ফর্মুলা ওয়ান ক্যালেন্ডারে সিঙ্গাপুর গ্রাঁ প্রি আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। কারণ এখানে রেসটা রাতে হয়। ঝলমলে আলোয় সাজানো সিঙ্গাপুরের আকর্ষণীয় স্কাইলাইনের পটভূমিকায় রেস সত্যিই মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা। যদিও এ বারের সিঙ্গাপুর গ্রাঁ প্রি-টা ভারতীয় এফ ওয়ান টিমের কাছে একেবারেই মনে রাখার মতো হল না।
অথচ চলতি মরসুমের প্রথমার্ধে ফোর্স ইন্ডিয়া বেশ ভাল ফর্মে ছিল। পিরেলি চাকায় গাড়িগুলো ভাল চলছিল, স্পেনে চতুর্থ হয়ে শেষ করেছিলেন পল দি’রেস্তা, মোনাকোয় পাঁচ নম্বরে ছিলেন আদ্রিয়ান সুটিল। ধারাবাহিক ভাবে পয়েন্ট তুলে অভিজ্ঞ ম্যাকলারেন টিমকেও একটা সময়ে টপকে গিয়েছিল ফোর্স ইন্ডিয়া। এই রেসটা তাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল পঞ্চম স্থানের লড়াই।
মরসুম-শুরুতে এগিয়ে থাকলে কী হবে, খুব তাড়াতাড়ি সব কিছু বদলে গেল। সিলভারস্টোনে ব্রিটিশ গ্রাঁ প্রি-তে পিরেলি চাকা ব্যর্থ। জার্মানিতে পরের রেস থেকে যার জন্য নতুন, আরও সুরক্ষিত চাকা ব্যবহার করা হচ্ছে। এই চাকাগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধে হওয়ায় ফোর্স ইন্ডিয়ার খারাপ ফর্ম চলছেই। শনিবার সিঙ্গাপুর রেসের যোগ্যতা অর্জন পর্বটাও খুব ভাল গেল না। যার পরে সুটিল স্বীকার করে নিলেন, “আমাদের টিমের ভাগ্য পাল্টে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ নতুন চাকা।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “টিমকে এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে। কিন্তু পারছি কই? তবে হ্যাঁ, আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।”
লড়াই চালানোটা কিন্তু সহজ হবে না। কারণ ২০১৪-এ পাল্টে যাবে এফ ওয়ানের গাড়ি ডিজাইনিংয়ের নিয়ম। যার জন্য সব টিমই নতুন গাড়ি তৈরির দিকে ফোকাস করে যাচ্ছে, যাতে ২০১৩-র গাড়িগুলো আবার নতুন করে ডিজাইন না করতে হয়। আর এই জন্যই পঞ্চম স্থানের লড়াইয়ের আগে খুব ভাল জায়গায় নেই ফোর্স ইন্ডিয়া। “২০১৩-র চাকা দিয়েই আমাদের গাড়িগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। এখন আর সেটা পাল্টানো যাবে না, কারণ এখন আমাদের ফোকাস করতে হবে পরের বছরের গাড়ির উপর,” বলছিলেন ফোর্স ইন্ডিয়ার ভাইস টিম প্রিন্সিপ্যাল রবার্ট ফার্নলি। সঙ্গে তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “ম্যাকলারেন বা অন্য বড় টিমের মতো অর্থ আমাদের নেই। তাই একটা বছরের জন্য নতুন গাড়ি তৈরি করার ক্ষমতাও নেই। আসলে এফ ওয়ানের দুনিয়াটাই এ রকম। তবে ম্যাকলারেনকে হারিয়ে পাঁচে শেষ করতে পারলে দারুণ হত।”
মরসুমটা অবশ্য খুব খারাপও হবে না। কারণ চ্যাম্পিয়নশিপে ছয়ে শেষ করার মতো পয়েন্ট ফোর্স ইন্ডিয়ার আছে। যদিও সুটিল এখানে দশে শেষ করায় আর দি’রেস্তা রেস শেষ না করতে পারায় তাঁদের পঞ্চম স্থানের লড়াই শেষ। ম্যাকলারেনের দুই চালক জেনসন বাটন আর সের্জিও পেরেজ সেখানে রেস শেষ করলেন সাত আর আটে। যার ফলে তাদের ‘লিড’ পাঁচ পয়েন্ট থেকে বেড়ে দাঁড়াল চোদ্দো।
ফর্মুলা ওয়ানের বাকি পৃথিবীতে অবশ্য বিশেষ বদল নেই। তিন বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সেবাস্তিয়ান ভেটেল এখানেও জিতে চতুর্থ খেতাবের দিকে এগোলেন। দুই আর তিনে ফের্নান্দো আলোন্সো (ফেরারি) এবং কিমি রাইকোনেন (লোটাস)। |