পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে নালা-ডোবা শুকনো। বাধ্য হয়ে নাকাশিপাড়ার চাষিরা পাট পাচ পচাতে দিয়েছেন ভাগীরথীর জলে। জল বাড়ায় পচা পাট ও দূষিত জল ঢুকেছে ভাগীরথীর জল প্রকল্পের এলাকায়। ফল স্বরূপ ওই ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের জল সরবরাহ। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে সমস্যায় কয়েক লক্ষ মানুষ। বাধ্য হয়ে তাঁর দূষিত আর্সেনিকযুক্ত জল পান করছেন। দফতরের নদিয়া ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার চম্পক ভট্টার্চায বলেন, “ভাগীরথীর যে অংশে জল প্রকল্প রয়েছে তার অল্প দূরে চাষিরা পাট পচাতে দিয়েছেন। সেই দূষিত জল প্রকল্পের জলের সঙ্গে মিশেছে। তাই প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে আপাতত জল সরবরাহ করা হচ্ছে না।”
২০১১ সালে নাকাশিপাড়ার কাশিয়াডাঙায় ওই জল প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। ১৪২টি গ্রামে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে আর্সেনিকমুক্ত পরিশোধিত জল পৌঁছয়। গোটা ব্লকটাই আর্সেনিকপ্রবণ। আর্সেনিকের বিষের দাপট থেকে মানুষকে রেহাই দিতেই ওই জল প্রকল্প চালু হয়। জল সরবরাহ থমকে যাওয়ায় মানুষ বাধ্য হয়ে আর্সেনিক মিশ্রিত জল পান করছেন। চ্যাঙা গ্রামের বাসিন্দা আলাউল হক বলেন, “জলকষ্টে রয়েছি আমরা। অব্যবহৃত অবস্থায় পরে থাকায় গ্রামের বেশিরভাগ নলকূপই বিকল। কষ্টেসৃষ্টে জল জোগাড় করতে হচ্ছে। তবুও বিশুদ্ধ জল মিলছে না।” সমস্যার কথা মেনেছেন নাকাশিপাড়ার বিডিও হেমন্ত ঘোষ। তিনি বলেন, “জলাভাবে এলাকায় এক হাজারের বেশি কৃষক ওখানে পাট পচাতে দিয়েছেন। ওই পাট তুলে ফেললে নষ্ট হয়ে যেত। তাতে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত এলাকার চাষিদের সচেতন করার কথা বলেছি। যাতে পরের বার একই ভুল না হয়। তবে চলতি মাসের মাসের মধ্যেই চাষিরা পাট তুলে নেবেন বলে জানিয়েছেন।” স্থানীয় বিধায়ক কল্লোল খাঁ-ও সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “জলের অভাবে চাষিরা নদিতে পাট পচাতে দিয়েছেন। আগামী বছর যাতে এমনটা না হয় তার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বাসিন্দারা জলকষ্টে রয়েছেন।” প্রকল্পের জল শোধন করে কবে চালু হবে জল সরবারাহ? এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “চলতি মাসের মধ্যে চাষিরা পাট তুলে নেওয়ার পর পাম্প দিয়ে প্রকল্প-এলাকায় ঢুকে যাওয়া দূষিত জল বার করতে করে নতুন জল ঢোকাতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ লেগে যাবে।” |