বন্দুক ধরে ট্রেন থামায়
ডাকাতেরা, সাক্ষ্য গার্ডের
তাঁর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ট্রেন দাঁড় করায় দুষ্কৃতীরা। তার পরে ট্রেনে লুঠপাট চালায়।
কাটোয়া-আমোদপুর ছোট রেলে ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে বুধবার এই কথাই জানালেন ট্রেনের গার্ড দিলীপকুমার সরকার। কাটোয়া ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে রুদ্ধদ্বার এজলাসে ডাকাতির বিবরণ দেন তিনি। জানান, এক মহিলাকে জোর করে ট্রেন থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়েছিল বলেও শুনেছিলেন। কিন্তু দুষ্কৃতীদের তিনি শনাক্ত করতে পারেননি।
গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কেতুগ্রামের অম্বল গ্রাম ও পাঁচুন্দি স্টেশনের মাঝে কাটোয়াগামী লাইনে (এখন ব্রডগেজ হচ্ছে) ছোট রেল আটকে লুঠপাট শুরু করেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই সময়ে ১১ বছরের মেয়ের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে তার মাকে ট্রেন থেকে নামিয়ে পাশের ঝোপে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। সরকারি আইনজীবী কাঞ্চন মুখোপাধ্যায় জানান, আজ, বৃহস্পতিবার অভিযোগকারিণীর সেই কিশোরী মেয়ের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা।
সেই ৫২৩৫৬ ডাউন ট্রেনের চালক ও গার্ড কাটোয়া রেলপুলিশের কাছে অভিযোগে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ লুঠপাট শুরু হয়েছিল। ওই রাতেই রেলপুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়। পরে ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ। ডাকাতির তদন্ত রেলপুলিশের হাতেই ছিল। তারা পৃথক ভাবেই কাটোয়া এসিজেএম আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছিল। তবে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আগে হাইকোর্টের নির্দেশে দু’টি মামলা যুক্ত করে নেওয়া হয়।
চার কামরার ছোট রেলের শেষ কামরায় গার্ড ও চালকেরা এক সঙ্গেই বসেন। যাত্রীদের আসনের ধারে জানলার পাশে সামনা-সামনি দু’টি আসন গার্ডের জন্য নির্দিষ্ট থাকে। সেখানে বসেই তিনি চালককে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। ডাকাতির সময়ে ওই কামরায় মোটে চার-পাঁচ জন যাত্রী ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আইনজীবীরা জানান, গার্ড দিলীপবাবু ঘটনার আনুপূর্বিক বিবরণ দিয়েছেন। সাক্ষ্যে তিনি জানান, কাটোয়া-আমোদপুর ন্যারোগেজ লাইনে পাঁচুন্দি স্টেশন ছাড়ানোর একটু পরেই দুই যুবক তাঁর কামরায় উঠে আসে। ট্রেনটি তখন ৪১ নম্বর পিলারের কাছে। দুই যুবক তাঁর মাথায় বন্দুক এবং গলায় ছুরি ধরে ট্রেন থামাতে বলে। তাঁর কাছ থেকে দু’টি মোবাইল এবং ৭১০ টাকা কেড়েও নেয়। তাদের কথা মতো তিনি ওয়াকিটকিতে চালক ও সহকারী চালককে জানান, ট্রেন থেকে একটি শিশু পড়ে গিয়েছে। ট্রেন থামাতে হবে। অন্ধকারের মধ্যে ট্রেন থামিয়ে চালকেরা তাঁর কাছে এলে তাঁদেরও আটকে লুঠপাট চালানো হয়। প্রায় আধঘণ্টা ট্রেনটি সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল।
আইনজীবীদের সূত্রে খবর, গার্ডের সাক্ষ্য শোনার পরে বিচারক সৈয়দ নিয়াজুদ্দিন আজাদ অভিযুক্তদের দেখিয়ে বলেন, ‘এদের কেউ কি ঘটনার সময়ে ছিল? চিনতে পারেন কি না, দেখুন তো।’ সাক্ষীর কাঠগড়া থেকে নেমে আসামিদের কাঠগড়ার সামনে গিয়ে ছয় অভিযুক্তকে ভাল করে দেখেন দিলীপবাবু। তার পরে জানান, এদের কাউকেই তিনি চিনতে পারছেন না। এর পরে অভিযুক্তদের আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রসেনজিৎ সাহা দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে জেরা করেন।
পুলিশের মতে, এজলাসে হাজির ছয় অভিযুক্তকে গার্ডের না চেনারই কথা। কেননা, যে দু’জন ছুরি-বন্দুক ধরেছিল, তাদের এক জন কায়েশ শেখ এখনও ধরাই পড়েনি। আর এক জন কালাম শেখ পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছে। অভিযোগকারিণী অবশ্য সাক্ষ্যের শুরুতেই তিন জনকে শনাক্ত করেছিলেন। তাঁর মেয়ের সাক্ষ্যে আরও তথ্য মিলতে পারে বলে আইনজীবীদের আশা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.