সম্পাদক সমীপেষু...
বিদেশি ডাক্তার
অরবিস’ নামের উড়োজাহাজ নেমেছে কলকাতার নেতাজি সুভাষ বিমান বন্দরে। সেখানে নাকি জটিল চক্ষু রোগের চিকিত্‌সা ও অপারেশন হবে। সহযোগী হিসাবে কলকাতার এক প্রাইভেট হাসপাতালের নাম আছে।
বিদেশি এই ডাক্তারবাবুদের কে অনুমতি দিল আমাদের দেশে এসে রোগী দেখার ও অপারেশন করার। তারা কি মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অস্থায়ী রেজিস্ট্রেশন নিয়েছে? সরকার বা মেডিক্যাল কাউন্সিল কি এদের যোগ্যতা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দিয়েছে। আমাদের দেশে ন্যূনতম কিছু আইনকানুন তো উদ্যোক্তাদের জানতে হবে। রোগীরা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে যেতে চান তবে এদের টিকি ছোঁয়া যাবে তো? না কি এরা পশ্চিমি দেশ থেকে এসেছে বলে সব আইন কানুনের ঊর্ধ্বে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, আগেও এ ধরনের উদ্যোগে দেখা গেছে, জটিল রোগের অপারেশনে হাত পাকাবার জন্য বিদেশি ডাক্তাররা এখানে এসে দিব্যি কাজ করে গেছেন স্থানীয় দালাল ডাক্তারদের সাহায্যে।
কেউ কি ভেবে দেখেছেন, আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ ডাক্তাররাও বিদেশে অপারেশন তো দূরের কথা, রোগী ছুঁয়েও দেখতে পারেন না সেই দেশের মেডিক্যাল কাউন্সিলের নথিভুক্ত না-হয়ে। এবং সেটা সঙ্গতও। আমরা কিন্তু আমাদের দেশের রোগীদের ব্যাপারে যথেষ্ট সাবধানী ও যত্নশীল নই। সাহেব ডাক্তার দেখলেই গদগদ হয়ে পড়ি।
অতীতে রোগীদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার উদাহরণ আছে এবং ক্রেতা সুরক্ষা আদালত তাঁদের কোনও সুরক্ষা দিতে পারেনি। চিকিত্‌সা পেতে ইচ্ছুক জনসাধারণ যেন চিকিত্‌সিত হওয়ার আগে ডাক্তারবাবুদের এম সি আই-এর রেজিস্ট্রেশন দেখে নেন।
ফিরিয়ে আনুন
প্রতি বছরই মহালয়ার পুণ্য প্রভাতে আকাশবাণীতে বাণীকুমার রচিত, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র পঠিত ও পঙ্কজকুমার মল্লিক সুরারোপিত মহিষাসুরমর্দিনী নামে এক বিশেষ প্রভাতী অনুষ্ঠান দীর্ঘ কাল ধরে পরিবেশিত হয়ে আসছে।
সত্তর দশকে এক বছর মহালয়ায় আকাশবাণী ওই অনুষ্ঠানের পরিবর্তে ধ্যানেশনারায়ণ চক্রবর্তী রচিত ও পরিচালিত, হেমন্তকুমার মুখোপাধ্যায় সুরারোপিত ও মহানায়ক উত্তমকুমার পঠিত এক বিশেষ প্রভাতী অধিবেশন প্রচারিত করেছিল।
কিন্তু এই পরিবর্তন শ্রোতারা মেনে নিতে না-পারায় বিভিন্ন সংবাদপত্রে নানা বিদ্বজ্জনের তীব্র সমালোচনায় আবার সেই অনুষ্ঠান ফিরে আসে। নতুন অনুষ্ঠানটি প্রচারের অলক্ষ্যে চলে যায়। আকাশবাণী কর্তৃপক্ষের কাছে একান্ত অনুরোধ, ধ্যানেশনারায়ণ চক্রবর্তী রচিত ও পরিচালিত অনুষ্ঠানটি যদি মহাষষ্ঠীর প্রভাতে এক বিশেষ অনুষ্ঠান করে আবার প্রচার করেন, তা হলে আমরা এক নতুন অনুষ্ঠানের স্বাদ পেতে পারি।
বিনা মাতৃভাষা
গৌতম চক্রবর্তী (আত্মঘাতী বাংলা, ১৮-০৮) লিখেছেন ‘... বছর কয়েক আগেও অনেকে কাঁদুনি গাইতেন, ‘‘বাচ্চারা এত হ্যারি পটার আর ভ্যাম্পায়ার সিরিজ পড়ে কেন? আমাদের ঠাকুমার ঝুলি, লীলা মজুমদার, সুকুমার রায় নেই?’’ যাঁর কথা উদ্ধৃত করে গৌতমবাবু ‘কাঁদুনি গাইতেন’ বিশেষণ প্রয়োগ করেছেন, তাঁকে শতকোটি প্রণাম। এক জন মনীষী বলেছেন, নিজের ভাষার ওপর যার দরদ নেই, তার জাতীয়তাবোধের, স্বাদেশিকতার মূল্য কোথায়?
হ্যারি পটার পড়ে বুদ্ধির চর্চা হয় বটে, কিন্তু আমাদের শিশুদের প্রথম জীবনে বেশি দরকার কল্পনার চর্চা, ভাবুকতার চর্চা, বোধের চর্চা। ওই সব বই, গল্প ওদের চোখে ছবি দেয়, কল্পনা দেয়, বিস্ময় জাগায়। দরকার ‘চোখ ভোলানো নয়, চোখ ফোটানো। আর দেহের চোখ অত্যধিক আদর পেলে মনের চোখ কুঁড়ে হয়ে পড়ে, কল্পনা সফল হতে পারে না।’ তাই চাই রূপকথা, কল্পনা জগতের পরম ঐশ্বর্য। চাই ‘ইনটুইশন’ যা যোগীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ তাকে দেবে।
এক বিশিষ্ট প্রবাসী বাঙালি কবির হার্দিক যন্ত্রণার কথা এখানে শোনাচ্ছি ‘... নতুন কলকাতা আমাকে পীড়া দেয়। কলকাতার মানুষ তার ভাষা ভুলে গিয়েছে। আমার তো ভাষাগত আত্মপরিচয়। তাই ভয় হয়, কলকাতায় এলে বাংলা ভুলে যাব।... স্পষ্ট বলছি, জমানা বদলের সঙ্গে সঙ্গে মানুষজন যে ভাষায় কথা বলছেন, আমার কাছে তা অকল্পনীয়। বিপুল জনগণ aphasia-য়, মানে এক ভাষাহীনতায় এসে পৌঁছেছে। এই পরিবর্তন আমার কাম্য ছিল না।’—অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত।
ঝড়খালি নিয়ে
ঝড়খালি পর্যটন হাবের বিষয়ে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, (আ বা প, ১৩-৯) তাতে বনমন্ত্রী হিসাবে আমাকে উদ্ধৃত করে যে কথা বলা হয়েছে, তা ঠিক নয়। সাংবাদিক মহাশয় কিছু দিন আগে এই বিষয়ে জানতে চাইলে বলেছিলাম, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখেই পর্যটন হাব হবে। ঝড়খালি পর্যটন হাবের বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ অবগত নই। বন্যপ্রাণ বিভাগে এসে থাকলে আধিকারিকগণ বিষয়টি দেখবেন।
প্রতিবেদকের উত্তর
খবরটি প্রকাশিত হওয়ার দিন কয়েক আগে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মনকে টেলিফোন করা হয়েছিল। তিনি জানিয়েছিলেন, পর্যটন দফতর নিশ্চয় ঝড়খালিতে বিস্তারিত সমীক্ষা করেই ট্যুরিস্ট হাব গড়ার কথা ভাববে। সমীক্ষার পরেই বোঝা যাবে পর্যটন দফতর সেখানে ঠিক কী করতে চায়। বন দফতর ছাড়পত্র দেবে তার পরে। বন্যপ্রাণের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে ট্যুরিস্ট হাব গড়া যে উচিত নয় তা-ও বলেছিলেন তিনি।

অবাস্তব রায়
অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়ের ‘শুধু ওঁদের শেখাব? শিখব না?’ (২৮-৮) পড়ে মনে প্রশ্ন এল: মাত্র ৪০০ পরিবারের অন্ধ বিশ্বাসের ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বক্সাইট সংগ্রহ কি কোনও দিন মানুষের কোনও কাজে আসবে না? গণতন্ত্রে ‘দ্য গ্রেটেস্ট গুড অব দ্য গ্রেটেস্ট নাম্বার’ একটি লক্ষ্য বলে জানতাম। সত্যিই কি আমাদের সুপ্রিম কোর্ট, যেটি নাকি দেশের বিবেক, এই রকম একটি রায় দিতে পারে?
অতিথি
তপনকুমার মল্লিকের ‘অতিথি কেন’ (২০-৮) প্রসঙ্গে বলি, পরিবারে নবজাতক এলে তাকে অতিথি বলার পিছনে একটি বিশ্বাস কাজ করে। তা এই যে, মানুষ কিছু দিনের জন্য ইহলোকে আসে। ভবলীলা শেষ হলে পরলোকে চলে যায়। অতিথিও কিছুক্ষণের জন্য বাড়িতে আসে। চলেও যায়। এই সাদৃশ্য কল্পনায় নবজাতককে অতিথি বলা হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.