সারদা-কাণ্ডে তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হল। শনিবার সল্টলেক কমিশনারেটে ডেকে পাঠিয়ে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আজ, রবিবারও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে জানিয়েছেন সল্টলেকের গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষ।
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে গত ২৯ এপ্রিল সল্টলেক কমিশনারেটে এক বার জেরা করা হয়েছিল তৃণমূলের এই সাংসদকে। তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতার একাধিক থানায় সারদা গোষ্ঠীর সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তা ছাড়া, সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন তাঁর মিডিয়া ব্যবসার ভরাডুবির জন্য কুণালবাবুকে দায়ী করে সিবিআইকে চিঠিও লিখেছিলেন।
শনিবার বেলা এগারোটা নাগাদ সল্টলেক কমিশনারেটে ঢোকার মুখে কুণালবাবু অভিযোগ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। সঙ্গে এ-ও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য প্রশাসনের উপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আমি সিবিআই তদন্তের মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত।” কুনালবাবু তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অভিযোগকারীদের একহাত নেন। তাঁর দাবি, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে সারদা কাণ্ড নিয়ে অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের সম্পর্ক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
কিন্তু এক বার জেরা করার পরে কুণালবাবুকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করার দরকার হল কেন? পুলিশের বক্তব্য, সারদা গোষ্ঠীর একটি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের দায়ের করা বেতন সংক্রান্ত মামলায় নতুন কিছু তথ্য হাতে এসেছে। গত কয়েক দিন ধরে সেই সংবাদমাধ্যমের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারই সূত্র ধরে ফের সারদা গোষ্ঠীর মিডিয়া গ্রুপের সিইও হিসেবে কুণালবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল এ দিন। কুণালবাবু জানান, “শুক্রবার রাত পৌনে বারোটা নাগাদ সল্টলেক কমিশনারেট থেকে ফোন পান তিনি। শনিবার তাঁকে কমিশনারেটে যেতে বলা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পরে বিকেল সোয়া তিনটে নাগাদ বেরিয়ে কুণালবাবু জানান, তাঁকে যে সব প্রশ্ন করা হয়েছে, সেগুলির পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলে তাঁর মনে হয়নি। পুলিশ সূত্রে অবশ্য খবর, প্রায় চার ঘণ্টা কমিশনারেটে থাকলেও কুণালবাবুকে দীর্ঘ সময় একটি ঘরে একা বসিয়ে রাখা হয়।
কুণালবাবুর পরে এ দিনই সারদা গোষ্ঠীর একটি সংবাদমাধ্যমের পদস্থ কর্তা অনিন্দিতা কাজীকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে অনিন্দিতাদেবী জানান, ওই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তিনি দীর্ঘ দিন যুক্ত। সেই সূত্রেই পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। |