ছত্তীসগঢ়ের এক সরকারি হাসপাতাল থেকে অপহৃত এক সদ্যোজাতের খোঁজ মিলল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের আমটোনা গ্রামে। তাকে অপহরণের অভিযোগে ওই গ্রাম থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে সঞ্চিতা বিবি নামে এক মহিলাকে। সোমবার রাতের ঘটনা। পুলিশের দাবি, জেরায় সঞ্চিতা অপরাধের কথা কবুল করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১১ সেপ্টেম্বর ছত্তীসগঢ়ের দুর্গ জেলা হাসপাতালে ভিলাইয়ের সুপেলা গ্রামের বাসিন্দা প্রেমিনি যাদব একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। এক ঘণ্টা পরে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয় তার দাদু-দিদিমার হাতে। অভিযোগ, ওই সময় টিকা খাওয়াতে হবে বলে সদ্যোজাতকে নিয়ে উধাও হয়ে যায় সঞ্চিতা বিবি। তিনি নিজেকে ওই হাসপাতালের একজন নার্স হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। এর পরে শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় সিটি কোতোয়ালিপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব নেয় ভিলাই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সঞ্চিতা ওই হাসপাতালের নার্স নন। তাঁর মোবাইলের সূত্র ধরে বসিরহাট থানার পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে গ্রেফতার করা হয় সঞ্চিতাকে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় সঞ্চিতা জানিয়েছেন, তিনি মুম্বইয়ের চেম্বুরের বাসিন্দা। আমটোনার আবদুল্লা মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয় চেম্বুরের একটি হোটেলে। দু’জনের বিয়ে হয়। ভিলাইয়ে একটি নার্সিংহোমে কাজ নেন সঞ্চিতা। ওই নার্সিংহোমের কিছুটা দূরেই দুর্গ জেলা হাসপাতাল। শারীরিক কারণে তাঁর মা হওয়া সম্ভব নয় জানতে পেরে এবং শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তিনি শিশুটিকে চুরি করেন। তার পরে স্বামীর সঙ্গে চলে আসেন বসিরহাটে। সঞ্চিতার এই জবানবন্দি কতদূর সত্য তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সঞ্চিতা ও শিশুটিকে মঙ্গলবার বসিরহাট আদালতে হাজির করানো হয় ট্রানজিট রিমান্ডে এ দিনই দু’জনকে নিয়ে ছত্তীসগঢ় রওনা হয় সেখানকার পুলিশ।
ভিলাই ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার শিউ নারায়ণ সিংহ বলেন, “শিশুটির খোঁজে ছত্তীসগঢ় ও মুম্বইয়ে অনেক জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। তার পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বসিরহাটে এসে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়।” শিশুটিকে তাঁর বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। |