সম্পাদক সমীপেষু...
এত শব্দ কোথাও নেই
মধুমতী দত্ত ও পরিমল ঘোষ লিখিত ‘কলকাতার মানুষ কানে শুনতে পায় না’ (২০-৮) শীর্ষক নিবন্ধ প্রসঙ্গে আমার মতামত।
শব্দ দূষণের সমস্যা বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আমাদের ঠাকুমাদের বলতে শুনতাম, তাঁরা সাপ যাওয়ার খস্খস্ শব্দ শুনতে পেতেন। বর্তমানে আমরা মানুষের হাঁটার শব্দও অনেকে শুনতে পাই না। এটা আমাদের জানা যে, বধিরতার কোনও চিকিৎসা নেই এবং ‘হিয়ারিং এড’ও স্বাভাবিক শ্রবণের বিকল্প নয়। অথচ আমরা নির্বিকার।
লেখকদ্বয় শহর কলকাতার হর্ন-সমস্যার কথা বলেছেন। গ্রাম ও মফস্সলগুলির সমস্যাও গুরুতর। বর্তমানে মোটরসাইকেল, চার চাকা গাড়ির বিপ্ হর্ন কান-ফাটা তীব্রতা অর্জন করেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ডাবল ও ট্রিপল পাওয়ার আওয়াজের, অত্যন্ত শ্রুতিক্লেশকর। মোটরসাইকেলচালক কানে হেডফোন লাগিয়ে, হর্ন বাজিয়ে, তীব্র গতিতে চলচ্চিত্র অভিনেতার ভঙ্গিতে ধাবিত হন!
চার চাকার ড্রাইভার ও আরোহী থাকেন কাচের জানালার ভেতর। জেনে না-জেনে তীব্র হর্ন বাজিয়ে পথচারীর কানের অপূরণীয় ক্ষতি করেন। বাস ও লরির বিচিত্র এবং অতি-কর্কশ হর্ন যে-ভাবে প্রতিমুহূর্তে বাজতে থাকে, তাতে রাস্তায় বের হওয়া দুষ্কর। সরকারি গাড়িগুলিও এই প্রতিযোগিতায় কম যায় না। গাড়ির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। সেই তুলনায় রাস্তা বিভিন্ন কারণে সরু হচ্ছে। প্রতিমুহূর্তে অস্বীকৃত হচ্ছে পথচারীর অধিকার। সরকারি নিয়ন্ত্রণ বা নজরদারির কোনও অস্তিত্ব নেই।
যাঁদের অন্যান্য রাজ্যে যাতায়াত আছে, তাঁরা জানেন, অন্য কোনও রাজ্যবাসী আমাদের মতো হর্ন-দানবের অত্যাচারে এতটা বিপন্ন নয়। অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ যেমন সরকারের কর্তব্য, তেমনই আমাদেরও কাজ হল জনসচেতনতা ও জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা।
কিছুই তো হল না
দিল্লির গণধর্ষণ এবং খুনের পর প্রধানমন্ত্রীর ডাকে দিল্লিতে রাজ্যের সব মুখমন্ত্রীকে নিয়ে বিচার ব্যবস্থা এবং বিচারালয় বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। আমাদের আইন এবং বিচার বিভাগীয় মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সেখানে যোগ দেন। কথা হয় নতুন আদালত গঠনের এবং তার পরিকাঠামো ও অন্যান্য বিষয়ের উন্নতি নিয়ে। উনি ফিরে আসেন এবং সেই মতো ব্যবস্থাও নেন।
পশ্চিমবঙ্গে মোট ১৫১টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট ছিল। সেগুলোতে স্থায়ী বিচারক ছিলেন। এবং অবসরের পর দু’বছর পর্যন্ত কাজ করার চুক্তিতে কর্মচারীও ছিলেন। নিয়মিত বিচারও হত। এর মধ্যে ৮৮টি কোর্টকে স্থায়ী এবং নিয়মিত করা হল। বিচারক আগেও স্থায়ী ছিলেন, এখনও তাই। কিন্তু স্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ হল না। কেউ কেউ অনেকটা বয়সে অসমর্থ দেহ ও মন নিয়ে কোনও রকমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সামগ্রিক পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে আমি আমার জেলার বাস্তব অবস্থাটা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ২০১১-র লোকগণনা অনুসারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার লোকসংখ্যা ৫৫ লক্ষ। এখানে ৯টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট ছিল। এর মধ্যে একটি কোর্ট তুলে দিয়ে একটি সিনিয়র ডিভিশন কোর্ট সৃষ্টি করা হল। ৩টি কোর্ট স্থায়ী এবং নিয়মিত অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ কোর্টে রূপান্তরিত হল। বাকি ৫টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টকে স্থায়ী ও নিয়মিত করা হল। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই এ পর্যন্ত স্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ করা হয়নি। অর্থাৎ যা ছিল, যেমন ছিল, কার্যক্ষেত্রে সবই ঠিক তেমন রইল। কিছু কৌশলগত পরিবর্তনই সার।
রাজনীতি?
দমদমের ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলের ঘটনাবলি অত্যন্ত মর্মান্তিক। আশ্চর্য হয়েছি ঘটনার সময় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং জনতার আদেশ পালনে নিষ্ঠা ও অধ্যক্ষকে প্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে অদ্ভুত সব ধারাতে মামলা করা দেখে। রাজনৈতিক ইঙ্গিত ছাড়া পুলিশের পক্ষে এমন আচরণ কি সম্ভব? এখানে মিশনারি স্কুলের উপরে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের পরিকল্পনা কাজ করছে না তো? তৃণমূল নেতার মন্তব্যে ও সি পি এম নেতার জবাবে ইতিমধ্যেই দমদম কাণ্ডে রাজনীতির রং লেগেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.