|
|
|
|
|
শিশু-শিক্ষার সমীক্ষা |
|
শিশুরা কি বিদ্যালয়ে যায়? তারা ভাল ভাবে পড়তে পারছে? অঙ্ক কষতে পারছে? অ্যানুয়াল স্টেটাস অফ এডুকেশন রিপোর্ট বা অ্যাসার ফি বছর ভারতের জনগণকে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে থাকে। তিন থেকে চার বছরের কত জন শিশুর নাম অঙ্গনওয়ারি বা প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নভিুূক্ত আছে, কিংবা পাঁচ থেকে এগারো বছরের ছেলেমেয়েরা সাধারণ ভাষা পড়তে বা গণিত পারে কিনা, ২০০৫ থেকে সারা ভারতে প্রতি বছর ১৫ হাজার গ্রাম, ৬০ লক্ষ শিশুর উপর অ্যাসার নমুনাপত্রের সাহায্যে সমীক্ষা করে। এই সমীক্ষা ও রিপোর্ট তৈরি করে অ্যাসেসমেন্ট সার্ভে-ই ভ্যালুয়েশন রিসার্চ সেন্টার নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০১৩ সালে অ্যাসার-এর নবম সমীক্ষাপত্র প্রকাশের প্রক্রিয়া চলছে। সাতটি জেলায় বর্তমানে এই সমীক্ষার কাজ চলছে বলে জানান রিজিওনাল টিম মেম্বার পিয়ালী চক্রবর্তী। মালদহের গৌড় মহাবিদ্যালয়, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ, কোচবিহার মাথাভাঙা কলেজ, আলিপুরদুয়ারের বিবেকানন্দ কলেজ, মালের পরিমল মহাবিদ্যালয়ে এই কর্মসূচি চলছে। গত বছরের সমীক্ষা বলেছে, জলপাইগুড়ির সাব ডিভিশনে (সাতটি জেলা ভিত্তিক) ছয় থেকে চোদ্দো বছর বয়সি স্কুল ছুটের সংখ্যা ৩.৮৯ শতাংশ, ওই বয়সী প্রাইভেট স্কুল পড়ুয়ার সংখ্যা ১২.৪৬ শতাংশ, বর্ধমানে তুলনায় কম, ৩.৯৭ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে প্রাইভেট স্কুলের পড়াশোনার মান ভাল। এই সাধারণ ধারণা থাকা সত্ত্বেও ছাপানো পরিসংখ্যান বলছে, এই সাব ডিভিশনে তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে মাত্র ৪৭ শতাংশ ভাষার সরল অনুচ্ছেদ ও কাহিনি পড়তে পারে। বর্ধমান ও প্রেসিডেন্সি সাব ডিভিশনের সংখ্যা ৬৫ শতাংশ ও ৬৩ শতাংশ। জাতীয় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও কলেজগুলির সেবা প্রকল্পও এই সমীক্ষায় অংশ নেয় বলে জানান পিয়ালী। প্রতি বছরের মতো এ বারও অ্যাসার-এর সমগ্র রাজ্যের জেলা ভিত্তিক এই তথ্য জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রকাশিত হবে।
|
অন্ধকার থেকে আলোয় |
|
একটা রাস্তা। আঁকাবাঁকা রাস্তাটা জুড়ে নিকষ কালো অন্ধকার। সেই রাস্তায় দৌড়চ্ছে একটি ছেলে। তার দৌড়ের পথে একটা স্কুল। সেই স্কুলের একটি ঘর। সেই ঘরটিই তার বাড়ি। সেই বাড়ির দ্বিতীয় বাসিন্দা তার মা। পেশা ভিক্ষাবৃত্তি। পৃথিবীতে তার সম্বল বলতে শুধুই মা। ভাল করে হাঁটতে শেখার আগেই টাইফয়েড কেড়ে নিয়েছিল তার দুটি চোখের দৃষ্টিশক্তি। ডাক্তার বলেছিল, চিকিত্সায় ফিরবে না দৃষ্টিশক্তি। তবে কেউ যদি চোখ দান করে। দৌড়ের পথে আরেকটা স্কুল। সেই স্কুলটা জলপাইগুড়ির মাল ব্লকে। নাম রাজাডাঙ্গা পি এম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ক্লাস সিক্সের অ্যাটেনডেন্স খাতায় তার নাম লেখা আছেবিফাই মাহেলি। নিয়মিত স্কুলে আসে সে। অফ পিরিয়ড আর টিফিনের সময় পড়াশোনা করে। ওটাই তার সময়। কারণ ‘বাড়ি’তে পড়া করা সম্ভব হয় না। ক্লাসে বিভিন্ন বিষয় বুঝতে কোনও অসুবিধা হয় না, শুধু অঙ্কটা ছাড়া। ওটা বোর্ডে হয়, তাই। ব্রেইল পদ্ধতিতে চলে তার পড়াশোনা। দৌড়ের নিকষ অন্ধকার রাস্তায় আলো হাতছানি দেয় মাঝে মাঝে। সেই আলো তার হাতে তুলে দেয় পুরস্কার। নাটাগুড়িতে একটি শিক্ষক সংগঠনের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি প্রযোগিতায় সে প্রথম হয়, গানে হয় দ্বিতীয়। মাল ব্লক ছাত্র উত্সবে আবৃত্তিতে তার হাতে উঠে আসে প্রথম পুরস্কার। আলোর পাশাপাশি হাতছানি দেয় আশা। সে বলে, ‘একদিন চোখ দুটো ঠিক হয়ে যাবে। তখন দেখতে পাব সব কিছু।’ আশার হাত ধরে আসে স্বপ্ন। ২০১১-এ শেষ সরকারি আর্থিক সাহায্য পাওয়া সত্ত্বেও সে বলে, ‘বড় হয়ে শিক্ষক হতে চাই। মা সব সময় আশীর্বাদ করে। পারব নিশ্চয়ই।’ এই যুদ্ধে সহযোদ্ধা নেই? আছে বৈকি। তার স্কুলের বন্ধুরা। চাঁদা তুলে তারা কিনে দিয়েছিল জামাপ্যান্ট, চটি, স্কুলব্যাগ আর আইপড। তখন তার ক্লাস ফাইভ। এ বছরও উদ্যোগী তারা। আছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তাদের এক জন অঞ্জন দাস বলেন, ‘‘ছেলেটি যাতে সর্বশিক্ষা মিশন থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সাহায্য পায়, তার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ চেষ্টা করছে সে-ও। অন্ধকার পেরিয়ে আলোয় পৌঁছতে তাকে হবেই।ফাইট, বিফাই ফাইট’।
|
পঞ্চানন বর্মার প্রয়াণ দিবস |
|
নব প্রতিষ্ঠিত কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় মনীষী রায়সাহেব ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার ৭৯তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে মনোজ্ঞ আলোচনাচক্র আয়োজন করেছিল। উপস্থিত ছিলেন রাজবংশী অকাদেমির চেয়ারম্যান প্রাক্তন সাংসদ প্রসেনজিত্ বর্মন, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান গিরীন্দ্রনারায়ণ রায়, বাংলা বিভাগের প্রধান নিখিলেশ রায়, ও পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের কো-অর্ডিনেটর আনন্দগোপাল ঘোষ। আলোচনাচক্রের উদ্বোধক ছিলেন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। স্বাগত ভাষড়ে উপাচার্য ডঃ ইন্দ্রজিত্ রায় বলেন, ‘মনীষী পঞ্চানন বর্মা সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যেই এই আলোচনাচক্রের আয়োজন। পঞ্চানন বর্মার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন গিরীন্দ্রনারায়ণ রায়। প্রসেনজিত্বাবুর বক্তব্যে পঞ্চানন বর্মার প্রাসঙ্গিকতা ও বর্তমানে রাজবংশী সমাজে সংকটের কথা ধরা পড়ে। নিখিলেশ রায় জানান, পঞ্চানন বর্মার জন্মদিন ও তিরোধান সর্বত্র পালন করা উচিত। এই ব্যক্তিত্বের মূল্যায়ন করেন আনন্দগোপাল ঘোষ।
|
কৃষকদের জন্য কর্মশালা |
খড়িবাড়ি-ফাঁসিদেওয়া ব্লক কৃষি উপদেষ্টা কমিটির উদ্যোগে একদিনের কৃষি কর্মশালার আয়োজন করা হয় নাজিরজোত প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। কর্মশালার উদ্বোধন করেন ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক সুনীল তিরকি। এখানে প্রায় ১৫০ জন কৃষককে কৃষি দফতরের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্যশস্য উত্পাদন বৃদ্ধির বিভিন্ন কলাকৌশল নিয়েও আলোচনা করা হয়। আসন্ন রবি মরসুমে গম ও বোরো ধান চাষ সম্পর্কে ২২টি ফার্মার্স ক্লাবের কৃষক প্রতিনিধিদের জানানো হয়। শস্য বৈচিত্রায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ সম্পর্কেও চাষিদের অবহিত করা হয় বলে জানান খড়িবাড়ি-ফাঁসিদেওয়া ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা মেহফুজ আহমেদ। কর্মশালাতে খড়িবাড়ি ব্লকের বেশ কয়েকটি ক্লাবকেও পুরস্কৃত করা হয়। |
|
|
|
|
|