তবু দাক্ষিণাত্যের সমর্থন পাচ্ছেন, বিস্ফোরক মোদী
‘শ্রীনির মদতেই এত বড় কেলেঙ্কারি’
ত দিন ঠারেঠোরে যে অভিযোগটা ভারতীয় ক্রিকেটমহলের অন্দরমহলে ঘুরছিল, ললিত মোদী রবিবার সেটাকে প্রকাশ্যে এনে ফেললেন। পরিষ্কার ঘোষণা করে দিলেন, আইপিএল সিক্সে গুরুনাথ মইয়াপ্পনের পক্ষে এত বিশাল দুর্নীতি চালানো সম্ভবই হত না, যদি না তাঁর উপর শ্বশুরমশাই নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের ‘আশীর্বাদ’ থাকত।
সেশন বেটিং (যা কার্যত ফিক্সিং) ও প্রতারণার অভিযোগে শনিবার গুরুনাথের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা করেছিল মুম্বই পুলিশ। এবং প্রাক্তন আইপিএল কমিশনার সেই নাটকে নতুন মশলা সংযোজন করলেন বিস্ফোরক অভিযোগ এনে। এ দিন সন্ধেয় একটা চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে বসে মোদী বলে দেন, “এত বড় একটা কলঙ্ক, এত বড় মাপের একটা চক্রান্ত গুরুনাথ করতে পারত নাকি শ্রীনি-র মদত না থাকলে? ভেবে দেখুন, ম্যাচ শুরুর আগেই গুরুনাথ বলে দিচ্ছে ওর টিম একশো চল্লিশ করবে। টিম করছে একশো একচল্লিশ। শ্রীনির অজান্তে ওর জামাই এ সব করেছে বলে বিশ্বাস করি না। বরং বলব, শ্রীনির আশীর্বাদ ছাড়া এ জিনিস হতে পারে না।”
এবং প্রবল বিতর্কিত বোর্ড প্রেসিডেন্টকে নিয়ে এমন মন্তব্যের পরপরই আরও একটা বিতর্কিত টুইট করে বসেন মোদী। লিখে দেন, ‘দক্ষিণের একটা শহরে কয়েক জন ক্রিকেটার বাড়ি উপহার পেয়েছে। সেগুলো কোথা থেকে এসেছে, মিডিয়ার খোঁজ নিয়ে দেখা উচিত। অনেক কিছুই কিন্তু তা হলে ফাঁস হয়ে যাবে।”
মোদী শুধু নন। গুরুনাথের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশের পর নেমে পড়েছেন আইএস বিন্দ্রাও। অর্থাৎ, এক কথায় রবিবার জোড়া ফাঁসে পড়ে গেলেন শ্রীনি। প্রাক্তন আইপিএল কমিশনার যদি বলে দেন, “কারও জামাই এ ভাবে ভারতীয় ক্রিকেটকে চালাতে পারে না। এটা ঘোরতর অন্যায়।” তা হলে বিন্দ্রা আবার ক্রোনিয়ে-কাণ্ডকে টেনে এনে লিখেছেন, ‘শ্রীনিবাসন-গুরুনাথকে জড়িয়ে এ বারের আইপিএল গড়াপেটাটা ক্রোনিয়ে কেলেঙ্কারির থেকেও অনেক বড়।’
চতুর্দিকে তীব্র সমালোচনা। বোর্ড মসনদে বসে পড়া নিয়ে রীতিমতো তুলোধোনা চলছে। দিল্লি আদালতে ভাগ্য নির্ধারনের উপর স্থগিতাদেশ পেয়ে মোদীও নিজেকে ‘গ্ল্যাডিয়েটর’ বলতে শুরু করে দিয়েছেন। গুরুনাথের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ার পরেও কী ভাবে চেন্নাই সুপার কিংস চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলছে, তা নিয়ে ক্রিকেটমহল প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু পরের পর এমন বিষাক্ত বাউন্সারের সামনে পড়েও শ্রীনিবাসন প্রকাশ্যে অন্তত কোনও হেলদোল দেখাচ্ছেন না। বরং দাক্ষিণাত্ম্যে তাঁর প্রভাব যে চার্জশিট-কাণ্ডের পরেও এতটুকু কমেনি, বুঝিয়ে দিচ্ছেন। চার্জশিটের পর শ্বশুর-জামাইকে কী রকম টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, শ্রীনি বলতে চাননি। কিন্তু একটি সংবাদপত্রকে বলে দিয়েছেন, চেন্নাই সুপার কিংসের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নই তোল যায় না কারণ চার্জশিট সিএসকে-র নামে পড়েনি। তাঁর বক্তব্য খুব পরিষ্কারকোনও প্লেয়ার যখন চার্জশিটে অভিযুক্ত নয়, ফ্র্যাঞ্চাইজির নামে যখন কোনও চার্জশিট পড়েনি, তা হলে গুরুনাথের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি ভুগবে কেন? তা ছাড়া গুরুনাথকে নিয়ে যখন আদালত এখনও কোনও রায় দেয়নি। অন্য দিকে, গোয়া ক্রিকেট সংস্থা থেকে হায়দরাবাদ, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে কর্নাটক চার্জশিট-কাণ্ডের পরেও সংস্থার পদাধিকারীরা জানিয়ে দিচ্ছেন, চার্জশিটে যখন শ্রীনির নামে নেই, তখন তাঁর উপর থেকে সমর্থন তুলে দেওয়ার প্রশ্নও নেই।
কর্নাটক ক্রিকেট সংস্থার সচিব জাভাগল শ্রীনাথ যেমন। প্রাক্তন পেসার সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, “কে মইয়াপ্পন? ওর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” গোয়া, যাদের কিনা মনোহরপন্থী সংস্থা হিসেবে কয়েক দিন আগেও ধরা হচ্ছিল, তাদের প্রেসিডেন্ট বিনোদ ফাড়কে বলছেন, “আমরা শ্রীনির সঙ্গেই আছি। শ্রীনিবাসনের জামাইয়ের নামে চার্জশিট পড়েছে, শ্রীনিবাসনের নামে তো নয়।” কিন্তু বোর্ডমহলের কেউ কেউ দাক্ষিণাত্যে পাশে থাকাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এক জন বলেও দিলেন, “আগে শুধু সুপ্রিম কোর্টের ব্যাপার ছিল। এখন দিল্লি আদালতও যোগ হয়েছে। শ্রীনি আগে এই দু’টো জায়গায় বাঁচুক, তার পর ও সব সমর্থন আর মহাবলীপুরমের প্রশ্ন।”

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.