আকাশ দূর অস্ত্, এ ঘরে দিনের আলোই ঢোকে না। বাতানুকূল ব্যবস্থায় সামান্য সমস্যা হলেই রীতিমতো হাঁসফাঁস অবস্থা হয়। কারণ, এ ঘরে কোনও জানলা নেই। মহাকরণে দোতলার মাঝখানে এই ঘরটিই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের না হলেও, অন্য উপায় না থাকায় এ ঘরেই তাঁর অফিস চালাতে হচ্ছে। কারণ, এই জায়গাটিই দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে মুখ্যমন্ত্রীর ঘর।
তবে, ঠিক দু’সপ্তাহ পরে আগামী ৫ অক্টোবর থেকে এ ছবি সম্পূর্ণ পাল্টে যাচ্ছে। হাওড়ার ‘নবান্ন’য় উঠে আসছে মহাকরণ। ‘নবান্ন’র ১৪তলায় হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর ঘর। সে ঘরে প্রাকৃতিক আলো ঢুকবে তার নিজস্ব নিয়মে। আকাশ দেখা যাবে। ঘরের সঙ্গে থাকছে বড়সড় এক ঝুলবারান্দা। বারান্দা থেকে সোজা দেখা যাবে হুগলি নদী, বিদ্যাসাগর সেতুর রাস্তা আর ওপারে কলকাতাকে। এই তলায় মুখ্যমন্ত্রী একাই বসবেন। সঙ্গে থাকবেন তাঁর সচিব, সচিবের আপ্তসহায়ক, মুখ্যমন্ত্রীর আপ্তসহায়ক এবং যুগ্ম সচিব।
মুখ্যমন্ত্রীর বসার ঘরের লাগোয়া অংশে রয়েছে তাঁর অ্যান্টি চেম্বার। অ্যান্টি চেম্বারের পাশেই রয়েছে লিফ্ট। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের বাঁ দিকে রয়েছে সিঁড়ি। সিঁড়ির পাশে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব আর তাঁর আপ্তসহায়কের ঘর। মুখ্যমন্ত্রীর অ্যান্টি চেম্বারের পিছনেই রয়েছে চওড়া বারান্দা। বারান্দার ওপারে, অর্থাৎ ভবনটির পিছনের অংশে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর আপ্তসহায়ক এবং যুগ্ম সচিবের ঘর। হাতে আর সময় বেশি নেই। এখন তাই দিনরাত এক করে কাজ হচ্ছে ‘নবান্ন’য়। |
ভবনটির পিছনে বাঁ দিকের অংশে থাকছে কনফারেন্সের বড় ঘর। তার পাশেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসা মন্ত্রীদের অপেক্ষার ঘর। সেই ঘরের পাশে রয়েছে আরও একটি চওড়া বারান্দা। বারান্দার ডান দিকে তৈরি হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎপ্রার্থীদের জন্য একটি বসার ঘর। বিদ্যাসাগর সেতুর অ্যাপ্রোচ রোড থেকে সরাসরি দেখা যায় বলে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য ভবনটির ১৪তলার ডান ও বাঁ দিকের অনেকটা অংশ সম্পূর্ণ ফাঁকা রাখা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, এখানে সর্বক্ষণ সশস্ত্র পুলিশ পাহারা দেবে।
মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের নীচের তলায় (১৩তলা) বসবেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডি জি। এ ছাড়া, ১৩তলার বড় জায়গা জুড়ে থাকছে সিএমও বা মুখ্যমন্ত্রীর অফিস। মুখ্যসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের বসার জায়গা হয়েছে ভবনের সামনের অংশে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের ঠিক নীচে। রাজ্য পুলিশের ডিজি-র ঘর করা হয়েছে ভবনের একেবারে ডান দিকে। এ ছাড়াও ওই তলায় থাকছে ক্যাবিনেট সচিবের অফিস, মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের ওএসডি-দের বসার জায়গা, যুগ্ম সচিবের বসার জায়গা এবং সাধারণ অফিস। এর সঙ্গে থাকছে একটি বড় মিটিং-এর ঘর। এইচআরবিসি সূত্রের খবর, পাঁচ থেকে ১২তলার মধ্যে অন্য মন্ত্রীদের বসার জায়গা হবে। |