দুই ইয়ারের ভোট তরজা
কংগ্রেস-তৃণমূল কাজিয়ায় ফায়দা তোলায় আশায় বাম
ন্দোলন হোক বা নেহাতই পাড়ার রক্তদান শিবির। ডালখোলায় কংগ্রেসের যে কোনও কর্মসূচি মানেই সুভাষ-তনয়ের অনিবার্য যুগলবন্দি। এবারের পুরসভা নির্বাচনেও সেই যুগলবন্দি অটুট, তবে ভিন্ন সুরে এবং স্বরে। দু’জনেই শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দুই দলের প্রতীক নিয়ে মুখোমুখি লড়াই করছেন। এক সময়ে দলের অন্দরেও দুই অসম বয়সী নেতার ‘বন্ধুত্ব’ ছিল চর্চার বিষয়। এক জন পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান। অন্য জন প্রাক্তন। পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান পঞ্চাশোর্ধ সুভাষ গোস্বামী এবারেও নিজের ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী। তবে প্রাক্তন চেয়ারম্যান চল্লিশ পেরোনো তনয় দে বছর তিনেক আগে শিবির পাল্টে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। নিজের ওয়ার্ড মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায় প্রার্থী হয়েছেন পুরোনো ‘বন্ধুর’ ওয়ার্ডে। আর তাতেই জমে উঠেছে ডালখোলা পুরসভার লড়াই। শহরের সব নজরই যেন এই ওয়ার্ডে।

শেষ লগ্নের প্রচারে।—ফাইল চিত্র।
অন্য ওয়ার্ডও তো ছিল, সব ছেড়ে খোদ বিদায়ী চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডে কেন? যতবারই এই প্রশ্ন শোনেন, মুচকি হেসে তনয়বাবু বলেন, “জনগণ চেয়েছে তাই।” তবে, তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, একসময়কার ‘সতীথর্’কে জব্দ করতেই এই সিদ্ধান্ত। অন্য দিকে এই ঘটনায় মুচকি হাসছেন সুভাষবাবুও। ২০০৮ সালে ১৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস একক ভাবে ৯টি ওয়ার্ডে জেতে। সুভাষবাবু চেয়ারম্যান হন। বছরখানেক পরেই সুভাষবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে, ‘বিক্ষুব্ধ’ তনয়বাবু ৩ কাউন্সিলর সহ কংগ্রেস ছেড়ে সিপিএমের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গড়ে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। পরে অবশ্য তিনি নিজেই ইস্তফা দিয়ে সরে যাওয়ায়, সুভাষবাবুই কংগ্রেসের নেতৃত্বে বোর্ড গড়ে ফের চেয়ারম্যান হন। কংগ্রেস মহলের খবর, ‘মধুর প্রতিশোধ’ নেওয়ার নেওয়ার সুযোগ ছাড়ছেন না সুভাষবাবুও।
এক সময়ের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ায় শহরের যাবতীয় সমস্যা-অভিযোগ এবং উন্নয়নের পদক্ষেপের বিষয় অবধারিত ভাবে উঠে এসেছে এই ওয়ার্ডে। শুরু হয়েছে দুই ‘বন্ধুর’ তরজাও। কংগ্রেস ছেড়ে গিয়ে সিপিএমের সমর্থন নিয়ে বোর্ড গড়েও পদত্যাগ করা প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা এবারের তৃণমূল প্রার্থী তনয়বাবু বলেন, “সে সময়ে পুরসভার বরাদ্দ কম পাওয়ার কারণে এলাকাতে যথাযথ উন্নয়নের কাজ করতে পারিনি। পাশাপাশি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সিপিএমের সংস্রব এড়ানোও ইস্তফার কারণ। তবে এবারে রাজ্যে তৃণমূল সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নয়ন চলছে। এবার পুরসভা পেলে আমরা দেখিয়ে দেব উন্নয়ন কাকে বলে। আগামী ৫ বছরে ডালখোলার চেহারাই বদলে যাবে।” অন্যদিকে, কংগ্রেসের বিদায়ী চেয়ারম্যান সুভাষবাবু অবশ্য কটাক্ষ করে বলেছেন, “মানুষের রায়ে জিতে বোর্ড গঠন করেছিলাম। তারপরে স্বার্থের কারণে আনা অনাস্থায় সরে যেতে হল। যাঁরা অনাস্থা আনলেন, তাঁরাও কাজ করতে পারলেন না। তাই ফের বোর্ডে এসে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করেছি। এবারও মানুষ পাশেই থাকবেন।”
ডালখোলা পুরসভা
আসন ১৬
প্রার্থী ৫৫
মোট ভোটার ২১৯৬৭।
কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম সব আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
সমাজবাদী পার্টি ২ এবং বিজেপি ১ আসনে।
গত ৫ বছরে দু’দফায় পুরবোর্ডের দায়িত্ব বদলালেও ডালখোলা পুরসভার পরিষেবা নিয়ে বাসিন্দাদের অভিযোগ বিস্তর। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১০ বছর আগে পুরসভার মর্যাদা পেলেও, এলাকাতে যথাযথ নিকাশি ব্যবস্থা নেই, পানীয় জলের সরবারহ ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। রাস্তার অবস্থা তথৈবচ। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল পুর ভোটের প্রচারে দাবি করছে, বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি নেমে পুলিশ ফাঁড়িকে উন্নীত করে থানা করা হবে, হাসপাতাল গড়া হবে। অন্যদিকে, পানীয় জল থেকে রাস্তা, নিকাশি সব কিছুতেই সাধ্যমত উন্নয়ন হয়েছে বলে তাদের দাবি। এক সময়ের দুই জোট শরিকের কাজিয়ায় ফয়দা তুলতে অবশ্য পিছিয়ে নেই সিপিএমও। তারা এবারে উন্নয়নের স্বার্থে পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। সিপিএম এর উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য স্বপন গুহনিয়োগী বলেন, “কারা উন্নয়নের কাজ করে আর কারা শুধুই ক্ষমতায় আসতে চায়, সাধারণ মানুষ তা ভালই জানেন। আমরা আশাবাদী, বামফ্রন্টের ফল ভাল হবেই।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.