়-প্রতিবেশীর বিবাহবার্ষিকী।
• খুব কাছের কারও বিবাহবার্ষিকী।
• পুজো, ঈদ, বড়দিন, ভাইফোঁটার মতো উৎসব।
• আচমকা কোনও আত্মীয়-বন্ধু-প্রতিবেশীর কাছ থেকে পাওয়া নিমন্ত্রণ ইত্যাদি।
ভেবে দেখুন, প্রতিটি অনুষ্ঠানের কিন্তু নির্দিষ্ট একটা ধরন রয়েছে। খুব সতর্ক না-হয়েও, আমরা কিন্তু সাধারণত সেটা মেনেই নির্দিষ্ট দামের উপহার কেনার কথা ভাবি। তাই শুরু করব সেই খুঁটিনাটি দিয়ে

যা বার বার আসে
জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীর মতো অনুষ্ঠান প্রতি বছরই নিয়ম মেনে ফিরে আসে। অনেক সময়েই দিনগুলি আমাদের জানা থাকে। আর ফি বছর এই সব খাতে যে আপনার খরচ হবে, তা-ও নিশ্চিত। বার বার আসে বলে অবশ্য এই সব অনুষ্ঠানে তুলনায় কিছুটা কম দামের উপহার দেওয়া হয় (ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে)।

আর্থিক সংস্থান
• ওপেন এন্ডেড, ঝুঁকিবিহীন মিউচুয়াল ফান্ডে এসআইপি (সিস্টেম্যাটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান) করুন। প্রয়োজন মতো ভাঙাতে ভাঙাতে এগোন।
• রেকারিং ডিপোজিট
• ফ্লেক্সি টার্ম ডিপোজিট।
• কোনও লিক্যুইড ফান্ডে বাড়তি টাকা রেখে দিন।


মোটে এক বার
সন্তানের বিয়ের জন্য তো টাকা জমান তার ছোটবেলা থেকেই। সোনার গয়নাও গড়িয়ে রাখেন সাধ্য মতো। কিন্তু ধরুন, সামনেই কাকার মেয়ের বিয়ে। সোনার গয়না দিতেই হবে। এ বার কী করবেন? আবার এমন আরও কিছু অনুষ্ঠান রয়েছে, যা জীবনে এক বারই আসে। যেমন: অন্নপ্রাশন, পৈতে ইত্যাদি। আপনাকে কিন্তু বিভিন্ন সময়ে সে রকম বেশ কয়েকটিতে যেতে হয়। পাড়া-প্রতিবেশী হলে অল্প টাকায় সারা যায়। কিন্তু আত্মীয় হলে তো বড় খরচের ধাক্কা। বলতে পারেন পরিকল্পনা তো করব, কিন্তু বুঝব কী করে কবে কার নিমন্ত্রণ আসবে? এ ক্ষেত্রে হাতিয়ার ‘আন্দাজ’। সাধারণত নিকটাত্মীয় হলেই দামি উপহার দেওয়ার প্রশ্ন আসে। এ ক্ষেত্রে কার কত বয়স, তার ভিত্তিতে অল্প অল্প করে টাকা জমাতে শুরু করুন। আর বিয়ে, অন্নপ্রাশনের মতো অনুষ্ঠান তো দিন-ক্ষণ দেখেই হয়। ফলে কোন সময়ে হতে পারে, সেটাও জানা। কাজেই বড় খরচ তো বটেই, এমনকী অল্প-স্বল্প খরচের জন্যও আগে থেকে তৈরি থাকতে পারেন। তা হলে মাসের শেষে তেমন কোনও অনুষ্ঠান এলে আর কপাল চাপড়াতে হবে না।

আর্থিক সংস্থান
• বছর খানেক মেয়াদের ফিক্সড ডিপোজিট।
• স্বল্প মেয়াদি ইনকাম ফান্ড।
• ফ্লেক্সি টার্ম ডিপোজিটের কথা ভাবা যায়। যাতে প্রয়োজন মতো টাকা তোলা যাবে আবার হাতে বেশি টাকা এলে জমাও করে দেওয়া যাবে।
• রেকারিং ডিপোজিট।
• একটু ঝুঁকি নিয়ে এমআইপি-র মতো ফান্ডে সঞ্চয় কিংবা কোনও ঝুঁকিবিহীন ফান্ডে এসআইপি।

হঠাত্ নিমন্ত্রণ
হঠাৎ বৃষ্টি বেশ ভাল। কিন্তু হঠাৎ নিমন্ত্রণ? ধরুন, অফিসে গিয়ে জানলেন, মার্কেটিংয়ের রজতদা-র মেয়ের অন্নপ্রাশন। এ দিকে পকেট খালি। কিন্তু না-গিয়েও উপায় নেই।

আর্থিক সংস্থান
• এ ক্ষেত্রে লিক্যুইড ফান্ডে টাকা রাখলে খুব কাজে দেবে। প্রয়োজনে এক দিনের মধ্যে তোলাও যায়।
• ওপেন এন্ডেড ঝুঁকিবিহীন ফান্ডে এসআইপি।
• বাজারে আরও কিছু স্বল্পমেয়াদি ফান্ড আছে, যার টাকা খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভাঙিয়ে নেওয়া যায়। খোঁজ নিন।
• ফ্লেক্সি টার্ম ডিপোজিটও হঠাৎ প্রয়োজনে কাজে দেয়।
• অনেক ব্যাঙ্ক ফ্লেক্সি রেকারিং ডিপোজিটের সুবিধা দেয়। এখানে ন্যূনতম অর্থ রাখতেই হয়। তার পরেও চাইলে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পর্যন্ত অঙ্ক রাখা যেতে পারে। হাতে বাড়তি টাকা এলে সেখানেও সরিয়ে রাখতে পারেন।

কাছের না দূরের?
ভাবছেন, উপহার কাকে দেব তা নিয়ে আবার ভাবনা-চিন্তার কী আছে? কিন্তু সকলেই কাছের মানুষকে একটু ভাল বা তাঁর পছন্দের জিনিস দিতে চান। কষ্ট হলেও নিকটাত্মীয়-বন্ধুর জন্য যা কিনবেন, তা পাড়ার কোনও অনুষ্ঠানে বা নেহাতই পরিচিত কারও জন্মদিনে দেবেন না, যদি না-তিনি বাড়ির লোকের মতো হন। অর্থাৎ কারও জন্য উপহার বাছার আগে দেখা দরকার তিনি আপনার কতটা কাছের। যাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা যত বেশি, তাঁকে দেওয়ার জন্য উপহার কেনার খরচও তত বেশি হবে।

এ বার বাজেট
• অনুষ্ঠানের যে-তালিকা তৈরি করেছেন, সেই অনুযায়ী বরাদ্দ টাকার অঙ্ক লিখুন।
• নিজের সাধ্য অনুযায়ী বাজেট করুন। কে কী দিল, তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে যাবেন না।
• চেষ্টা করুন প্রাপকের পছন্দ-অপছন্দ এবং প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে উপহার বাছাই করার।
• বছরের প্রথমেই ছকে রাখুন, আগামী এক বছরে কার আমন্ত্রণে কী কী অনুষ্ঠানে যেতে হতে পারে। ধর্মীয় উৎসবগুলিও যেন বাদ না-যায়। এতে এক বছরে উপহার খাতে খরচের একটা আন্দাজ পাবেন। সেই অনুযায়ী টাকা জমানোর পথ স্থির করতে পারবেন।
• এ বার সারা বছরে মোট খরচের যে-সম্ভাব্য অঙ্ক পেলেন, তাকে ১২ দিয়ে ভাগ করলে বুঝতে পারবেন প্রতি মাসে কত টাকা জমাতে হবে।
• তবে বর্তমান দর ধরে আপনি উপহার কেনার জন্য যে-টাকা রাখবেন, আগামী দিনে তা কম পড়তে পারে। তাই মূল্যবৃদ্ধির কথা মাথায় রাখুন। যেমন ধরুন, এই উৎসবে আপনি একটি জামা কিনেছেন ৫০০ টাকায়। কিন্তু আগামী এক বছরে কাপড়ের দাম, জামা তৈরির খরচ বাড়বে। তাই একই পোশাক তখন কিনতে হয়তো ৭০০ টাকা খরচ হবে। সেই হিসাবে বাজেট করুন।
• এ বার অনুষ্ঠান কত দূরে, সেই বুঝে সঞ্চয়ের কাজ শুরু করে দিন।

মনে রাখলে কাজে দেবে
অনুষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী সঞ্চয়ের কথা বললাম। এ বার দেখা যাক, সে পথে হাঁটতে যা যা মনে রাখলে ভাল:
• উপহার খাতে খরচের জন্য একটি আলাদা তহবিল তৈরি করুন। তা হলে কখনওই খুব চাপ তৈরি হবে না।
• দীর্ঘমেয়াদি বা স্বল্পমেয়াদি, যে কোনও ধরনের প্রকল্পেই সঞ্চয় করতে পারেন। তবে সেটা সময় বুঝে করুন। প্রয়োজনের সময়ে টাকা টাকা হাতে পাবেন না, এমন প্রকল্পে না-ঢোকাই ভাল।
• যে-অনুষ্ঠানে দামি জিনিস দিতে হবে, সেটা যদি বেশ কিছু দিন আগে জানতে পারেন, তা হলে একটু বেশি মেয়াদের সঞ্চয় প্রকল্পে টাকা জমানো যায়।
• মনে রাখবেন কোনও ভাবেই যেন লগ্নির ওই অর্থ অন্য কোনও খাতে খরচ না-হয়ে যায়।
• পুজোর মতো উৎসব-পার্বণের খরচের জন্য আলাদা একটি খাতে টাকা জমাতে পারলে ভাল হয়।
• কোন দিনগুলির কথা মাথায় রেখে কোথায় টাকা জমাচ্ছেন, মাঝেমধ্যেই সেটা মিলিয়ে দেখবেন। ভুলে গেলে বা গাফিলতি করলে কিন্তু আপনারই লোকসান।
• সুযোগ থাকলে অনেকে মিলে একসঙ্গে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাতে পকেটে ততটা টান পড়বে না।

বাজেট মেনে বাছাই
উপহার কেনার একটা পদ্ধতি আছে। কারণ জিনিস পছন্দ হয়ে গিয়েছে, অথচ পকেটে টাকা নেই এটা আবেগ, সময়, শ্রম, সব কিছুরই অপচয়। পদ্ধতিটা হল;
• বাজেট নির্দিষ্ট করুন।
• মনে মনে একটা উপহারের কথা ভেবে রাখুন।
• টাকা হাতে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করুন।
• এ বার উপহার কিনতে বেরোন।
• চাইলে টাকার পরিমাণ ও বাজারের দাম অনুযায়ী পরিকল্পনা কিছুটা এ দিক-ও দিক করতে পারেন।
যেমন ধরুন, কোনও নিকটাত্মীয়ের বিয়েতে আপনার সর্বোচ্চ বাজেট ৫,০০০ টাকা। কিন্তু সেই টাকায় সোনার গয়না কিনলে তা খুবই ছোট হবে। তাই ওই একই টাকায় আপনি অন্য রকমের ভাল উপহার কিনতে পারেন। অথবা চাইলে দিতে পারেন কোনও গিফ্ট কার্ড। টাকার অঙ্ক দিয়ে বিচার করলে, তা হয়তো তখন খুব একটা কম মনে হবে না।
তবে হ্যাঁ, যে-কথাটা ফের মনে করিয়ে দিতে চাই উপহার বা তার বাজেট কিন্তু স্থির হবে আপনার সঙ্গে প্রাপকের ঘনিষ্ঠতার নিরিখে। সে জন্য বাজেট অতিক্রম করতে হলেও, তা যেন বেশি উপরে না-যায়।

উপহারের রকমফের
বাজারে ছেয়ে রয়েছে নানা ধরনের উপহারের সম্ভার। প্রয়োজন শুধু পছন্দ মাফিক বেছে নেওয়া। তুলে দেওয়া হল তেমনই কয়েকটির তালিকা
• বিয়ের ক্ষেত্রে এখনও সোনার গয়না মানুষের প্রথম পছন্দের উপহার। তবে সেটা সকলের সাধ্যের মধ্যে না-ও হতে পারে। যে কারণে বহু সংস্থাই এখন হাল্কা গয়না বাজারে আনছে। রয়েছে কম দামি ভাল নক্শার হিরের গয়নাও। আত্মীয়ের কাছে সম্মান রাখা নিয়ে চিন্তিত হলে কিন্তু ছোট্ট অথচ ‘ট্রেন্ডি’ এই গয়নার জুড়ি নেই।
• অন্নপ্রাশনে বাচ্চাদের সোনা দিতে চান না? অথচ বেশি বাজেট ধরে রেখেছেন। তা হলে ভেবে দেখতে পারেন কোনও বিমা পলিসি উপহার দেওয়ার কথা। ভাবা যেতে পারে স্থায়ী আমানতের কথাও। এ ছাড়া এখন তো বিভিন্ন সংস্থা শুধুমাত্র বাচ্চাদের জন্যই নানা ধরনের পণ্য আনছে। বেছে নিতে পারেন তার কোনও একটা।
• জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী অথবা অন্যান্য নির্দিষ্ট (ফাদার্স ডে, উইমেন্স ডে, ভ্যালেনটাইন্স ডে ইত্যাদি) দিনের জন্য সফ্ট টয়, গানের সিডি, চকোলেট বা ফুলের কোনও বিকল্প নেই। সঙ্গে থাকুক গ্রিটিংস কার্ড। একটু সাহসী হতে চাইলে রকমারি ওয়াইন বা দামি মদের সম্ভার বেছে চমক দিতে পারেন।
• ইন্টারনেটে সড়গড় হলে উপহার দেওয়ার ভারও রাখতে পারেন তার উপরেই। এখন নানা ওয়েবসাইট শুধুমাত্র গিফ্ট দেওয়ার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বই থেকে ওয়াশিং মেশিন সবই পাবেন। অনেকটা আলাদিনের প্রদীপের মতো। দরকার শুধু হাতের কাছে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডটি রাখার।
• অনুষ্ঠানে যেতে পারছেন না, অথচ উপহার পাঠাতে চান। কোনও পরোয়া নেই। আপনি চাইলে জিন হয়ে ওয়েবসাইট সংস্থাই সরাসরি সেই মানুষটির কাছে উপহার পৌঁছে দেবে।
• রয়েছে ‘এক্সপিরিয়েন্স গিফ্ট’। বিয়ের ক্ষেত্রে যেমন পকেটে ভাল রকম রেস্ত থাকলে ভাবতে পারেন মধুচন্দ্রিমা ‘স্পনসর’ করার কথা। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট সংস্থাই এই ধরনের প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করে। প্রাপকের পছন্দের জায়গা জেনে যা বুক করে ফেলতে পারেন আপনি।
• জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকীর মতো অনুষ্ঠানে পার্টি বা খাওয়াদাওয়া স্পনসরের ব্যবস্থাও রয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। তাই চমকে দিতে চাইলে এই উপহার মন্দ নয়।
• নানা ধরনের উপহারে বাজার ছেয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে থেকে কোন্টা বেছে নেবেন, তা নিয়ে চিন্তিত? এ জন্য হাতের পাঁচ গিফ্ট ভাউচার বা গিফ্ট কার্ড। বহু মানুষই এখন নিজের পছন্দের জিনিস কেনার চেয়েও গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রাপকের পছন্দের উপর। যে- কারণে চাহিদা বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের গিফ্ট ভাউচারের।
• বেশির ভাগ সংস্থাই নিজেদের বিপণিতে পণ্য ছাড়াও, এই ধরনের ভাউচার রাখছেন। যে-কোনও অনুষ্ঠানে নিজের পকেট বুঝে তা কিনে দিলেই হল, জিনিস পছন্দের ঝামেলা
নেই। যাঁকে দিচ্ছেন, তিনি নিজের ইচ্ছে মতো ওই বিপণি থেকেই জিনিস কিনে নিতে পারেন।
তা হলে আর দেরি কেন? সামনেই উৎসবের মরসুম। আর তার পরেই একের পর এক বিয়েবাড়ি। এ বারটা না হয় একটু তাড়াহুড়ো হবে। কিন্তু পরের বার থেকেই দেখবেন বিষয়টা আপনার আয়ত্তে চলে এসেছে।

মাস ছয়েক
• লিক্যুইড ফান্ডে বাড়তি টাকা রেখে দিন। এক দিনের মধ্যে তোলা যায়
• ফিক্সড ডিপোজিট
• রেকারিং ডিপোজিট
• মিউচুয়াল ফান্ডের ফিক্সড ম্যাচিওরিটি প্ল্যান (এফএমপি) (তেমন ঝুঁকি নেই। ৯০ দিনের জন্যও হয়)
• ফ্লেক্সি টার্ম ডিপোজিট
এক বছর
• ফিক্সড ডিপোজিট
• মিউচুয়াল ফান্ডে মান্থলি ইনকাম প্ল্যান (এমআইপি)। মাসে মাসে যা আয় দিতে পারে। একটু ঝুঁকি আছে। কিন্তু বড় রিটার্নও দিতে পারে
• ওপেন এন্ডেড ঝুঁকিবিহীন কোনও ফান্ডে বছর পাঁচেকের জন্য এসআইপি। প্রয়োজন মতো ভাঙাতে ভাঙাতে এগোবেন
• এফএমপি
• রেকারিং ডিপোজিট

দু’তিন বছর
• এফএমপি
• এমআইপি
• ডেট ফান্ডে এসআইপি
• একটু ঝুঁকি নিতে চাইলে ব্যালান্সড ফান্ডে এসআইপি
• ফিক্সড ডিপোজিট
আচমকা অনুষ্ঠান
• রেকারিং ডিপোজিট
• বাজারে এমন কিছু ফান্ড আছে, যেখানে টাকা রাখলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভাঙিয়ে নেওয়া যায়
• ফ্লেক্সি টার্ম ডিপোজিটও হঠাৎ প্রয়োজনে কাজে লাগতে পারে

শুরু করুন এ ভাবে
• কেন কিনবেন?
• কবে অনুষ্ঠান?
• কার জন্য কিনছেন?
• বাজেট কত?
• টাকা জমানোর পথ।
• উপহার বাছাই।

গিফ্টের টিপ্‌স
• অন্যের সঙ্গে উপহারের প্রতিযোগিতায় নামবেন না। ভালবাসাটাই আসল।
• যে কোনও ক্ষেত্রেই বাজেট ভুললে চলবে না। পছন্দের মানুষের ক্ষেত্রে হয়তো ব্যতিক্রম হবে। তাই প্রস্তুতি নিন আগে থেকেই।
• টাকা জমান অল্প অল্প করে, হাতে কিছুটা সময় রেখে।
• চেষ্টা করুন অন্য রকম কিছু দিতে। সরাসরি জেনে নিতে পারেন সেই মানুষটার কী প্রয়োজন।
• মনে রাখবেন, উপহার দেওয়া নির্ভর করে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতার উপর। যিনি দিচ্ছেন তাঁর মানসিকতার উপরেও।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.